1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মেজাজ দেখানোর অভিযোগ

২২ ফেব্রুয়ারি ২০১০

গর্ডন ব্রাউন যে ডাউনিং স্ট্রীটে তাঁর কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, তার নানা উদাহরণ দিয়ে একটি বই লিখেছেন রাজনীতির সাংবাদিক এ্যান্ড্রু রনস্লে৷ বইটির কিছু কিছু অংশ ছাপা হয়েছে রবিবারের ‘‘অবজার্ভার’’ পত্রিকায়৷

https://p.dw.com/p/M7Q3
প্রধানমন্ত্রী হবার পর গর্ডন ব্রাউন: তখন তো মেজাজা ভালোই ছিলছবি: AP

এ্যান্ড্রু রনস্লে ব্রাউনের অগ্নিগর্ভ মেজাজের যে সব উদাহরণ দিয়েছেন, তা' পড়লে চমকে যেতে হয়৷ কোথাও নাকি ব্রাউন এক কর্মচারীর কোটের ল্যাপেল চেপে ধরে তাকে ধমকিয়েছেন৷ কোথাও এক সেক্রেটারি দ্রুত টাইপ করতে পারে না বলে তাকে তুলে দিয়ে নিজেই কিবোর্ডে বসেছেন৷ তাঁর সরকারি গাড়ির সীটে নাকি কালো কালো দাগ আছে, যেখানে ব্রাউন অধীর হয়ে তাঁর কলম দিয়ে খোঁচা মেরেছেন৷

টেলিফোন অপারেটরদের আতঙ্ক?

একবার নাকি ব্রাউন প্রধানমন্ত্রীর গাড়িতে করে যাবার সময় কোনো অপ্রিয় খবর পেয়ে হাত মুষ্টিবদ্ধ করেন এবং প্যাসেঞ্জার সীটে মুষ্টাঘাত করেন৷ তার ফলে সীটে বসা সিকিওরিটি অফিসার রীতিমতো সিঁটকে যান, এবং ব্রাউনের পাশে বসা এক সহকারীও ভয় পান যে, ব্রাউন হয়তো এবার তাঁর মুখেই ঘুষি মেরে বসবেন! - মোটমাট ব্রাউনের এই মেজাজের ব্যাপারটা এ্যাতোদূর গড়ায় যে সিভিল সার্ভিসের প্রধান গাস ম্যাকডনেল তাঁর সঙ্গে এ-ব্যাপারে কথা বলতে বাধ্য হন৷ ম্যাকডনেল ব্রাউনকে বলেন, এ'ধরণের আচরণ কাজ পাওয়ার উপযোগী পন্থা নয়৷ - এমনকি ‘‘অবজার্ভার'' এ'ও যোগ করেছে যে, ম্যাকডনেল নাকি ডিউটি ক্লার্ক, টেলিফোন অপারেটর ইত্যাদিদের শান্ত করার প্রয়োজন বোধ করেন এবং তাঁর নিজস্ব তদন্ত চালু করেন - যদিও ক্যাবিনেট অফিস থেকে এই তদন্তের কথা অস্বীকার করা হয়েছে৷ ক্যাবিনেট অফিসের এক মুখপাত্র বলেছেন, পরিস্থিতি আদৌ এই নয় যে, ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ১০ নং ডাউনিং স্ট্রীটের কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আচরণের তদন্ত দাবী করেছেন৷

‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা''

বস্তুত ডাউনিং স্ট্রীট রনস্লের বই-এর অভিযোগসমূহকে অভিসন্ধিমূলক এবং ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে৷ ব্রাউন স্বয়ং বলেছেন: ‘‘আমি জীবনে কখনো কারো গায়ে হাত তুলিনি৷ রাগের মূহূর্তে লোকে অনেক কিছু বলে ফেলে, এবং সকলেরই রাগ হয় - বিশেষ করে নিজের উপর৷ আমি খুব একরোখা, কিন্তু আমি কাউকে মেরেছি, এ-ধরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা৷'' - ক্যাবিনেট সতীর্থ পিটার ম্যান্ডেলসন'ও বলেছেন, রনস্লে যে ব্রাউনের ছবি এঁকেছেন, ‘‘তাকে আমি চিনি না''৷ ম্যান্ডেলসন বিবিসি'কে বলেন: ‘‘উনি লোকের উপর জোর করেন না, কিন্তু তাদের কাছ থেকে কাজ চান, যেমন তিনি নিজের কাছ থেকেও কাজ চান৷'' ম্যান্ডেলসন স্বীকার করেন যে ব্রাউনের মধ্যে একটা অধৈর্য্যের ভাব আছে, কিন্তু সেটা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে খারাপ নয় বলেই তাঁর ধারণা৷

ক্যারিসমা ও কেলেঙ্কারি

মুশকিল শুধু এই যে ব্রিটেনে এখন নির্বাচনের হাওয়া৷ তেসরা জুনের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে, যদিও সরকারিভাবে কোনো তারিখ ঘোষণা করা হয়নি৷ তবে বেসরকারিভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়ে গেছে৷ ব্রাউনের ক্যারিসমা নেই বলে একটা অভিযোগ অনেক দিনের৷ গত সপ্তাহে সেই ব্রাউনকে প্রাইমটাইম টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তাঁর অনুভূতিপ্রবণ দিক থেকেও দেখতে পাওয়া গেছে: ব্রাউন বলেছেন ২০০১ সালে তাঁর শিশুকন্যার মৃত্যুর কথা, স্ত্রী সারা'র সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা৷ এই সাক্ষাৎকার প্রচারের পর পরই সানডে টাইমস/ইউ গভ-এর সমীক্ষায় লেবার দলের সমর্থন দুই শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ শতাংশে, টোরি'দের এক শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৩৯ শতাংশে৷ এখন এই নতুন কেলেঙ্কারির ফলে পালে লাগা সেই নতুন হাওয়ায় আবার না ভাঁটা পড়ে৷

প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই