1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিক্ষক নিয়োগে লিখিত পরীক্ষার নির্দেশনা

২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার৷ এছাড়া সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ‘অপরাধীদের' নিয়োগ ঠেকাতে ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন' করতেও বলা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1K74c
Symbolbild Weiterbildung Beruf
ছবি: Fotolia/Africa Studio

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) এ সব নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়৷ বর্তমানে দেশে ৩৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে৷ এগুলো দেখভালের দায়িত্ব ইউজিসির৷

এটি সরকারের আদেশ কিনা – এ প্রশ্নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) মো. হেলাল উদ্দিন ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘এটাকে আদেশ, নির্দেশনা নাকি অনুরোধ বলব, সেটা বড় বিষয় নয়৷ বড় বিষয় হলো এটা এখন সময়ের দাবি এবং প্রত‌্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়কে এটা করার জন্য অনুরোধ করেছি, তারা যেন এটা করে৷ তবে এটার মধ্যে ফোর্স আছে৷''

সরকারের এমন নির্দেশের সমালোচনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক৷ ফেসবুকে তাঁরা এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন৷

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আলী রীয়াজ নির্দেশনা পড়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘যা প্রস্তাব করা হয়েছে তা আদৌ কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বলা যায় কিনা সেটাই বুঝতে পারছি না৷'' ১৯৮৪ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১ বছর শিক্ষকতা করার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল হাসান লিখেছেন, ‘‘সারা পৃথিবীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের জন্য কোনো লিখিত পরীক্ষা নেয় না৷ অন্তত আমার জানা নেই৷ যেটা করা হয় তার গবেষণা প্রবন্ধই বিষয়ের প্রতি তার জ্ঞানের স্বাক্ষর বহন করে৷ শিক্ষক হিসাবে কেমন সেটা কোথাও কোথাও ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে ডেমো লেকচার নেওয়া হয় অথবা ডেমো সেমিনার নেওয়া হয়৷'' তিনি বলেন, ‘‘সরকারি চাকুরি আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার চাকুরির ধরনের কোথাও কোনো প্রকার মিল নেই৷ তাই এদুটোর তুলনা যারা করতে যায় তারা একটা আহাম্মক ছাড়া আর কিছুই না৷''

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গীতিআরা নাসরীন শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতিতে পরিবর্তনের পক্ষে হলেও নির্দেশনায় যা বলা হয়েছে তার সমালোচনা করেছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘অহো কী অদ্ভুত কৌতুক! পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হবে লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতে! শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতিতে পরিবর্তন তো দরকারই৷ তবে দেখার কথা ছিল, শিক্ষক আদৌ পড়াতে পারবেন কিনা৷ সেটা বুঝে নেওয়া যায় তাকে পাবলিক লেকচার দিতে দিলে৷ বিষয়ে তার দখল বোঝা যায়, তার গবেষণা কর্মের খতিয়ান করে৷ এবার ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-পরীক্ষার তোতা-পাখী গাইড' বেরুলো বোলে৷ পুলিশী পরীক্ষাও না কি হবে! উর্দি দেবেন না? রেজিমেন্টেড বাহিনীর তো চিহ্ন থাকা দরকার!''

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুল আলম চৌধুরী লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় লিখিত পরীক্ষা হলো মুখস্থ বিদ্যার বহিঃপ্রকাশ মাত্র৷ এক বছর বিসিএস গাইড বই গলাধঃকরণ করে ‘জি, জি স্যার' মার্কা আমলা হওয়া যায়৷ অবশ্য একই প্রক্রিয়ায় শিক্ষক হলে আমলা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মধ্যে যে কোনো পার্থক্য থাকবে না, সে রাজনৈতিক অর্থনীতিটা আমলারা বুঝতে পেরেছেন৷ মুখস্থ বিদ্যার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করা যায় না৷''

তবে সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম এই বিষয়ে বিতর্কের ধরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘... যারা লিখিত পরীক্ষাটাকে বিসিএসের মানদন্ডে নিয়ে জাস্টিফাই করছেন, তারা কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লিখিত পরীক্ষা নিয়ে টু-শব্দ করেন না৷ ....আমরা লিখিত পরীক্ষার সংজ্ঞায়নটা চাইতে পারতাম৷ পাবলিক লেকচার, ডেমো ক্লাস, রিটেন, ভাইবা, রেজাল্ট সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় একটা পরিবর্তন যে সময়ের দাবি তা এমিথ্র বই, কোচিং সেন্টার এসবের দোহাই দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া ব্যাঙ্গ ব্যতিত ভিন্ন কিছু বলে মনে হয়নি৷''

সংকলন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য