1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত থেকে বিদ্যুৎ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩

অবশেষে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করেছে বাংলাদেশ৷ শুক্রবার বিকেলের মধ্যে ভারতের ১৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়েছে৷ তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আমদানি নির্ভরতা বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে৷

https://p.dw.com/p/19pS5
A general view is seen of a street with messy cables from a Pole Mounted Transformers (PMT) at a low income neighborhood in Karachi June 27, 2013. Since Pakistan's biggest electricity company was privatised, its headquarters have been looted, its employees kidnapped and the government tried to arrest its boss. It's been a roaring success. Power cuts lasting 12 hours a day or more have devastated Pakistan's economy. The only city bucking the trend is the violent megacity of Karachi, Pakistan's financial heart - thanks to Tabish Gauhar and his team at the Karachi Electricity Supply Company (KESC). Picture taken June 27, 2013. REUTERS/Akhtar Soomro (PAKISTAN - Tags: BUSINESS ENERGY SOCIETY)
ছবি: Reuters

সকাল ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা গ্রিড উপকেন্দ্রে ভারতের বিদ্যুৎ পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন শুরু হয়৷ এটা চলে বিকেল পর্যন্ত৷ এই সময় বিদ্যুৎ প্রবাহের খুঁটিনাটি পরীক্ষা করা হয়৷ ভেড়ামারা গ্রিড উপকেন্দ্রের প্রকৌশলী আলমগির হোসেন জানান, শনিবারও একইভাবে বিদ্যুৎ সঞ্চালন হতে পারে৷

আগামী ৫ই অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভেড়ামারা উপকেন্দ্র থেকে নতুন দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করবেন৷ আলমগির হোসেন জানান, এর মাধ্যমে মূলত দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলিতে বিদ্যুৎ গ্রিড চালুর প্রক্রিয়া শুরু হলো৷

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভারত থেকে মোট ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে৷ এর মধ্যে ২৫০ মেগাওয়াট দেবে ভারতের সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, যার প্রতি ইউনিটের দাম ৫ টাকা৷ আর বেসরকারি খাতে ভারতের পাওয়ার ট্রেডিং কোম্পানি থেকে পাওয়া যাবে ২৫০ মেগাওয়াট, যার প্রতি ইউনিটের দাম পড়বে ৬.৩৪ টাকা৷ সরকারি বেসরকারি খাত মিলিয়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে গড়ে ৬ টাকার কম৷

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনার এই চুক্তি সই হয়৷ বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিটি করা হয় ২৫ বছরের জন্য৷

Passengers sit in a train and wait for power to get restored at a railway station in New Delhi, India, Monday, July 30, 2012. A major power outage has struck northern India, plunging cities into darkness and stranding hundreds of thousands of commuters. Trains across eight northern Indian states and metro services in New Delhi were affected by the outage that struck at about 2:30 a.m. local time. (AP Photo/Rajesh Kumar Singh)
বিদ্যুৎ নেই মানেই যে অন্ধকার....ছবি: AP

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম ডয়চে ভেলেকে জানান, দেশে বিদ্যুৎ ঘাটতির এই সময়ে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ইতিবাচক৷ দেশে ৮,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে মোট উত্‍পাদন ৬,০০০ মেগাওয়াটের কিছু বেশি৷ তাই ভারতের ৫০০ মেগাওয়াট কিছুটা হলেও বিদ্যুতের ঘাটতি কমাতে সহায়তা করবে৷ এছাড়া, বাংলাদেশ নিজের দেশের চেয়ে কম দামে বিদ্যুৎ পাচ্ছে ভারত থেকে – এটা অবশ্যই সুখবর৷

অধ্যাপক আলম বলেন, ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি সার্ক গ্রিডেরই অংশ৷ ঠিক ছিল, সার্কভুক্ত দেশগুলো যে বিদ্যুৎ উত্‍পাদন করবে সেখান থেকে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে অন্য দেশে রপ্তানি করতে পারবে৷ কিন্তু বাস্তবতা হলো, একমাত্র ভারত ছাড়া আর কোনো দেশের চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উত্‍পাদনের ক্ষমতা এবং পরিকল্পনা নেই৷ ভারতই আসলে এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ রপ্তানির পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে৷ ভবিষ্যতে যখন ভারত থেকে পুরোপুরি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিদ্যুৎ আনতে হবে, তখন আর এত কম দামে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে না৷ ফলে অতিরিক্ত আমদানি নির্ভরতা শেষ পর্যন্ত ক্ষতির কারণ হতে পারে৷ শুধু তাই নয়, দেশের অর্থনীতিও বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি৷ তাই বাংলাদেশকে এখনই একটি নীতিমালা তৈরি করতে হবে, যাতে নির্দিষ্ট করা থাকবে চাহিদার কতভাগ বিদ্যুৎ আমদানি করা যাবে আর কতভাগ দেশে উত্‍পাদন করা হবে৷ এছাড়া, দেশীয় উত্‍পাদনের কতভাগ সরকারি এবং কতভাগ বেসরকারি খাতে উত্‍পাদন হবে, সেটাও নির্দিষ্ট করতে হবে৷ শামসুল আলম বলেন, এই নীতিমালা আইনের মাধ্যমে অবশ্যপালনীয় করতে হবে৷

তিনি জানান, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ এরই মধ্যে ব্যয়বহুল বেসকারি খাতের দখলে চলে গেছে৷ ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে ২৫ ভাগ বিদ্যুৎ উত্‍পাদনের নীতিমালা তৈরি হয়৷ সরকারি খাতে ৭৫ ভাগ৷ কিন্তু এখন বেসরকারি খাতে ৫৫ ভাগ এবং সরকারি খাতে ৪৫ ভাগ বিদ্যুৎ উত্‍পাদন হচ্ছে৷ ফলে সরকারি খাত দুর্বল হওয়ায় বেরসকারি খাতের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ৷ যা এক অশনিসংকেত বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম৷ তাই ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যেন বিদ্যুতের জন্য অন্য দেশের কাছে জিম্মি না হয়ে পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য