‘ভলভো’-কে কিনে নিল চীনা কোম্পানি ‘গিলি’
২৯ মার্চ ২০১০ভলভো'র এই মালিকানা বদলকে বিবেচনা করা হচ্ছে বিশ্বের মোটরগাড়ি শিল্পের মানচিত্রে বড় ধরণের পরিবর্তনের এক মাইলফলক হিসেবে৷ ইউরোপ এবং উত্তর অ্যামেরিকার মোটর শিল্প খাত গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যে অস্থিতিশীলতায় ভুগছিল, এটা তার সর্বশেষ এবং সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত৷
১৯৯৯ সালে সাড়ে ছয় বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে সুইডিশ কোম্পানি ভলভো'র মালিকানা কিনে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের মোটর জায়েন্ট ‘ফোর্ড মোটর কোম্পানি'৷ কিন্তু, মন্দায় আক্রান্ত অর্থনীতির মধ্যে মার্কিনিরাও এই ‘হাই-টেক' সুইডিশ গাড়ির মালিকানা ধরে রাখতে পারল না৷ অবশ্য ২০০৮ সালেই ভলভো-কে বিক্রি করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় ফোর্ড৷ গিলি'র এই ভলভো কিনে নেওয়ার চুক্তিই কোনো চীনা কোম্পানির ইউরোপের কোনো ‘হাই-টেক' ব্র্যান্ড কিনে নেওয়ার প্রথম এবং সবচেয়ে বড় ঘটনা৷
ঐতিহ্যবাহী এই ব্র্যান্ডটির মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের হাতে চলে যাওয়ার সময় সুইডিশদেরকে এতোটা বিমর্ষ হতে দেখা না গেলেও, পশ্চিম থেকে প্রাচ্যে মালিকানার হাতবদল সহজভাবে মেনে নিতে পারছে না তারা৷ সোমবার সুইডেনের প্রায় সব বড় দৈনিকের সম্পাদকীয় দেখলেই সেটা স্পষ্ট বোঝা যাবে৷ এর আগে ব্রিটেনের ‘জাগুয়ার' এবং ‘ল্যান্ড রোভার' এর মালিকানা ভারতের ‘টাটা মোটর্স' এর কাছে চলে যাওয়ার সময়ে ঠিক যেমনটা দেখা গিয়েছিল৷
‘ডেগেন্স নাইহেটার' পত্রিকায় অর্থবিষয়ক সংবাদ ভাষ্যকার প্যাট্রিসিয়া হেডেলিউস লিখেছেন, ‘‘শিল্প জগতের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় লিখিত হল গোথেনবার্গে৷'' সুইডেনের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের এই শহরেই ভলভো'র সদর দপ্তর অবস্থিতি এবং এখানেই রোববার মালিকানা বদলের চুক্তি স্বাক্ষর হয়৷
ভলভো'র নতুন চীনা মালিকরা অবশ্য জানিয়েছেন, দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রক্ষা করে গাড়ি কোম্পানিটির সদর দপ্তর সুইডেনের গোথেনবার্গেই রাখা হবে৷ এছাড়াও সুইডেন এবং বেলজিয়ামে ভলভো'র কারখানাও স্থানান্তর করা হবে না বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে তারা৷
গিলি'র চেয়ারম্যান লি শুফু বলেছেন, ‘‘আজকের দিনটি গিলির জন্য একটা মাইলফলক৷'' ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই চীনা কোম্পানিটি এখন দেশটির সবচেয়ে বড় বেসরকারি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান৷ রেফ্রিজারেটরের যন্ত্রাংশ সরবরাহের কাজ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল মোটর কোম্পানি গিলি৷ এখন সব মিলিয়ে গিলি‘র কর্মী সংখ্যা প্রায় ১২,০০০৷ আর গিলি বছরে তৈরি করছে প্রায় ৩ লাখ গাড়ি৷
প্রতিবেদক : মুনীর উদ্দিন আহমেদ
সম্পাদনা : দেবারতি গুহ