1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিশরে ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আশঙ্কা

১৫ মে ২০১১

কপটিক খ্রীষ্টানদের সঙ্গে মুসলিমদের সংঘাত যেন হঠাতই মিশরের সদ্য অর্জিত স্বাধীনতার উপর ছায়া ফেলেছে৷ গত সপ্তাহের দাঙ্গায় ১৫ জন নিহত হবার পর, এই সপ্তাহান্তে আবার দু'জন নিহত এবং অন্তত ৬০ জন আহত হবার কথা শোনা যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/11GQl
সম্প্রতি দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে চলেছেছবি: dapd

বিরোধটা বাঁধল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় সাধারণত যেমন হয়ে থাকে, সেই ভাবে, কোনো তুচ্ছ বচসা থেকে৷ ৭ই মে যাবৎ কপটিক খ্রীষ্টানরা কায়রোর সরকারি টেলিভিশন ভবনটির সামনে ধরনা দিয়ে বসে আছে৷ সেখানে এক তরুণ মুসলিমের সঙ্গে কপটিক খ্রীষ্টানদের বচসা বাঁধে৷ মুসলিম তরুণটি পরে তার সাথীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে ফিরে আসে এবং একটি শিকারের রাইফেল থেকে গুলি চালাতে শুরু করে৷ তারপর পুলিশ, কাঁদানে গ্যাস, ধরপাকড়, এ'সবই হয়েছে৷

কপটিক খ্রীষ্টানদের প্রধান আজ ধরনা প্রত্যাহার করার ডাক দিয়েছেন৷ পোপ তৃতীয় শেনুদা'র বক্তব্য হল: অন্যান্য ধরণের মানুষরা কপ্টদের বিক্ষোভের মধ্যে ঢুকে পড়েছে৷ এবং তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কপ্টরাই৷ কাজেই তাদের এই ধরনা বন্ধ করা উচিত৷

Flash-Galerie Ägypten Gewalt zwischen Christen und Moslems in Kairo
কায়রোয় কপ্টদের বিক্ষোভ সমাবেশছবি: dapd

আট কোটি মানুষের দেশ মিশরে কপ্টরা তো প্রায় আশি লক্ষ৷ তাদের অভিযোগ হল, তাদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে, এবং তাদের বার বার সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার হতে হয়েছে৷ তবে গত সপ্তাহের ঘটনাটা কিছুটা গোলমেলে ছিল৷ সেবার মুসলিমরা কায়রোর একটি কপটিক গির্জা ঘেরাও করেছিল এই বলে যে, সেখানে নাকি এক মুসলিম মহিলাকে আটকে রাখা হয়েছে৷ মহিলা নাকি আদতে খ্রীস্টান, কিন্তু পরে ইসলামে দীক্ষিত হয়ে নিজের খ্রীস্টান স্বামীকে ছেড়ে এক মুসলিমকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন৷ তা থেকেই দু-দু'টো গির্জা এবং তিনটে ফ্ল্যাটবাড়ি পুড়ল৷

মিশরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা মাঝেমধ্যেই চরমে ওঠার উপক্রম করে৷ এবং তার ফল যে কী হতে পারে, তা'ও কারো অজ্ঞাত নয়৷ কাজেই সেনাবাহিনী গত সপ্তাহে দু'শ'র বেশি দাঙ্গাকারিকে গ্রেপ্তার করেছে এবং এ'ও বলেছে যে, তাদের শীঘ্রই বিচার করা হবে৷

Ägypten Gewalt zwischen Christen und Moslems in Kairo
সংখ্যালঘু হিসেবে বৈষম্যের হাত থেকে মুক্তি চায় কপ্টরাছবি: AP

সেটা প্রশাসনিক, আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপার৷ কিন্তু শুক্রবার কায়রোর সুবিখ্যাত তাহরির চত্বরে জাতীয় ঐক্যের সমাবেশ ব্যর্থই হয়েছে, বলা চলে৷ সেখানে এক বক্তা বলেছেন, ইমবাদায় গির্জা আক্রমণ করা আর জেরুসালেমে মসজিদ আক্রমণ করা এক ব্যাপার৷ মঞ্চের সামনে একটি বড় ব্যানারে লেখা ছিল, ‘জাতীয় ঐক্য', আবার ‘ফিলিস্তিনি সম্প্রীতি'৷ সমবেত জনতার কারো হাতে ছিল ক্রুশ, কারো হাতে ফিলিস্তিনি পতাকা৷ কিন্তু এই প্রতীকি ইঙ্গিতে কোনো লাভ হয়নি, কেননা অধিকাংশ কপটিক খ্রীস্টান তাহরির চত্বরে না গিয়ে টেলিভিশন ভবনের সামনে ধরনায় গেছে৷

অর্থাৎ বিভেদটাকে মধ্যপ্রাচ্য সংঘাতের বৃহত্তর পটভূমিতেও দেখা যেতে পারে৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন