1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাদক মামলায় বিচারকের কারাদণ্ড

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৭ আগস্ট ২০১৩

ফেনসিডিল বহণের দায়ে একজন সহকারী জজকে ৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত৷ বহুল আলোচিত এই মামলার রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন এর মধ্য দিয়ে সমাজে মাদকের ভয়াবহ রূপও বেরিয়ে এসেছে৷

https://p.dw.com/p/19Wgh
ছবি: picture-alliance/dpa

সিনিয়র সহকারী জজ (সাময়িক বরখাস্ত) জাবেদ ইমাম চাকরি করতেন ভোলায়৷ গত বছরের ১লা ডিসেম্বর তিনি ঢাকার নিউ মার্কেটের কাছে টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে ব্যাগভর্তি ৩৪২ বোতল ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েন৷ পরদিন তাঁকে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা হলে এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়৷ আদালত ৫ জন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়৷ তবে চলতে থাকে মামলার তদন্ত৷ ২০শে ডিসেম্বর পুলিশ বিচারক জাবেদ ইমামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে৷ মঙ্গলবার এই মামলার রায়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ রুহুল আমিন তাঁকে ৪ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন৷ অনাদায়ে তাঁকে আরো ২ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত৷ রায় ঘোষণার সময় জামিনে থাকা বিচারক জাবেদ ইমাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷ জামিন বাতিল করে তাকে সেখান থেকে কারাগারে পাঠান হয়৷

এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এসএম জাহিদ হোসেন সরদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে আইন সবার জন্য সমান৷ তবে সমাজে মাদকের ভয়াবহ বিস্তারের বিষয়টিও জানা গেল৷ আর এই মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে নানা পেশা ও শ্রেণির মানুষ৷ যা আতঙ্কের কারণ৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে এই মামলার তদন্তে ত্রুটি আছে৷ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতি বোতলে কী পরিমাণ ফেনসিডিল ছিল তা উল্লেখ করেননি৷ করলে জাবেদ ইমামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হত৷''

বাংলাদেশে এখন মাদকাসক্তের সংখ্যা ৮০ লাখ বলে ধরা হয়৷ বছরে গড়ে ১২ হাজার মাদকাসক্ত চিকিত্‍সা নেয়৷ ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘সমাজের সব শ্রেণির মানুষের মধ্যেই মাদক এখন ঢুকে গেছে৷ নিম্নবিত্ত, উচ্চবিত্ত, নানা ধরনের পেশাজীবী – ছাত্র কেউ এর বাইরে নেই৷ আর সবচেয়ে বড় কথা হল এই মাদকসেবীদের একাংশই আবার মাদক ব্যবসায়ী৷ এর নেপথ্যে আছে বড় বড় মাদক সিন্ডিকেট৷ তাদের দু'একজনকে ধরা গেলেও তথ্য-প্রমাণের অভাবে অনেকেই ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকে৷''

এদিকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ডা. তাজুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গাঁজা ও ফেনসিডিল ছাড়াও ইয়াবা নামের নতুন মাদক ছড়িয়ে পড়ছে৷ ইয়াবায় আসক্তের সংখ্যা বাড়ছে৷ আর তাদের অধিকাংশই তরুণ-তরুণী৷ এই মাদক বন্ধ না করা গেলে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসতে পারে৷''

যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, ফেনসিডিল এবং ইয়াবা ভারত ও মিয়ানমার থেকে আসে৷ ঢাকা শহর বা দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের পর তারা তা ধরতে পারেন৷ কিন্তু প্রয়োজন সীমান্তেই এগুলোকে আটকে দেয়া৷ সীমান্তে নজরদারি সত্ত্বেও এগুলো বন্ধ করা যাচ্ছেনা বলে জানান তিনি৷ ডা. তাজুল ইসলাম বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে হবে৷ তাদের আইনের আওতায় আনা না গেলে এর বিস্তার রোধ করা সম্ভব নয়৷ আইনজীবী এসএম জাহিদ হোসেন সরদার বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে৷ কারণ মাদক হল অনেক বড় বড় অপরাধের জননী৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য