1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নাড়়া দেওয়ার মতো এক সন্ধ্যা

সংবাদভাষ্য: মার্সেল ফ্যুর্স্টেনাউ/এসি১৪ জানুয়ারি ২০১৫

প্যারিসে নিহতদের স্মরণে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জার্মানির রাজধানী বার্লিনের কেন্দ্রে যে আন্তঃ-ধর্ম সংহতি অনুষ্ঠানটি হয়ে গেল, তা ছিল – এককথায় – নাড়া দেওয়ার মতো৷ তবে কথার পরে চাই কাজ, বলে মনে করেন মার্সেল ফ্যুর্স্টেনাউ৷

https://p.dw.com/p/1EK0T
Mahnwache für Terroropfer am Brandenburger Tor 13.01.12014
ছবি: Reuters/F. Bensch

বিপদের সময় লোকে এক হয়৷ বিশ্ব জুড়ে এখন যেন সেই পুরাতন অভিজ্ঞতারই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে৷ রবিবার ফ্রান্সে জড়ো হয়েছিলেন লক্ষ লক্ষ মানুষ, প্যারিসে জঙ্গি ইসলামপন্থিদের হাতে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের স্মরণে৷ মঙ্গলবার বার্লিনের ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণে হাজার হাজার মানুষ একত্রিত হন একটি স্মারক প্রহরায়৷

জার্মানিতে বসবাসকারী মুসলিমদের কেন্দ্রীয় পরিষদ এবং তুর্কি সম্প্রদায় এই প্রহরায় যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷ এর পরে আর তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাস প্রতিরোধে যথেষ্ট না করার অভিযোগ আনা যাবে না – যে অভিযোগ অতীতে বারংবার ধ্বনিত হয়েছে৷

‘‘আমরা সকলেই জার্মানি,'' বলেছেন মুসলিম কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি আইমান মাজিয়েক৷ জার্মান প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক পরে ঠিক সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করেন৷ এর চাইতে সুন্দর কোনো প্রতীক হতে পারে না৷ সেদিন যারা ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণে উপস্থিত ছিলেন কিংবা টেলিভিশনে সে ছবি দেখেছেন, তাদের সকলেরই স্মরণে থাকবে: মুসলিম, খ্রিষ্টান এবং ইহুদিরা বাহুতে বাহু মিলিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন৷ মুসলিম পরিষদের মাজিয়েক এর উদ্যোগ নেন৷ ইতিপূর্বে জার্মানিতে বসবাসকারী ইহুদিদের কেন্দ্রীয় পরিযদের সভাপতি আব্রাহাম লেয়ারার ইসলামের ‘‘ক্রমবর্ধমান জঙ্গিত্বের'' সমালোচনা করেছিলেন৷মাজিয়েক হয়তো পরোক্ষভাবে তারই জবাব দিচ্ছিলেন৷

Berlin Gauck bei Mahnwache für Terroropfer am Brandenburger Tor 13.01.12014
ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণে বক্তব্য রাখছেন জার্মান প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউকছবি: picture-alliance/dpa/Maurizio Gambarini/

ইসলাম সত্যিই জার্মানির অঙ্গ

তবে শুধুই পরোক্ষভাবে৷ পরিবর্তে তিনি প্যারিসের সন্ত্রাসকে ‘‘বৃহত্তম ঈশ্বরনিন্দা'' বলে অভিহিত করেন – ইসলামের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা, যা ইসলামের নীতিমালাকে ‘‘ধুলিমলিন'' করেছে৷ একজন উচ্চপদস্থ ধর্মীয় প্রতিনিধির পক্ষে এর চাইতে স্পষ্টভাবে সন্ত্রাসকে প্রত্যাখ্যান করা সম্ভব ছিল না৷ তিনি ঘোষণা করেন, জার্মান মুসলিমরা ভবিষ্যতে ‘‘সমাজের সচেতন নাগরিক হবার জন্য আরো বেশি সচেষ্ট হবেন''৷ জার্মানির মুসলিমদের আগামীতে সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে হবে৷

জার্মান রাজনীতির ক্ষেত্রেও সে কথা প্রযোজ্য৷ ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণে স্মারক প্রহরার একদিন আগেই চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ-এর একটি স্মরণীয় উক্তির পুনরাবৃত্তি করেন: ‘‘ইসলাম জার্মানির অঙ্গ''৷ খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী রাজনীতিক ভুল্ফ ২০১০ সালে এই উক্তি করে রক্ষণশীল মহল থেকে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন৷ পাঁচ বছর পরেও ভুল্ফ-এর উক্তি পূর্বাপর বিতর্কিত৷ আজ তা নিয়ে বিরোধ অবান্তর বলে মনে হতে পরে৷

Berlin Mahnwache für Terroropfer am Brandenburger Tor 13.01.12014
ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণ আলোকিত হয়েছিল ফরাসি তেরঙ্গায়ছবি: Reuters/Fabrizio Bensch

স্বভাবতই জার্মানিতে খ্রিষ্টীয় প্রভাবই সর্বোচ্চ

বাস্তব হল, অভিবাসনের দেশ জার্মানিতে আজ লক্ষ লক্ষ মুসলিমের বাস৷ জার্মান সমাজ যে বহু শতাব্দী ধরে খ্রিষ্টধর্মের প্রভাব বহন করে আসছে, তা নিয়ে বিতর্ক চলে না৷ খ্রিষ্টধর্ম যে আজও জার্মান সমাজে অন্য যে কোনো ধর্মের চেয়ে বেশি বর্তমান এবং প্রভাবশালী, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা চলে না৷ তা সত্ত্বেও ইসলাম জার্মানির অঙ্গ এবং সৌভাগ্যবশত ইহুদি ধর্মও জার্মানির অঙ্গ৷

ধর্মনিরপেক্ষ এই ঐক্যবোধের একটি দুঃখজনক দিক হল এই যে, তা বস্তুত ধর্মের একটি বিকৃতির প্রত্যুত্তর৷ ঈশ্বরের নামে আক্রমণ চালানো প্যারিসেই শেষ হয়ে যায়নি অথবা যাবে না৷ দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ধর্মের এই সংহতি ঠিক সেই পরিমাণে গুরুত্বপূর্ণ৷ জার্মান প্রেসিডেন্ট গাউক কথাটা সঠিকভাবে ব্যক্ত করেছেন: অভিবাসী এবং দেশবাসীর মধ্যে ব্যবধান, আবার বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অভিবাসীদের মধ্যে ব্যবধান, আজও স্বল্পই দূরীভূত হয়েছে৷ ‘‘বৈচিত্র্যের জন্য প্রয়োজন মেলামেশার'' - বলেছেন গাউক, যে কথাটি সকলেরই শোনা ও কাজে পরিণত করা উচিত৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য