1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মসজিদেই মুয়াজ্জিনকে কুপিয়ে হত্যা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৪ এপ্রিল ২০১৬

পুরনো ঢাকার ইসলামপুরের জব্বু খানম জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন বিল্লাল হোসেন (৫১)৷ সোমবার মসজিদের ভিতর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়৷ তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে – এ কথা জানালেও, হত্যার সুনির্দিষ্ট কারণ পায়নি পুলিশ৷

https://p.dw.com/p/1IP7u
রক্তাক্ত ছুরি
ছবি: Fotolia/GrafiStart

নিহত বিল্লাল হোসেন তিনতলা মসজিদ ভবনেরই একটি কক্ষে বসবাস করতেন৷ মসজিদটি প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো এবং তার নীচে মসজিদের মালিকানায় একটি মার্কেটও আছে৷ জানা গেছে, ভোর ৫টার দিকে নামাজ পড়তে গিয়ে মসজিদের সিঁড়িতে রক্ত দেখতে পান স্থানীয়রা৷ এরপর রক্তের ধারা অনুসরণ করে ভেতরে গিয়ে মুয়াজ্জিনের লাশ পান তারা৷ খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠায়৷ তাঁর শরীরে পাঁচটি গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল৷

পুলিশ জানায়, তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পাঁচটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে৷ ধারণা করা হচ্ছে, মধ্যরাতের পর যে কোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে৷ এ কারণে মসজিদে ফজরের আজানও হয়নি৷ এমনকি নিরাপত্তার কারণে আপাতত মসজিদটি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে ও খবর৷

আব্দুল আউয়াল

এ ব্যাপারে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে কোতয়ালী থানায় মামলা হয়েছে ইতিমধ্যেই৷ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ঠিক কী কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, সে ব্যাপারে আমরা এখনো নিশ্চিত নই৷ আমরা মসজিদ থেকে কোনো টাকা বা অন্যকিছু খোয়া যাওয়ার প্রমাণও পাইনি৷ তবে মসজদিরে পাশে খ্রিষ্টানদের ‘মিশনারিজ অফ চ্যারেটিজ' ও বিপরীত দিকে ‘জিন্দা পীরের মাজার' নামে একটি মাজার আছে৷ এ দু'টির সঙ্গে নিহত মুয়াজ্জিনের কোনো যোগাযোগ ছিল কিনা, তা আমরা খতিয়ে দেখছি৷''

মসজিদের নীচতলার মার্কেটের কেয়ারটেকার আব্দুল আউয়াল ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘বিল্লাল হোসেন ২৭ বছর ধরে এই মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে কর্মরত ছিলেন৷ মসজিদের আয়ের একটি অংশ তাঁর কাছেই থাকতো৷ মার্কেট থেকে মাসে ৪০ হাজার ঢাকার মতো আয় হয়৷ গত বছর রোজার মাসে তাঁকে একবার মারধোর করে দুর্বৃত্তরা দুই লাখ টাকা নিয়ে গিয়েছিল৷ সে সময় তাঁর কাছে রোজার মাসের দানের বাড়তি টাকা ছিল৷''

তিনি বলেন, ‘‘তিনতলার একটি কক্ষে বিল্লাল থাকতেন৷ কিন্তু রাতে নামাজের পর মসজিদ তালা মারা থাকতো৷ তাই তাঁকে কেন হত্যা করা হলো বুঝতে পারছি না৷ আমার জানামতে তাঁর কোনো শত্রু ছিল না৷''

স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হোসেন আরো জানান, ‘‘আমরাও প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কারণ জানতে পারিনি৷ তবে কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত শুরু করেছি৷ এরমধ্যে উগ্রপন্থিদেরও সন্দেহের বাইরে রাখছি না৷ মাজার এবং মিশনারিজ অফ চ্যারেটিজ-এর সঙ্গে এ ঘটনার কোনো যোগাযোগ আছে কিনা – সেটাও আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি৷ তার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব শত্রুতা বা ডাকাতির বিষয়টিও দেখছি৷ তবে ডাকাতির কোনো আলামত এখনো পাইনি৷''

নিহত বিল্লালের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ৷ তিনি ‘কোরানে হাফেজ' ছিলেন৷ মাদ্রাসা ও কলেজ পড়ুয়া দুই সন্তান রেখে গেছেন তিনি৷

প্রসঙ্গত, গত ছ'মাসে বাংলাদেশে ভিন্ন ধর্মীয় চিন্তার মানুষ, পুরোহিত এবং সংখ্যালঘু ধর্মগুরুরা হামলা ও হত্যার শিকার হলেও কোনো মুয়াজ্জিমকে মসজিদের ভেতরে হত্যার ঘটনা এই প্রথম৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য