1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মহাকাশ সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণের অভিনব উদ্যোগ

কর্নেলিয়া বরমান/এসবি২৪ মে ২০১৪

মহাকাশের রহস্য জানতে কে না চায়? আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নিত্য-নতুন তথ্য পেলেও তা সংরক্ষণ ও প্রয়োজনে তার নাগাল পেতে হিমশিম খেতে হয় তাঁদের৷ এক জার্মান বিজ্ঞানী সেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/1C58L
ছবি: Reuters

তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের মধ্যে সৃজনশীলভাবে সমন্বয় সাধন করতে হাইডেলব্যার্গ ইন্সটিটিউট ফর থিওরেটিকাল স্টাজিস বা ‘হিটস' গড়ে তোলা হয়েছিল৷ সেখানকার গবেষক কাই পলস্টারার নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পছন্দমতো কাজ করার, নিজের প্রকল্পের পরিকল্পনা করার যে স্বাধীনতা রয়েছে, তা সত্যি অনবদ্য৷ অন্য কোথাও এমন সুযোগ পাওয়া কঠিন৷ নিজের আগ্রহ, গবেষণার বিষয়, তার পরিকল্পনা – সবই নিজের হাতে৷''

কাই পলস্টারার জ্যোতার্বিজ্ঞানীদের তথ্য সংরক্ষণের কাজ সহজ ও আরও কার্যকর করে তুলতে চান৷ এই লক্ষ্যে তিনি ‘অ্যাস্ট্রো কম্পিউটার সাইন্স' নামের একটি ক্ষেত্র গড়ে তুলছেন৷ মহাকাশের অনেক ছবির নাগাল পাওয়া কঠিন৷ বিভিন্ন মানমন্দিরের আর্কাইভে সে সব পড়ে থাকে৷ যেমন একশো বছরেরও বেশি পুরানো অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির এক ফটো-প্লেট৷ জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে এটা গুপ্তধনের মতো৷ এই কাচ ভেঙে গেলে অমূল্য তথ্য চিরকালের জন্য হারিয়ে যাবে৷ কাই পলস্টারার তাই এই সব ছবির ডিজিটাল সংস্করণ তৈরি করে সবার নাগালে আনতে চান৷

আগামী কয়েক বছরে জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত তথ্যের পরিমাণ বিশাল মাত্রায় বেড়ে যাবে৷ টেলিস্কোপগুলির ক্ষমতা আরও বাড়তে থাকবে৷ চলতি দশকের শেষে চিলি-তে মার্কিন লার্জ সিনপটিক সার্ভে টেলিস্কোপ কাজ শুরু করবে৷ মাত্র তিন রাতেই এই টেলিস্কোপ গোটা আকাশের ছবি তুলতে পারবে৷ শুধু এই একটি টেলিস্কোপ প্রতি রাতে ৬০ টেরা বাইট পরিমাণ তথ্য সৃষ্টি করবে৷ ড.কাই পলস্টারার বলেন, ‘‘ভেবে দেখুন, প্রতি রাতে ৬০ মিটার উঁচু ডিভিডি-র স্তূপ তৈরি হচ্ছে৷ অর্থাৎ বিশাল পরিমাণ ডাটা৷ আর পুরানো পাঞ্চ কার্ডের হিসেবে প্রতি রাতে বিশাল কন্টেনার জাহাজ ভরে যাবে৷ পুরোটাই তথ্য সংরক্ষণের জন্য৷ এর অর্থ হলো, আমাদেরই তৈরি ডাটার ভার আমরা আর সামলাতে পারছি না৷''

কাই পলস্টারার তাই এমন কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরি করতে চান, যার সাহায্যে অনেকগুলি আর্কাইভের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো মহাজাগতিক বস্তুর খোঁজ চালানো যাবে৷ কাজে লাগানো হবে এমন সফটওয়্যার, যা মানুষের সাহায্য ছাড়াই আরও বুদ্ধিমান হয়ে উঠতে পারে৷ ড. পলস্টারার বলেন, ‘‘যন্ত্রের শিক্ষাগ্রহণ অনেকটা ছোট শিশুদের সঙ্গে খেলার মতো৷ আমার ছোট মেয়ের সঙ্গে যখন বিল্ডিং ব্লক তৈরির খেলা খেলি, তখন তাকে বলি না – যাও এমন দেখতে, এমন রংয়ের বা এমন আকারের একটা ব্লকের টুকরো নিয়ে এসো৷ একই রকম দেখতে একটা ব্লক দেখিয়ে তাকে বলি, এমন ব্লক খুঁজছি৷ তখন সে বেশ তাড়াতাড়ি সেটা খুঁজে পায়৷''

যে সব জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বিবর্তন প্রক্রিয়া কম্পিউটারে ফুটিয়ে তুলতে চান, তাদের জন্য এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ৷ মহাকাশের ছবির সঙ্গে তাঁদের মডেল মিলিয়ে দেখতে হয়৷ আর্কাইভে নতুন বা বিরল কোনো মহাজাগতিক বস্তু পেলে মডেলেও পরিবর্তন করা যাবে৷ ড. পলস্টারার বলেন, ‘‘বড় ক্যাটালগ ঘাঁটতে গেলে বা তা বিশ্লেষণ করতে গেলে কম্পিউটার আমাদের বুদ্ধিমান অ্যাসিস্টেন্টের মতো সাহায্য করবে, সেটাই তো চাই৷ যান্ত্রিক, একঘেয়ে কাজ তাকেই করতে হবে৷''

কাই পলস্টারার এই সব ডাটার থ্রিডি সিমুলেশনের স্বপ্ন দেখছেন৷ গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের ত্রিমাত্রিক প্রতিচ্ছবি তাদের বিবর্তন বুঝতে অনেক বেশি সাহায্য করবে৷ ফলে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে আরও নতুন জ্ঞান আহরণ করা সম্ভব হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য