1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মধ্যযুগীয় রোগের কাছে এখনও পরাজিত আফগানরা

৪ নভেম্বর ২০১০

একবিংশ শতাব্দীতে এসেও মধ্যযুগের রোগশোক থেকে মুক্তি পায়নি আফগানিস্তানের মানুষ৷ আধুনিক যুগে এসেও তাদের জীবনমানের তেমন কোনো উন্নয়ন ঘটেনি৷

https://p.dw.com/p/PyON
ছবি: AP

মোসার বয়স সতেরো৷ থাকেন আফগানিস্তানের এক পাহাড়ের চূড়ায়৷ পৃথিবীর দুর্গম এলাকাগুলোর মধ্যে এটি একটি, যেখানে সবচেয়ে কাছের রাস্তা থেকেও পায়ে হেঁটে যেতে সময় লাগে চারঘন্টা৷ তিনি ঠিক মনে করতে পারেননা শেষ কবে তিনি স্নান করেছিলেন৷ তবে তাঁর ডান হাতের কনুই থেকে আঙুলের ডগাই বলে দেয় তিনি কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত৷ মোসার ফোলা লাল মুখমন্ডল, হাত এবং পা দেখে এমন কথাই বলছেন ডাক্তার আলী মোরোল৷ তিনি বলেন, এই রোগের প্রধান লক্ষণ হলো ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হওয়া৷ অথচ সেখানে কোনো ধরণের জ্বালাপোড়া, চুলকানো বা ব্যথা থাকেনা৷ কেবল ঐ অংশটা অনুভূতিহীন হয়ে যায়৷ মোসার বাহুতে খোঁচা মেরে অনুভূতিশূণ্যতার বিষয়টা দেখালেন মোরোল৷ কুষ্ঠরোগ ছড়িয়ে পড়লে স্নায়ুতে কি কি পরিবর্তন আসে সে সম্পর্কেও জানালেন এই ডাক্তার৷

বামিয়ান প্রদেশের প্রায় তিন হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের উপরের জেলায় বসবাস করেন প্রায় পঁয়ছট্টি হাজার মানুষ৷ আর এখানেই জার্মান দাতব্য এক সংস্থার পক্ষ থেকে গত দশক থেকে মোরাল ছোট্ট একটি ক্লিনিক চালাচ্ছেন৷

Flash-Galerie Bundeswehr in Afghanistan
ছবি: AP

কুষ্ঠ এমন একটি রোগ যা মধ্যযুগীয় নোংরা আবর্জনা, দু:স্থতা ও মানুষের চরম বিকৃতির চিত্র তুলে ধরে এবং যা মানুষকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়৷ বর্তমানে এই রোগ অন্য এক বাস্তবতা তুলে ধরে৷ দেখিয়ে দেয় যে, আফগানিস্তানে এতদিনের উন্নয়নের ক্ষেত্রে কতটা ফাঁক রয়ে গেছে৷ ২০০১ সাল থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছেন আফগানরা৷ তারপরও লাখ লাখ আফগান মানুষের জীবনযাত্রার মানের ক্ষেত্রে গত শতাব্দীগুলোর চেয়ে খুব কমই পরিবর্তন হয়েছে৷

প্রেসিডেন্ট হামিদ কার্জাই'এর সরকার অবশ্য অভিযোগ করছে, এই আর্থিক সহযোগিতা যথেষ্ট নয়৷ হিসেব দেখানো হচ্ছে, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ টাকাই সরাসরি চলে যাচ্ছে ঐসব প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে যারা ইউএস এইড'র মতো দাতাসংস্থাগুলোর কাছ থেকে উন্নয়নমূলক কাজের বরাত পাচ্ছে৷ তবে দাতাগোষ্ঠীরা মনে করছে, এর পিছনে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি৷ কিংবা ভুল পথে পরিচালিত ছোটো ছোটো প্রকল্পগুলোও এর কারণ হতে পারে৷

প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক