1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের ‘ইন্টারকালচারাল কম্পিটেন্স’ সমস্যা

১৩ সেপ্টেম্বর ২০১০

ইন্টারকালচারাল কম্পিটেন্স-এর অর্থ হল, অন্য দেশ, অন্য পরিবেশ এবং সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে চলার ক্ষমতা৷ ইউরোপে এই কম্পিটেন্স বাড়ানোর জন্য আয়োজন করা হয় বিভিন্ন সেমিনার এবং কর্মশালা৷

https://p.dw.com/p/PAez
University, Campus, ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, বিশ্ববিদ্যালয়,
ছবি: Foto Deur Erhardt Thiel

ইন্টারকালচারাল ট্রেনার টিনা প্যাটেল৷ তিনি একই সঙ্গে কোচ এবং কনসালটেন্ট৷ বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কের সেতু গড়তে তিনি সাহায্য করেন৷ বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি, ভাষা, ঐতিহ্য যখন এক জায়গায় এসে জড়ো হয়, তখন কীভাবে সম্পূর্ণ অন্য দেশের, অন্য পরিবেশের মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়, পরিচিত হতে হয় – তা তিনি ব্যাখ্যা করেন৷ বিশেষ করে আজকাল কাজ এবং পড়াশোনার জন্য মানুষ এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাচ্ছে৷ সময় কাটাচ্ছে, ভিন্ন সমাজের মানুষের সঙ্গে মিশছে৷ এই সময়গুলোতে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন সমস্যা৷ সেসব সমস্যার সমাধান দেন টিনা প্যাটেল৷

টিনা প্যাটেল নিজেই আয়োজন করেন বিভিন্ন কোর্সের৷ বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের কীভাবে এই কোর্স সাহায্য করতে পারে? বিশেষ করে এশিয়া, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ অ্যামেরিকার ছাত্র-ছাত্রীরা যদি জার্মানিতে পড়াশোনার জন্য আসেন, তাহলে এই কোর্স থেকে কোন ধরণের শিক্ষা তারা গ্রহণ করবেন ? টিনা প্যাটেল বললেন, ‘‘এশিয়ার ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়েই শুরু করছি৷ ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল বা পাকিস্তানের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রথমবার জার্মানিতে অনেক স্বপ্ন এবং আশা নিয়ে আসেন৷ তাঁদের অনেককেই বেশ কিছু আত্মত্যাগ করতে হয়৷ এর পরিবর্তে তারা একটি বিদেশি ডিগ্রি লাভ করতে চান – যেমন, পিএইচডি, মাস্টার্স বা ব্যাচেলর ডিগ্রি৷ তারা সফলভাবে পড়াশোনা শেষ করতে চান৷ ভিন্ন সংস্কৃতি এবং পরিবেশ থেকে আসার কারণে অনেক সময়েই তারা ব্যর্থ হন৷ তারা পড়াশোনা শেষ করতে পারেন না৷ অনেকেই চাকরির চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিদেশে থাকতে চান না৷ তখন আমি তাদের সাহায্য করি, নতুন একটি পরিবেশে কীভাবে নিজেকে খাপ-খাওয়ানো যায়, সবকিছু গ্রহণ করে নিজের জীবনকে আরো অনেক সহজ করা যায় – সে বিষয়ে৷ পার্থক্যগুলো আমি তুলে ধরি, সমস্যাগুলো আমি সমাধানের চেষ্টা করি৷''

Reinhold Messner setzt sich für Hochland-Tee aus Nepal
কফির কাপ হাতে নিয়ে আড্ডাও নতুন কিছু নয়ছবি: dpa - Report

জার্মান সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য

নিজেকে নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মূলনীতি সম্পর্কে টিনা প্যাটেল বলেন, সবাইকে চেষ্টা করতে হবে নিজ নিজ ক্ষেত্র খুঁজে বের করার৷ আমার নিজের ভেতর যে দুর্বলতা আছে তা আমি জানবো, অন্য কেউ নয়৷ তেমনি আমার গুণগুলোও আমি জানবো৷ একেক জন একেক রকম৷ এটা মাথায় রাখতে হবে৷ তবে আগে থেকে নতুন দেশ সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান থাকলে তা সবসময়ই সাহায্য করবে৷ জার্মানরা ঘড়ির সময় ধরে চলাফেরা করে৷ একটুও এদিক ওদিক হয় না৷ অথচ ভারত-বাংলাদেশে বিষয়টি ভিন্ন৷ জার্মানরা সরাসরি কথা বলতে পছন্দ করে, শুনতেও পছন্দ করে৷ ‘এটা আমি পছন্দ করছি না বা এটা করতে রাজি নই' – এ ধরণের কথা খোলাখুলিভাবে বলাই শ্রেয়৷ এই দেশে তাই প্রচলিত৷ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নিজের ব্যক্তিত্ব, অন্যের প্রতি নিজের উদারতা, সহমর্মিতা প্রদর্শন করা৷

বেশ জোর দিয়েই টিনা প্যাটেল বললেন জার্মান সংস্কৃতিকে গ্রহণ করা এবং জার্মান সমাজে নিজেকে একাত্ম করার প্রথম শর্ত হল জার্মান ভাষায় নিজেকে পারদর্শী করা৷

ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রীরা কী করবেন, কী করবেন না

এখন পর্যন্ত কোন ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা ? টিনা প্যাটেল তাদের কীভাবে সাহায্য করতে সক্ষম হয়েছেন? টিনা প্যাটেল জানান, ‘‘এখানকার পড়াশোনার নিয়ম কানুন ভিন্ন৷ ক্লাসে অধ্যাপক সবসময়ই আশা করেন ছেলে-মেয়েরা প্রশ্ন করুক, নিজ থেকে কিছু বলুক৷ স্বাধীনভাবে চিন্তা-ভাবনার ওপর জোর দেওয়া হয়৷ যেসব ছাত্র-ছাত্রী চুপচাপ থাকে, তাদের নিয়ে অধ্যাপকরা সমস্যায় পড়েন৷ আমি প্রায়ই শুনেছি, অধ্যাপকের প্রতি সম্মান দেখানোর জন্যই ওরা কোন প্রশ্ন করে না৷ ‘যদি প্রফেসর বিরক্ত হন ?'– এই চিন্তা সবসময়ই মাথায় ঘোরে৷ অথচ এটা একটি ভুল ধারণা৷ এ থেকেই শুরু হয় ভুল বোঝাবুঝি৷ এখানে প্রফেসরের সঙ্গে লাঞ্চে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক৷ কফির কাপ হাতে নিয়ে আড্ডাও নতুন কিছু নয়৷ অথচ এখানেই আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা পিছিয়ে৷ আরেকটি বিষয় হল এখানে প্রফেসররা ‘স্যার' ডাকটি একেবারেই পছন্দ করেন না৷''

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন