1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপে মিকি মাউস

আনাবেলে স্টেফেস/এসবি১৪ মে ২০১৫

মিকি মাউস ও ডোনাল্ড ডাকের মতো চরিত্র গোটা বিশ্বে অনেক মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রিয়৷ বয়স সেখানে কোনো বাধা নয়৷ কিন্তু ক’জন জানে যে, অ্যামেরিকার সুপারহিরোদের উপদ্রবে ডোনাল্ড ডাক নরওয়ে তথা ইউরোপেই চলে এসেছে?

https://p.dw.com/p/1FPbV
Mickey und Minnie Mouse Maus
ছবি: YOSHIKAZU TSUNO/AFP/Getty Images
চঞ্চল এই হাসটিকে বার বার জীবন্ত করে তোলেন আরিল্ড মিডটুন৷ তিনি নরওয়ের একমাত্র ডিজনি-আঁকিয়ে৷ সেখানকার সব ডোনাল্ড ডাক ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ তিনিই আঁকেন৷ চরিত্র ও গল্প সম্পর্কে নানা খুঁটিনাটি বিষয় তুলে ধরার কারণে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার কমিক-অনুরাগীদের কাছে তিনি বেশ বিখ্যাত৷ তিনি বলেন, ‘‘বছর দশেক আগে আমি হাসগুলি আঁকতে শুরু করেছিলাম৷ ডাকবার্গ-এ আমার প্রিয় চরিত্র হলো ডোনাল্ড ডাক৷ কারণ তার ব্যক্তিত্ব আসলে আমাদেরই ব্যক্তিত্বের সবচেয়ে খারাপ দিকগুলি তুলে ধরে৷ একই সঙ্গে যে চরিত্র আঁকতে আমার সবচেয়ে ভালো লাগে, সে হলো ‘মাগিকা ডে স্পেল'৷ তার যৌন আবেদন রয়েছে, বেশ বিপজ্জনক এবং তাকে আঁকার মজাই আলাদা৷''
Micky Maus-Figur
মিকি মাউসছবি: Getty Images
আরিল্ড সরাসরি ওয়াল্ট ডিজনি নয়, ‘এগমন্ট' প্রকাশকের হয়ে কাজ করেন৷ গত শতাব্দীর চল্লিশের দশক থেকে স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় তাদের লাইসেন্স রয়েছে৷ লেখক ক্নুট নেরুম এবং টোরমুড লকলিং অসলো শহরে প্রকাশনার দপ্তরে নিয়মিত আরিল্ড মিডটুন-এর সঙ্গে মিলিত হন৷ আরিল্ড বলেন, ‘‘সেরা ডোনাল্ড ডাক গল্প তৈরি করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি৷ সবচেয়ে ভালো ‘ডাক স্টোরি' বলাই আমাদের লক্ষ্য৷''
এভাবে তাঁরা ইউরোপীয় পাঠকদের রুচি অনুযায়ী গল্প তৈরি করছেন৷ একটি সংখ্যা তো শুধু আরিল্ড মিডটুন-কে নিয়ে তৈরি হয়েছে৷ বর্তমানে বেশিরভাগ ডোনাল্ড ডাক কমিক ইউরোপেই তৈরি হয়৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছুকাল এই সব কমিক পাওয়াই যেত না৷ ২০১৫ সাল থেকে সীমিত সংখ্যক কমিক বই সে দেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে৷
লেখক টোরমুড লকলিং বলেন, ‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুপারহিরোরাই বাজার দখল করে নিয়েছে৷ জানি না, এটা মার্কিন চিন্তাধারার কারণে কিনা৷ কারণ তারা পৃথিবীটাকে বাঁচাতে চায়, বড় ও শক্তিশালী হতে চায়৷ অন্যদিকে ইউরোপে আমরা দৈনন্দিন জীবনযাত্রা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকি৷''
অন্যদিকে ইউরোপে ডিজনি ক্লাসিক পাঠকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়৷ ইতিমধ্যে বেশিরভাগ গল্পই নরওয়ে থেকে আসছে৷ এগমন্ট প্রকাশনা সংস্থার আনিটা ট্ভেটেন বলেন, ‘‘নরওয়েতে এর একটা দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে৷ বাবা-মা থেকে শিশুদের হাতে তা তুলে দেওয়া হয়৷ এটা ডোনাল্ড ডাক ম্যাগাজিনের দুটি স্তরের মতো৷ একটি স্তরে শিশুদের জন্য হাস্যরসের খোরাক থাকে, অন্যটিতে থাকে বড়দের জন্য হাস্যরসের খোরাক৷''
আরিল্ড মিডটুন ইতিমধ্যে গল্পগুলির মধ্যে কিছুটা নরওয়েজীয় উপকথার উপাদান ব্যবহার করছেন৷ যেমন বজ্রদেবতা থর-এর গল্প৷ অথবা প্রেক্ষাপট হচ্ছে ল্যুবেক-এর মতো ইউরোপীয় শহর৷ ৫০ বছর বয়স্ক আরিল্ড-এর বাড়ি ব্যার্গেন শহরে৷ এখন তিনি অসলোর কাছে সন শহরে থাকেন৷ এখানকার শান্ত পরিবেশে তিনি আঁকার অনুপ্রেরণা পান৷ অবসর সময়ে তিনি প্রায়ই শহরের প্রাইমারি স্কুলে কর্মশালা পরিচালনা করেন৷ আরিল্ড মিডটুন বলেন, ‘‘আমি যখন এমন ওয়ার্কশপ করি, তখন সেখানে ডোনাল্ড ডাক আঁকা শেখাই না৷ ছবির মাধ্যমে যোগাযোগই এর মৌলিক বিষয়৷ তাছাড়া আমি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের গঠন নিয়ে কথা বলি – পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি৷ আসলে ডোনাল্ড ডাকের কমিকের মাধ্যমে বাচ্চাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা দারুণ ব্যাপার৷ তারপর তাদের কাছে জরুরি বিষয়গুলি তুলে ধরতে পারি৷''
তাঁর কমিকগুলির জনপ্রিয়তা দেখেই বোঝা যায়, এ কাজে তিনি সফল হচ্ছেন৷