1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্লাটার বিদায় নিচ্ছেন

ইয়শা ভেবার/এসবি৩ জুন ২০১৫

সেপ ব্লাটার-এর আচমকা সুমতিকে কেন্দ্র করে অনেক প্রশ্ন উঠছে৷ তবে ডিডাব্লিউ-র ক্রীড়া সম্পাদক ইয়শা ভেবার-এর মতে, মূল বিষয় হলো, ফিফা অবশেষে আমূল পরিবর্তনের সুযোগ পাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/1Fb4o
FIFA - Präsident Blatter tritt zurück
ছবি: VALERIANO DI DOMENICO/AFP/Getty Images

ঝড়ঝাপটা এলে ধৈর্যের পরীক্ষা, নীরবতা বজায় রাখা, হেসে উড়িয়ে দেওয়া – ইয়োসেফ এস ব্লাটার এতকাল এমনটাই করে এসেছেন৷ গত কয়েক বছরে ফিফার অগুন্তি সংকটের একটির সময় তিনি নিষ্পাপ শিশুর মতো বলেছিলেন, ‘‘সংকট? সংকট আসলে কী?'' অমর ব্লাটার যেন সবকিছুর ঊর্ধ্বে থেকে সমালোচনা উপেক্ষা করে এসেছেন৷ অথবা এমন করেও বলা চলে, যে সমালোচনা নিয়ে তাঁর কোনো আগ্রহই ছিল না৷ এখনো পর্যন্ত এমনটাই ছিল৷

তিনি বিদায় নিচ্ছেন৷ গোটা ফুটবল জগত হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো৷ সেই সম্মিলিত নিঃশ্বাসের শব্দও যেন শোনা গেছে৷ এ যেন এক নির্বাণপ্রাপ্তি৷ যে মানুষটি প্রায় ৪০ বছর ধরে ফিফার উপর এতটা প্রভাব রেখেছেন, তিনি এখন পদত্যাগ করতে চান৷ মোট তিনটি কারণে ফুটবলের জন্য এটা সুদিন৷

Weber Joscha Kommentarbild App
ডিডাব্লিউ-র ক্রীড়া সম্পাদক ইয়শা ভেবার

আশাবাদী হবার তিনটি কারণ

প্রথমত, এটা সত্যি একটা ভালো দিন, কারণ বিশ্ব ফুটবল সংগঠনে নোংরা দুর্নীতির সংস্কৃতি গোটা সিস্টেমের প্রায় অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার জন্য ব্লাটার দায়ী৷ তিনি নিজে ঘুস কাণ্ডে জড়িত, এখনো পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বটে৷ তবে তিনি যে সব কথা জানতেন, সেটা মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গেছে৷ সরকারি কৌঁসুলির দৃষ্টিতে ব্লাটার ঘুস হিসেবে ১৪ কোটি ২০ লক্ষ সুইস ফ্রাঁ হস্তান্তরের কথা অবশ্যই জানতেন৷ নিজের সংস্থায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি কিছুই করেন নি৷ বড়জোর কিছু প্রতীকী লোক-দেখানো পদক্ষেপ নেবার চেষ্টা করেছেন৷ এর মধ্যে বেশ কিছু উচ্চপদস্থ ফিফা কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে আবার ব্লাটার-এর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত৷ সবকিছু জেনেও নীরব থাকার কারণে তিনিও দুর্নীতির দোসর হয়ে উঠেছেন৷

দ্বিতীয়ত, এটা সত্যি একটা ভালো দিন, কারণ ফিফা সামান্য হলেও কিছুটা আস্থা ফিরে পাচ্ছে৷ মুখের কথার দিন শেষ হয়েছে – কমপক্ষে এইটুকু আশা করা চলে৷ বার বার ‘স্বচ্ছতা'-র কথা বলা হলেও সব কিছু অন্ধকারই থেকে গেছে৷ যেমন ব্লাটার-এর বেতন ফিফার রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার বেড়াজালে অজানা থেকে গেছে৷ ‘ফেয়ারপ্লে' শব্দটিও শব্দই থেকে গেছে৷ ১৯৯৮ সালে ফিফার প্রেসিডেন্ট পদে ব্লাটার-এর নির্বাচনের সময় খামে ভরা ঘুসের টাকা সম্পর্কে সংস্থার মধ্যেই কানাঘুষো শোনা গেছে৷ বর্তমান দুর্নীতি কেলেঙ্কারির সময়ও ব্লাটার শুধু মৌখিক ও দায়সারাভাবে ‘দায়িত্ব' স্বীকার করেছেন৷ এখনো পর্যন্ত সেটা অন্তঃসারশূন্য একটা শব্দ থেকে গেছে৷

এবার উয়েফা-র পালা

তৃতীয়ত, এটা সত্যি একটা ভালো দিন, কারণ নতুন সূচনার পথ প্রশস্ত হয়ে গেছে৷ ফিফা নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করতে পারে, পুরানো রীতিনীতি বর্জন করতে পারে, দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মীদের বিতাড়ন করতে পারে৷ হ্যাঁ, ব্লাটার-এর আগেই পদত্যাগ করা উচিত ছিল৷ নির্বাচনে তাঁর জয় প্রতিপক্ষদের ক্ষতি করেছে এবং শেষ বারের মতো তাঁর বিজয় নিশ্চিত করেছে৷ ফলে এখন তিনি অপরাজেয় চ্যাম্পিয়ন হিসেবে রিং থেকে নেমে আসছেন৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও এর ইতিবাচক দিকটাও ভুললে চলবে না৷ ইউরোপে তাঁর পরাজিত বিরোধীরা অবশেষে নিজেদের কোন্দল ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারছে৷ তাদের অবশ্যই দায়িত্ব স্বীকার করতে হবে এবং দেখাতে হবে, আরও ভালো ফিফা কী রকম হতে পারে৷ যেমন ফিফা আসলে কী রকম সংগঠন, তা অবশেষে স্পষ্ট করে বলতে হবে৷ এটি সুইস আইন অনুযায়ী কোনো জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান নয়, বরং সম্পূর্ণ লাভজনক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান৷ এমন স্পষ্টবাদী স্বীকারোক্তি দিয়ে নতুন সূচনা হতে পারে৷

এটা মানতেই হবে, এ সব কথার মধ্যে অনেক আশা লুকিয়ে রয়েছে৷ ব্লাটার-এর পদত্যাগ সত্যি এক ফিফা-বিপ্লবের সূচনা ঘটাবে কি না, তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে৷ তবে সম্ভাবনা অবশ্যই রয়েছে৷ এবার এমন একজনকে প্রয়োজন, যিনি তার সদ্ব্যবহার করবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য