1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্ববিদ্যালয় নয়, ওদের জন্য কারাগারই ভালো

আশীষ চক্রবর্ত্তী৭ নভেম্বর ২০১৪

বাংলাদেশে কি অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে? এ প্রশ্ন যে বিতর্কের জন্ম দেবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷কিন্তু ভাইয়ের সামনে বড় বোনকে ধর্ষণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে মামা-ভাগনিকে প্রহার – এসব ঘটনা কী ইঙ্গিত দেয়?

https://p.dw.com/p/1DiZS
Protest nach Gruppenvergewaltigung und Ermordung zweier Mädchen in Indien Sandskulptur
ছবি: UNI

কয়েকদিন আগে যশোরে মামাতো ভাইকে বেঁধে রেখে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে করে দুষ্কৃতীরা৷ বুধবার রাজধানীর বুকে, দিনের আলোয় প্রহার করা হলো এক আলোকচিত্রী এবং তাঁর দুই ভাগনিকে৷ ক্যানাডা থেকে নিজের দেশে বেড়াতে আসা এক তরুণী তাঁর বোন আর মামার সঙ্গে গিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ শুধু ‘বহিরাগত' হওয়ার ‘অপরাধে' তাঁরা মার খেয়েছেন৷ শরীরের জখম এতটা নয় যে অনেক কাল ভোগাবে৷ তবে সুবিচার না পেলে মনের আঘাতটা সহসা দূর হবার নয়৷

তাই প্রহারের শিকার হওয়া দুই তরুণীর একজন রুবাইয়া আহমেদ ফেসবুকে সবাইকে প্রতিবাদে শরিক হতে বলেছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘বসবাসের জন্য আমরা ঢাকাকে বেছে নিয়েছিলাম, কারণ এ শহরকে আমরা ভালোবাসি৷ ফেসবুকে এ পোস্ট শেয়ার করছি, কারণ, আমি হতাশা নিয়ে বাঁচতে রাজি নই৷ এক তরুণীকে চারটি লোক উপর্যুপরি লাথি মেরে যাচ্ছে – এমন ঘটনাকে স্বাভাবিক বলে মেনে নিতে হবে এটা মেনে নিতেও রাজি নই আমি৷ ''

রুবাইয়া লিখেছেন, ‘‘আমার মা-ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন৷ কার্জন (শহীদুল্লাহ) হল তাঁর খুব পছন্দের জায়গা৷ মা বলেছেন, সন্ধ্যার পরও তিনি নিশ্চিন্তে বন্ধুদের নিয়ে হলের পাশ দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতেন৷ তখন সেই পথই নাকি ছিল সবচেয়ে নিরাপদ৷'' সেই মায়ের মেয়ে রুবাইয়া তাঁর মামা এবং ক্যানাডা থেকে আাড়াই বছর পর বেড়াতে আসা বোনকে নিয়ে বেড়াতে গিয়ে কী দেখলেন? বিকেলে পুকুর ঘাটে বসে কথাও বলা যায়না৷ মার খেয়েও নিজের ভাগ্যের প্রশংসা করে রুবাইয়াকে লিখতে হয়, ‘‘ভাগ্য ভালো যে গুণ্ডাগুলোর হাতে অস্ত্র ছিলনা৷ মামাকে যে ছুরি মারা হয়নি এটাও সৌভাগ্যের ব্যাপার৷ আমার বোনকে যে ধর্ষণ করা হয়নি এ কারণেও নিজেদের ভাগ্যবান মনে হচ্ছে৷ শেষ পর্যন্ত আমরা এই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি৷ বেঁচে আছি বলেই ধন্য মনে হচ্ছে৷''

Deutsche Welle DW Arun Chowdhury
আশীষ চক্রবর্ত্তী, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের সম্পাদকছবি: DW/P. Henriksen

সাংবাদিকতা থেকে ‘ফলোআপ' বস্তুটি কি ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে? যশোরের তিন সন্তানের জননী এখন কেমন আছেন? ধর্ষকদের গ্রেপ্তারের কোনো চেষ্টা কি আদৌ হয়েছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে মার খেয়ে ফেরা মানুষগুলো কি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার স্বান্ত্বনাটুকুও পাবেন?

সবগুলো প্রশ্নের উত্তর ‘না' হলে ভীষণ ভালো লাগতো৷ কিন্তু বাস্তবে বছরের পর বছর ধরে কী দেখছি? পবিত্র রমজান মাসে বাবার কোলই মৃত্যুর কোল হয়েছে শিশু সন্তানের৷ মন্ত্রী সান্ত্বনা দিয়েছেন, ‘‘আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে৷'' ঘরের ভেতরে খুন হয়েছেন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি৷ মন্ত্রী বলেছেন, আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের ধরা হবে৷ অপরাধীর কিছুই হয়নি৷ সেই মন্ত্রীদের মন্ত্রিত্ব নেই৷ বাংলাদেশ আছে একই অবস্থায়৷ বরং অপরাধীরা যেন দিনদিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে৷ অপরাধ দমনে কঠোর পদক্ষেপের আশ্বাস আসে অনেক, সে আশ্বাসে বিশ্বাসটা শুধু কমছে৷ শুধু আশ্বাস নয়, এবার অপরাধীদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে আশ্বাসে বিশ্বাসটাও একটু ফিরিয়ে দেয়া হোক৷ ‘বন্যেরা বনে সুন্দর' আর যারা ধর্ষণ করে, কথায় কথায় মানুষ পেটায়, তাদের জন্য কারাগারই ভালো৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য