1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাদার টেরেসার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন শুরু আজ থেকে

২৬ আগস্ট ২০১০

কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের অন্যত্র ২৬শে আগস্ট দিনটি পালন করা হচ্ছে বিভিন্ন ধর্মীয় ও মানবসেবা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে৷ কিন্তু সকলের মনেই জিজ্ঞাসা, মাদারকে সেন্টহুড দিতে আর কতো দেরি ?

https://p.dw.com/p/Ox3N
প্রেম ও অনুকম্পার প্রতিমা মাদার টেরেসাছবি: AP

প্রেম ও অনুকম্পার প্রতিমা মাদার টেরেসা৷ নীল পাড় সাদা শাড়ির ঘোমটা দেয়া, মমতাভরা মুখের সেই মহিয়সী নারী আজ সারা বিশ্বে নিঃস্বার্থ মানব সেবা, মমতা প্রেম ও দয়ার মাতৃপ্রতিমা৷ বৃহস্পতিবার কলকাতায় ৬০ বছর আগে মাদারের স্থাপিত ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি'তে এক বিশেষ প্রার্থনা সভায় যোগ দেন অসংখ্য ক্যাথলিক নান আর বস্তির শত শত গরিব ও দুঃস্থ মানুষ৷ সকাল থেকেই খোলা ছিল এই মাদার হাউস৷ প্রজ্বলিত মোমবাতি হাতে শত শত ভক্ত অনুরাগী মাদারের সমাধি বেদিতে প্রার্থনা করেন৷ পড়ে শোনানো হয় পোপ ষোড়শ বেনিডিক্টের পাঠানো বার্তা৷

Pristina Mutter Teresa Denkmal
ধর্মীয় ও মানবসেবা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মাদার টেরেসা’র জন্ম শতবার্ষিকী পালিত হচ্ছেছবি: DW

মাদারের উত্তরসূরি সিস্টার নির্মলা এবং বর্তমান প্রধান সিস্টার প্রেমা শান্তি ও প্রেমের প্রতীকরূপে উড়িয়ে দেন শ্বেত পারাবত৷ মাদারের জীবন ও কর্ম সব দেশের, সব ধর্মের, সর্ব স্তরের মানুষের কাছে প্রেরণার উত্স, বলেন সিস্টার প্রেমা৷ অন্যান্য চার্চেও হয় বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান৷ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ‘ক্যাথিড্রেল অব ইমাকিউলেট হার্ট অফ মেরি' এবং দক্ষিণ ২৪-পরগণা জেলার বারুইপুরে ‘মাদার টেরেসা ক্যাথিড্রেল'৷ মাদার টেরেসার নামে উত্সর্গ করা এটাই প্রথম চার্চ৷ মাদারের অনুষঙ্গ স্মরণে সেখানকার দেওয়াল পেন্ট করা হয় সাদা ও নীল রঙে৷ প্রচারিত হয় মাদারের জীবনদর্শন ও বাণী৷

মাদার টেরেসাকে সেন্টহুড দিতে আর কত দেরি ? - এ প্রশ্ন আজ আপামর মানুষের মুখে৷ উত্তরে ঐ চার্চের বিশপ সালভাডর লোবো বলেন, নতুন কোনো অলৌকিক ঘটনার কথা না জানা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে৷ যদিও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাদারকে সেন্টহুড দেবার অনুরোধ আসছে, কিন্তু ক্যাথলিক চার্চের নিয়ম অনুসারে, গ্রহণযোগ্য আরো অলৌকিক ঘটনার কথা আগে জানতে হবে৷ ঐসব ঘটনা হবে তাত্ক্ষনিক, বিজ্ঞানের ভাষায় তা ব্যাখ্যা করা যাবেনা৷ সাধারণতঃ রোগ নিরাময়ের ঘটনা গোচরে আসে৷ তবে তা হতে হবে চিকিত্সা বিজ্ঞানের সাহায্য ছাড়া৷

উল্লেখ্য, মাদারকে বিয়্যাটিফাই করা হয় ২০০৩ সালে এক অলৌকিক ঘটনার ভিত্তিতে৷ মনিকা বের্সারের ক্যানসার রোগ নিরাময়, যেটা ডাক্তাররা সঠিক বলে রায় দিয়েছিলেন৷ তারপর থেকে মাদারের আর কোন অলৌকিক ঘটনার কথা জানা যায়নি, বলেন বিশপ লোবো৷ মাদারের বিয়্যাটিফিকেশনের জন্য দীর্ঘ চার বছর ধরে তাঁকে ৩৭ হাজার নথিপত্র পরীক্ষা করতে হয়, বলেন তিনি৷

মাদার টেরেসার জন্ম মাসিডোনিয়ায়, ১৯১০ সালের ২৬শে অগাস্ট৷ ১৫ বছর বয়সে সংসার ত্যাগ করে আসেন আইরিশ কমিউনিটি অফ নানস'এর সিস্টার অব লোরেটোর ইন্ডিয়া মিশনের কলকাতা শাখায়৷ ভারতীয় নাগরিকত্ব ১৯২৯-এ৷ চার্চ ছেড়ে গরিব দুখীদের সেবায় আত্মনিযোগ করতে স্থাপন করেন ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি' আর কুষ্ঠ রোগিদের জন্য ‘নির্মল হৃদয়' ১৯৫০-এ কলকাতায়৷ পরে চলে যান মাদার হাউজে৷ নোবেল প্রইজ পান ৭৯-তে৷ ভারত রত্ন ৮০-তে৷ মহাপ্রয়াণ ৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৭৷ বর্তমানে বিশ্বের ১৩৩টি দেশে ছড়িয়ে আছে ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি'র শাখা৷ যেখানে কর্মরতা প্রায় সাড়ে চার হাজার সিস্টার৷

প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ