বিতর্কিত নির্বাচনের এক বছর পরেও ইরানে বিরোধীরা সক্রিয়
১২ জুন ২০১০গত কয়েক মাসে ইরানের বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে সংবাদ মাধ্যমে তেমন কিছু শোনা যায় নি৷ কেউ বলছে, তারা ব্যর্থ হয়েছে – অন্যরা বলছে, সরকারের কড়া দমন নীতির ফলেই তাদের নীরব থাকতে হচ্ছে৷ তবে ইরানের নোবেলজয়ী আইনজীবী শিরীন এবাদি এমনটা মনে করেন না৷ তাঁর মতে, ‘‘যাবতীয় হিংসা ও অত্যাচার সত্ত্বেও ইরানের গণতান্ত্রিক আন্দোলন এগিয়ে চলেছে৷ অনেকটা সামাজিক নেটওয়ার্কের মতো এই আন্দোলন ছড়িয়ে রয়েছে৷ এই ‘সবুজ আন্দোলন'কে কখনো ধ্বংস করা যাবে না, থামানো যাবে না৷ এই আন্দোলন প্রতিদিন উল্টে আরও ছড়িয়ে পড়ছে৷''
এক বছর আগে কঠিন পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে বিক্ষোভকারীরা এই ‘সবুজ আন্দোলন' চারিদিকে ছড়িয়ে দিয়েছিল৷ প্রথমদিকে তাদের বুলি ছিল ‘নির্বাচনের নামে প্রহসন'৷ তারপর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করতে শুরু করলে তাদের কণ্ঠে শোনা গেল ‘সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি'র দাবি৷ তারপর আরও এক ধাপ এগিয়ে শোনা গেল নতুন স্লোগান – ‘স্বাধীনতা, মুক্তি, ইরান প্রজাতন্ত্র'৷
এই সব দাবির মুখে ইরানের সরকার বিরোধী সমর্থকদের উপর অত্যাচার ও গণ হারে গ্রেপ্তারের নীতি গ্রহণ করলো৷ গোটা বিশ্বের সামনে ইরানের কারাগারে ভয়াবহ দলন, ধর্ষণ ও অন্যান্য অত্যাচারের চিত্র ফুটে উঠলো৷ ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ৮৭ বছর বয়স্ক সংস্কারপন্থী ধর্মীয় নেতা হোসেন আলি মোন্তাসেরি'র মৃত্যুর পর সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল৷ এমনকি কয়েকজন বিক্ষোভকারী সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনেই'এর মৃত্যু কামনা করে স্লোগান দেয়৷
ইতিমধ্যে মাহমুদ আহমেদিনেজাদ'এর প্রশাসন বিরোধীদের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে অনেক ব্যবস্থা নিয়েছে৷ বিরোধীদের সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, নতুন ওয়েবসাইট মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, ফেসবুক'এর মতো মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ ফ্রান্সে বসবাসকারী নির্বাসিত ইরান বিশেষজ্ঞ দারইয়শ হোমায়ুন মনে করেন, ‘‘মীর হুসেন মোসাভি ও মেহেদি কারুবি'র মতো বিরোধী নেতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ – সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের গুরুত্ব বেড়ে চলেছে৷ তাঁদের কণ্ঠেই বিরোধীদের বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ছে৷''
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম