1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বের সেরা ৫০০ সুপারকম্পিউটারের তালিকা প্রকাশ

৭ জুন ২০১০

জার্মানির হামবুর্গে সম্প্রতি হয়ে গেল আন্তর্জাতিক সুপারকম্পিউটিং সম্মেলন৷ এ উপলক্ষ্যে বিশ্বের পাঁচশটি সেরা সুপারকম্পিউটারের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/Njks
সেবিট ২০০৯ এ সুপার পারসোনাল কম্পিউটার (ফাইল ছবি)ছবি: Pablo Kummetz / DW

সুপারকম্পিউটারের কাজ

২০০৭ সালে বাংলাদেশের উপকুলীয় এলাকায় আঘাত এনেছিল সাইক্লোন ‘সিডর'৷ তাতে হতাহত হয়েছিল অগুনিত মানুষ৷ আর ক্ষতি- সেতো আজও হিসেব করে শেষ করা যায়নি৷ তবে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারতো, যদি না অ্যামেরিকায় থাকা ডঃ হাসান মাশরিকি নামের এক বাঙালি বংশোদ্ভুত বিজ্ঞানী এই সিডরের পূর্বাভাস না দিতেন৷ কোন্ কোন্ এলাকায় সিডর আঘাত হানতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে প্রায় ২৪ ঘন্টা আগেই বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের বিস্তারিত তথ্য দিয়েছিলেন তিনি৷ একটি সুপারকম্পিউটার ব্যবহার করে মাশরিকি এসব তথ্য জানতে পেরেছিলেন৷

এমনই সব জটিল কাজ করা যায় সুপারকম্পিউটার দিয়ে৷ তবে মূলত গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হয় এই ধরণের কম্পিউটার৷ এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নির্ধারণ, পরমাণু অস্ত্রভান্ডারের উপর নজরদারি করা, বড় বড় কোম্পানির জটিল সব আর্থিক হিসাব, অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ও সামরিক গবেষণা ইত্যাদি নানান কাজ করা হয়ে থাকে সুপারকম্পিউটারের সাহায্যে৷

সবচেয়ে গতি সম্পন্ন সুপারকম্পিউটার

যে সুপারকম্পিউটারের গতি সবচেয়ে বেশি সেটা দিয়ে কাজ করা যায় বেশি৷ আর বিশ্বের সবচেয়ে গতিসম্পন্ন সুপারকম্পিউটারটির মালিক যুক্তরাষ্ট্র৷ নাম জাগুয়ার৷ এর গতি ১.৭৫ পেটাফ্লপস্৷ অর্থাৎ এক সেকেন্ডে মোট ১,৭৫০ ট্রিলিয়ন ক্যালকুলেশন করতে সক্ষম এই জাগুয়ার৷

Neuer Supercomputer für die Klimaforschung
জার্মান জলবায়ু গবেষণাগারে স্থাপিত নতুন সুপার কম্পিউটারছবি: dpa

এবার জাগুয়ার সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য৷ যে কাজ এই জাগুয়ারের করতে লাগে এক সেকেন্ড সেটি করতে একটি সাধারণ কম্পিউটারের লাগবে দশ ঘন্টা৷ আর যে কাজ করতে জাগুয়ারের লাগবে এক ঘন্টা, সাধারণ একটি কম্পিউটারকে সেকাজ করতে দিয়ে আপনি পরবর্তী বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য অপেক্ষা করতে পারবেন৷ অর্থাৎ সময় লাগবে প্রায় চার বছর ! এই হিসেবে জাগুয়ারের একদিনের কাজ করতে একটি সাধারণ কম্পিউটারের লাগবে প্রায় ১০০ বছর !

ওয়াশিংটন ভিত্তিক ক্রে কোম্পানি হলো জাগুয়ারের মালিক৷ আর ক্রে কোম্পানির মালিক হলেন সেইমুর ক্রে- যাঁকে সুপারকম্পিউটারের জনক বলা হয়৷ অ্যাস্ট্রোফিজিক্স, ক্লাইমেট সায়েন্স আর নিউক্লিয়ার এনার্জি বিষয়ে গবেষণার কাজে বিজ্ঞানীরা জাগুয়ারের সাহায্য নিয়ে থাকেন৷

জাগুয়ারের পর যে সুপারকম্পিউটারের গতি সবচেয়ে বেশি সেটির মালিক চীনা কোম্পানি ডাউনিং৷ সুপারকম্পিউটারটির নাম নেবুলা৷ আর এর গতি ১.২০ পেটাফ্লপস্৷ অর্থাৎ এক সেকেন্ডে মোট ১,২০০ ট্রিলিয়ন ক্যালকুলেশন করতে সক্ষম নেবুলা৷ এয়ারক্রাফট ডিজাইন ও পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধানের কাজ করা হয় নেবুলা দিয়ে৷ তবে চীনা ঐ কোম্পানিটি নেবুলার চেয়েও বেশি গতিসম্পন্ন কম্পিউটার তৈরি করছে বলে জানা গেছে৷ দৃশ্যত, পেটাফ্লপস্ গতির আর একটিই কম্পিউটার আছে বিশ্বে৷ সেটির মালিক যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানী মন্ত্রণালয়৷ আর এর নাম রোডরানার৷

তালিকা পর্যালোচনা

বিশ্বের সেরা ৫০০টি সুপারকম্পিউটারের এবারের তালিকায় যেগুলো স্থান পেয়েছে সেগুলোর অর্ধেকেরই মালিক যুক্তরাষ্ট্র৷ এর পরের অবস্থান ইউকে'র৷ তালিকায় তাদের আছে মোট ৩৮টি কম্পিউটার৷ এরপর ফ্রান্সের রয়েছে ২৭টি৷ আর জার্মানি ও চীনের রয়েছে ২৪টি করে সুপারকম্পিউটার৷ তালিকায় ভারতের রয়েছে পাঁচটি কম্পিউটার৷ এর মধ্যে দু'টির অবস্থান আবার প্রথম ১০০'র মধ্যে৷ প্রথমটির মালিক টাটা সন্স৷ এই কোম্পানির কম্পিউটেশনাল রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে যে সুপারকম্পিউটারটি রয়েছে তার গতি ১৩২.৮ টেরাফ্লপস্৷ অর্থাৎ এক সেকেন্ডে মোট ১৩৩ ট্রিলিয়ন ক্যালকুলেশন করতে সক্ষম এই কম্পিউটারটি৷ আর ৯৪ নম্বরে থাকা সুপারকম্পিউটারটি রয়েছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটারলজিতে৷

তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তালিকার বাইরেও অনেক সুপারকম্পিউটার রয়েছে যেগুলোর গতি হয়তো এই ৫০০টির কোনো কোনোটির চেয়ে বেশি৷ কারণ সরকারি মালিকানায় থাকা অনেক কম্পিউটার সম্পর্কেই বিস্তারিত তথ্য না থাকায় এই তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি৷

প্রতিবেদন : জাহিদুল হক

সম্পাদনা : দেবারতি গুহ