1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উগান্ডায় পরিবেশ সংরক্ষণ

ফ্লোরিয়ান নুশ/এসি১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

উগান্ডার মাউন্ট এলগন পর্বতমালার জ্যাকসন পুল এলাকার মানুষজনকে স্থানান্তরিত করে একটি ন্যাশনাল পার্ক গঠন করা হয়েছে৷ বাকি রয়েছে মানুষজনকে পরিবেশ সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতন করে তোলার কাজ৷

https://p.dw.com/p/1GXOp
Berggorillas in Uganda
ছবি: Rainer Dückerhoff

আগে এখানে অনেক বড় বড় জীবজন্তু থাকতো, বলছিলেন রেঞ্জার অ্যান্ড্রু: চিতাবাঘ, বুনো মহিষ, হাতি৷ আজ শুধু কিছু কিছু বাঁদর দেখা যায়৷ বাকি বড় জন্তুজানোয়ার মানুষের হাতে মরেছে অথবা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে৷ অ্যান্ড্রু বললেন, ‘‘হাতি শিকার করলে যেমন হয়৷ হাতিদের স্মৃতিশক্তি খুব ভালো৷ তাদের একজনকে যদি মারা হয়, তাহলে অন্যরা কখনো ভুলবে না, তাদের বন্ধুকে কোথায় মারা হয়েছে৷ বাকিরা আর কোনোদিন সে জায়গায় ফিরবে না৷ কাজেই ঐ হাতিরা আর কখনো উগান্ডায় ফিরবে বলে আমার মনে হয় না৷''

সাড়ে তিন হাজার মিটার উচ্চতায় আমরা তাঁবু গাড়লাম৷ বেশ ভালোমতো ঠান্ডা, মাত্র আট ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড৷ তবে অগ্নিকুণ্ডটা আছে৷ পরের দিন ভোরবেলা ট্রেকিং-এর চূড়ান্ত চড়াই৷ মাউন্ট এলগন পর্বতমালার ৪,১৬৫ মিটার উঁচু জ্যাকসন শিখরের পাদদেশে যে হ্রদ আছে, সেখানেই যাব আমরা৷ যতো ওপরে উঠছি, বাতাস ততোই যেন আরো পাতলা হয়ে আসছে৷ শেষমেষ দেখা গেল সেই হ্রদ: জ্যাকসন পুল৷ উগান্ডার বহু মানুষের কাছে এটি একটি মায়াবী স্থান – জানালেন অ্যান্ড্রু৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘ওদের বিশ্বাস, এখানে এসে এই জলে স্নান করলে, দেবতার আশীর্বাদ পাওয়া যায়৷''

পুনর্বাসন

দৃশ্যটা অপরূপ৷ অপরদিকে এই ন্যাশনাল পার্ক সৃষ্টির জন্য যে সব মানুষকে বিতাড়ন করা হয়েছে, তারা যে কী বলবেন, তারাই জানেন৷ তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার জন্য পাহাড় ছেড়ে নীচে নামতে হবে৷ হঠাৎ দেখা গেল আগুনের ধোঁয়া৷ কিন্তু এই জঙ্গলে তো আগুন জ্বালানোরই কথা নয়৷ অ্যান্ড্রু বললেন, ‘‘ওরা জঙ্গল থেকে কাটা বাঁশে ধোঁয়া লাগায়, পরে সেই আগুন নেভায় না৷ তার ফলে পার্কে অগ্নিকাণ্ড ঘটে৷ ওরকম কোনো লোককে গ্রেপ্তার করলেও, তাকে মাত্র একদিনের জন্য জেলে রাখা যায়৷ পরের দিন সেই একই লোককে জঙ্গলে ঘুরতে দেখা যাবে৷''

জঙ্গলের জন্য আইনকানুন আর একটু কড়া হলে অ্যান্ড্রু-র কোনো আপত্তি ছিল না৷ অপরদিকে যাদের এই এলাকা ছেড়ে যেতে হয়েছে, তারা পুরনো দিনের স্মৃতিমন্থন করেন৷ এই জঙ্গলের সাবেক বাসিন্দা ওয়ানিয়ালা বোনিফাস বললেন, ‘‘আমরা যখন পাহাড়ের ওপরে থাকতাম, তখন সময়টা ভালোই ছিল৷ আমাদের অনেকটা করে জমি ছিল, তাতে নানা রকমের ফসল হতো, কৃত্রিম সার ছাড়াই৷ কিন্তু হঠাৎ একদিন আমাদের বলা হল, আমাদের এখান থেকে চলে যেতে হবে৷ আমাদের খুব ভয় হয়েছিল৷ আমরা জানতাম না, এবার কী করে দিন চলবে৷''

পুনর্বাসনের ফলে আরো ত্রিশ হাজার মানুষের গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা করতে হয়েছে৷ কালে জমির উর্বরতা কমে আসে৷ বৃষ্টির পর ধস নামার ঘটনাও বেড়েই চলেছে৷

কর্মসূচি

চার বছর ধরে ইউএনডিপি-র প্রোগ্রাম চলছে৷ মাউন্ট এলগন-এর চারপাশের মানুষদের জন্য নিয়মিতভাবে ওয়ার্কশপ করা হয়, চাষবাস শেখানো হয় – বিশেষ করে নানা ধরনের ফসল লাগানো, কিংবা জলসেচের নালা কাটা, ইত্যাদি৷ কেননা এই অঞ্চলে খুব বৃষ্টি হয়৷ চাষিদের মুখপাত্র স্যাম মাসা বললেন, ‘‘অধিকাংশ চাষিই জানতেন না, কী ভাবে পরিবেশ রক্ষা করতে হয়৷ কিন্তু ইউএনডিপি এখানে কাজ শুরু করা পর্যন্ত অনেক কিছু বদলেছে৷ মানুষজন এখন তাদের জমি রক্ষা করতে, জমির ক্ষয় রোধ করতে শিখেছে৷''

২০১৫-র শেষে ইউএডিপি-র কর্মসূচি শেষ হচ্ছে৷ কিন্তু কর্মকর্তাদের ধারণা, ভবিষ্যতে এলাকার মানুষজন নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারবেন৷ ইউএনডিপি'র প্রতিনিধি পল এনতেজা বললেন, ‘‘যেহেতু আমরা স্বল্পমেয়াদে মানুষজনের জীবিকার উন্নতি করতে পেরেছি, সেহেতু আমরা দীর্ঘমেয়াদে সব দিক সামলাতে পারব বলেই আমাদের আশা৷ আমরা নিশ্চিত করতে পারব যে, আমরা যে সব গতিবিধি, ধ্যানধারণার সূচনা করতে পেরেছি, সেগুলো আগামীতেও এই মানুষদের জীবনে একটা ভূমিকা রাখবে৷''

প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ পর্যটন শিল্পের সম্প্রসারণ ঘটাতে এবং পর্যটকদের মাউন্ট এলগন অঞ্চলে আসার উৎসাহ দিতে চান৷ সেক্ষেত্রে বাসিন্দাদের জন্য অর্থোপার্জনের একটি নতুন পন্থা খুলে যাবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য