মিডল অর্ডার চরম ব্যর্থ, শোচনীয় হার ভারতের
১৩ মার্চ ২০১১কোথায় ব্যর্থতা?
মিডলঅর্ডারের অর্থহীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন ধসই ভারতের এই পরাজয়ের কারণ৷ শচীন যেদিন খেলেন, সেদিন ভারতের পয়া দিন৷ শনিবারেও শচীন অসামান্য খেলেছেন৷ ১১১ রানের একটা অপরূপ ইনিংস উপহার দিয়ে মর্কেলের বলে ক্যাচ তুলে আউট হয়ে শচীন ফেরার পর আর ধরে রাখতে পারেনি ভারত কোন কিছুই৷ শচীন ছাড়া সেহবাগের ৭৩ রান আর গৌতম গম্ভীরের ৬৯৷ ভারতের ইনিংসের বাকিটা ছিল শুধুই আসা যাওয়ার খেলা৷ উইকেট পতনের হিসেব দেখলেই সেটা স্পষ্ট হবে৷ ভারত প্রথম উইকেট হারায় ১৪২ রানে৷ এরপর দ্বিতীয় উইকেটটি ছিল শচীনের৷ তিনি আউট হন দলের ২৬৭ রানের মাথায়৷ তারপর থেকে মাত্র ২৯ রানের মধ্যেই মুড়িয়ে যায় ভারতের ইনিংস৷ স্টেইন একাই ৫০ রান দিয়ে ৫টি উইকেট তুলে নেন৷ বাকি পাঁচটা উইকেট ভাগ করে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার মর্কেল, কালিস, পিটারসন আর দু প্লেসি৷
নাগপুরের ব্যাটিং পিচে ২৯৬ রান কোন চ্যালেঞ্জই নয়
বাস্তবিকই তাই৷ তারপরেও কিছু হতে পারত যদি ভারতীয় বোলিং সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারত ইনিংসে৷ দিনরাতের খেলায় পরে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকা অতীতেও বড় রানের চ্যালেঞ্জ টপকেছে৷ তাদের ইনিংসের শুরুতে হাশিম আমলা আর জ্যাক কালিস শুরুতেই ভালো ব্যাটিং করে চমৎকার বুনে দিয়ে যান বিজয়ের বীজ৷ বাকি কাজটা করে দেন টেল এন্ডাররা৷ দেখবার মত ব্যাটিং করে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার নয় নম্বর ব্যাটসম্যান রবিন পিটারসন পর্যন্ত৷ শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ১৩ রান৷ পিটারসন অবলীলায় চার ছয় মেরে রানটা তুলে নিলেন৷ চাপের মধ্যে পড়ার কোন লক্ষণই দেখা গেল না এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত ‘চোকার' বলে যাদের বিদ্রুপ করা হচ্ছিল, সেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে৷ বরং শনিবারের পর চোকার যদি কাউকে বলা যায়, তাহলে বলা উচিত ভারতীয় দলকেই৷ যার মধ্যে ব্যাটিং-এ লিটল মাস্টার শচীন আর বোলিং-এ হরভজন সিং - এই নাম দুটো বাদ দিতে হবে৷ কারণ হরভজন এদিন একাই তিনটি প্রয়োজনীয় উইকেট তুলে বেশ ছন্দে ফিরেছেন৷
কোয়ার্টার ফাইনালের রাস্তা এখনও খোলা ভারতের
রাস্তা খোলা৷ কারণ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বের ভারতের৷ কিন্তু তারপর আরও এগোতে গেলে ব্যাটিং-এর বাকি স্তম্ভদের সক্রিয় হতেই হবে৷ আর বোলিংটাকে করতেই হবে অনেক শক্তপোক্ত৷ এত ফাঁকফোঁকর থেকে গেলে ক্রিকেটের বিশ্বজনীন কিংবদন্তী শচীন রমেশ তেন্ডুলকরের ক্রিকেট জীবনের শেষ বিশ্বকাপেও বিশ্বকাপটাকে ছোঁয়ার স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে যাবে৷ একা শচীন আর কত করবেন? তাঁর ওপরে নির্ভরতা কবে কমবে ভারতীয় দলের? এ প্রশ্নগুলো কিন্তু চারদিকেই শোনা যাচ্ছে৷ অন্তত শনিবারের নাগপুরের পর তো বটেই!
প্রতিবেদন : সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী