1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২৪ ঘণ্টা সৌরবিদ্যুৎ

১৯ জুলাই ২০১৩

রাজস্থান রাজ্যে বিশাল আকারে এক থার্মাল সোলার প্লান্ট তৈরির উদ্যোগ চলছে, যার লক্ষ্য ২৪ ঘণ্টা সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহ করা৷ প্রকল্প সফল হলে গোটা দেশে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হবে৷

https://p.dw.com/p/1981r
ছবি: Golo Pilz

ভারতের রাজস্থান রাজ্যের মাউন্ট আবু হিন্দুদের পবিত্র তীর্থস্থান৷ গোলো পিলৎস জায়গাটিকে খুব পছন্দ করেন৷ জার্মানির এই কাঠ মিস্ত্রি ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ভারতে বসবাস করছেন৷ তিনি একজন যোগী৷ প্রতিদিনই ‘মেডিটেশন' বা ধ্যান করেন তিনি৷

তবে শুধু যোগাসন নয়, গোলো-র হাতে আরও একটি কাজ আছে৷ একটি থার্মাল সোলার প্লান্ট তৈরির কাজ চলছে৷ এর মধ্যেই প্রায় ৮০০টি খাঁচা তৈরি হয়ে গেছে৷ এবার তাতে বিশাল রিফ্লেক্টর বসাতে হবে৷ গোলো পিলৎস নিজের উদ্যোগেই সৌরশক্তি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছেন৷ তিনি বললেন, ‘‘আমাদের কাছে নতুন ধরনের এক রিসিভার আছে, যা দিয়ে সৌরশক্তি প্রায় ১৬ ঘণ্টা স্টোর করা যায়৷ আমরা এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২৪ ঘণ্টাই চালু রাখতে চাই, যা গোটা বিশ্বে এখনো সম্ভব হয় নি৷ অন্য কেউ থার্মাল সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র সারা দিন চালাতে পারে নি৷''

Solarpark Indien
ভারতে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ চলছেছবি: SAM PANTHAKY/AFP/Getty Images

ভারত ও জার্মানির সরকার যৌথভাবে এই সোলার পার্কে সহায়তা করছে৷ ভারতের জাতীয় সৌরবিদ্যুৎ নীতির আওতায় এটা একটা মডেল প্রকল্প৷ ভারত সরকার দেশে আরও সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়৷ বর্তমানে এর অনুপাত এক শতাংশেরও কম৷ নতুন এই প্লান্ট ব্রহ্মকুমারীদের এই আশ্রমের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাবে বলে সবার আশা৷ গোলো পিলৎস-ও এই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সদস্য৷

বছরে কয়েকবার তীর্থযাত্রীরা এখানে আসেন৷ তাদের সংখ্যা ২০,০০০ ছাড়িয়ে যায়৷ এছাড়া মাউন্ট আবু-র আশ্রমে কয়েকশো ভক্ত পাকাপাকিভাবে বসবাস করেন৷

ব্রহ্মকুমারীরা পরিবেশ সংরক্ষণকে দায়িত্ব বলে মনে করেন৷ এখনই আশ্রমের ছাদে বেশ কিছু সোলার প্যানেল বসিয়ে রান্নার কাজ চলছে৷ সোলার কুকার স্টিম বা বাষ্প তৈরি করে৷ তা কাজে লাগিয়ে রান্নাঘরের চাহিদা মেটানো হয়৷ দিনে তিনবার রান্না হয়৷ সবার জন্য নিরামিষ খাবার৷ ব্রহ্মকুমারীদের বিশ্বাস, সৌরশক্তি দিয়ে রান্না করলে তা আরও শুদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর হয়৷

নতুন এই প্লান্টের পিছনে রয়েছে গোলো পিলৎস-এর উদ্যোগ৷ বাকিদের সঙ্গে তিনি এমন সব নতুন প্রযুক্তি পরীক্ষা করে দেখেন, যা ভারতে সহজেই কাজে লাগানো সম্ভব৷ যেমন ঢালাই লোহা দিয়ে তৈরি নতুন স্টোরেজে কীভাবে থার্মাল ইনসুলেশন করা সম্ভব৷ সবকিছু সস্তা হতে হবে, সহজেই নকল করা যাবে৷ যোগীদের জন্য কাজটা মোটেই সহজ নয়৷

সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এর জন্য বাকি অর্থ সংগ্রহ করা৷ সবাই মিলে কাজ করলেও প্রকল্পের খরচ বেড়েই চলেছে৷ মনে রাখতে হবে, ভারতে মূল্যস্ফীতির মাত্রা প্রায় ১০ শতাংশ৷

সোলার পার্ক-এর কল্যাণে আশ্রমকে আর গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নিতে হবে না, এটাই হলো লক্ষ্য৷ তবে সোলার থার্মাল প্রযুক্তি সম্পর্কে আরও গবেষণা করে খরচ কমানোও অন্যতম উদ্দেশ্য৷

প্রায় ৫০ লক্ষ ইউরো কম পড়ছে৷ সেই অভাব মেটানোর লক্ষ্যে আলোচনা চলছে৷ তবে যোগী হিসেবে গোলো পিলৎস বিশেষ কৌশল কাজে লাগিয়ে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছেন৷ তিনি বললেন, ‘‘এই অবস্থায় মেডিটেশন বা ধ্যান বিশেষভাবে সাহায্য করে৷ ঠান্ডা মাথায় সমস্যার সমাধান সম্পর্কে ভাবতে হবে৷ উত্তেজিত হলে চলবে না৷ তখন কিন্তু বিষয়টা অনেক সহজ হয়ে যায়৷''

ভারত ও জার্মানি – দুই দেশের সরকারই চায় প্রকল্প শেষ হোক৷ প্রয়োজনে তারা বাড়তি অর্থ ঢালতেও প্রস্তুত৷ উদ্দেশ্য, মাউন্ট আবুর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এমন আরও প্রকল্প গড়ে উঠুক৷ শুধু ভক্তরা নয়, সারা ভারতের মানুষই যেন এর সুফল ভোগ করতে পারে৷

এসবি/ডিজি