ভোটগ্রহণ শুরু মিশরে
২৬ মে ২০১৪বছর তিনেক আগে হোসনি মুবারকের পতনের পর থেকেই মিশরের রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটছে না৷ সামরিক শাসন, সাধারণ নির্বাচন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, আবার সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ – একের পর এক ঘটনা মিশরের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে৷ ২০১১ সাল থেকে সাতবার নির্বাচন ও গণভোট সত্ত্বেও দেশে শান্তি আসেনি৷ এবার সামরিক নেতা আবদেল ফাতাহ আল সিসি উর্দি ছেড়ে বেসামরিক সাজে দেশের হাল ধরে রাখতে চান৷ তিনি গণতান্ত্রিক পথে আবার ক্ষমতা ধরে রাখতে চান৷ সিসি নিজে অবশ্য দেশের প্রথম গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করেছেন৷ গত বছরের জুলাই ইসলামিক ব্রাদারহুড দলের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসিকে পদচ্যুত করার পর দেশে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল৷
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুরসির ব্রাদারহুড দল৷ তরুণদের কিছু বিপ্লবি গোষ্ঠীও সেই বয়কটের ডাকে সুর মিলিয়েছে৷ ১৯৫২ সালে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের পর থেকেই গেমাল আবদেল নাসের, আনওয়ার সাদাত ও হোসনি মুবারকের মতো সামরিক নেতারাই দেশ শাসন করেছেন৷ তাঁদের ধারণা, লোক-দেখানো বৈধতা নিয়ে এবার মুরসি দেশের আগামী স্বৈরাচারী শাসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চলেছেন৷ ফলে দুই দিনের ভোটগ্রহণ পর্বে সিসি-র একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী বামপন্থি দলের হামদিন সাবাহি৷ উল্লেখ্য, চলতি বছরই মিশরে আবার সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা৷
সিসি নিজেও মনে করেন না, মিশর এখনো পুরোপুরি গণতন্ত্রের জন্য প্রস্তুত৷ তাঁর মতে, দেশে ‘আসল গণতন্ত্র' আসতে কয়েক দশক সময় লেগে যাবে৷ তবে তিনি ভোটারদের বিশাল সংখ্যায় ভোট দিতে উৎসাহ দিয়েছেন৷ তিনি ইসলামিক ব্রাদারহুড-কে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করার অঙ্গীকারও করেছেন৷ উল্লেখ্য, ব্রাদারহুড-কে সন্ত্রাসবাদী দল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে৷
এই পরিস্থিতিতে ভোটাররা ‘শক্তিশালী নেতা' হিসেবে সিসি-কেই বেছে নেবেন – এমন ইঙ্গিতই স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ দেশের বেহাল অবস্থা সামাল দিতে আপাতত এ রকম মানুষের উপরেই ভরসা করা ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ কিছু আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর পর্যবেক্ষক ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করছেন৷
এসবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স, এপি)