1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মানবাধিকারবাদী চিকিৎসক বিনায়ক সেনের মুক্তি দাবি

৩ জানুয়ারি ২০১১

মানবাধিকারবাদী চিকিৎসক বিনায়ক সেনের যাবজ্জীবন শাস্তির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদে সরব হয়েছে গোটা ভারতের বুদ্ধিজীবী মহল৷ সেই সূত্রে আজ নতুনদিল্লিতে এসেছেন সেনের পত্নী ইলিনা সেন৷ এই অবিচারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/zt05
Demonstration, Inhaftierung, Author, Binayak, Sen, Jaipur, বিনায়ক, সেন, মুক্তি, দাবি, জয়পুর, বিক্ষোভ, মানবাধিকারবাদী, চিকিৎসক,
বিনায়ক সেনের মুক্তির দাবিতে জয়পুরে বিক্ষোভছবি: DW

মানবাধিকারবাদী চিকিৎসক বিনায়ক সেনের পত্নী ইলিনা সেনের অভিযোগ তাঁর স্বামীকে ভিত্তিহীন অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷ সাক্ষ্য প্রমাণের নামে আদালতে পুলিশ যা পেশ করেছে তা জাল৷ তাঁর বাড়ি থেকে যেসব কাগজপত্র এবং কম্পিউটার তথ্য-উপাত্ত পুলিশ নিয়ে গেছে তাকে বিকৃত করা হয়েছে৷ সেসময় কোন সাক্ষী উপস্থিত ছিলেন না বা বাড়ির মালিকের সই নেয়া হয়নি৷ ইলিনা সেন বলেন, তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ তিনি মাওবাদী তাত্ত্বিক নেতা জেলবন্দি নারায়ন স্যান্নালের চিঠি পাচার করেন৷ তিনি লুকিয়ে তো নিয়ে যাননি৷ সেসময় দুজন জেলার সেখানে ছিলেন৷ দ্বিতীয়ত চিঠিতে হিংসার নামগন্ধ ছিল না৷ শুধু তাই নয় আমার বিরুদ্ধেও অভিযোগ আমার সঙ্গেও নাকি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর যোগাযোগ আছে৷ এসবই বানানো৷ তাসত্ত্বেও দায়রা আদালত এই সব কিছু মেনে নিয়ে বিনায়ক সেনকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে শাস্তি দেন৷

ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার দায়বদ্ধতার প্রশ্ন তুলে বিনায়ক সেনের পত্নী বলেন, এটা শুধু বিনায়ক এবং তাঁর পরিবারের নয় তার চেয়েও বেশি৷ যেভাবে পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হয়েছে পুরো পরিবারকে তাতে একসময় বিদেশে আশ্রয় নেবার কথাও ভেবেছিলাম, বলেন ইলিনা সেন৷

Dr. Binayak Sen
মানবাধিকারবাদী চিকিৎসক বিনায়ক সেনছবি: AP

ইলিনার আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ এই অন্যায় বিচারের জন্য ঐ বিচারকের অপসারণ দাবি করেন৷ এই জিনিস চলতে থাকলে সামাজিক মেরুকরণের আশঙ্কা আছে৷ অর্থাৎ সরকারের পক্ষে না আসা মানে সরকারের বিপক্ষে৷ এটা এক নাৎসিবাদী মানসিকতার পরিচয়, বলেন বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ৷

দার্শনিকও ভাষাবিদ নোয়াম চমস্কি, নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন, ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপার, মুশিরুল হাসান, অর্থনীতিবিদ অশোক মিত্রের মত বিদ্দজনদের অভিমত বিনায়ক সেন কখনও হিংসার পথে হাঁটেননি৷ চিকিৎসক হিসেবে বরাবরই তিনি থেকেছেন প্রান্তিক মানুষজনদের পাশে৷ তার পরেও তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে যেভাবে শাস্তি দেয়া হয়েছে, তা অবিশ্বাস্য৷ তাঁরা একথাও বলেছেন, সাংবিধানিক ব্যবস্থার নামে রাষ্ট্র যখন এমন ব্যবস্থা নেয়, তখন সাংবিধানিক ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে৷

নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন বলেছেন, যিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন তাঁকে দেশবিরোধী বলে জেলে পোরা সরকারের চিন্তার বিকৃতি৷ মহৎ কাজের স্বীকৃতি না দিয়ে বিনায়ক সেনকে সারা জীবন জেলবন্দি করে রাখা অন্যায় অবিচার৷ বিচারের প্রহসন৷ বিনায়ক সেনের শাস্তি রদ করার আহ্বান জানিয়ে এবিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছে নিখিল ভারত খ্রিষ্টান কাউন্সিল৷

প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ