মিস্টার অ্যান্ড মিসেস বেকহ্যাম

স্পাইস গার্লস-এর একটি ভিডিও দেখে ডেভিড বলেছিলেন, যদি কাউকে বিয়ে করি, তবে ঐ মেয়েটাকে৷ ঘটেও তাই, ১৯৯৯ সালে৷ ডেভিডের গোটা দু’য়েক পরকীয়া প্রেম ভিক্টোরিয়া নিজগুণে মার্জনা করে দিয়েছেন৷ এছাড়া তিনি ঐ হ্যান্ডসাম ফুটবলারটিকে ধরে পুরুষদের এক সুপারমডেলে পরিণত করেছেন – আর নিজে হয়েছেন ফ্যাশন ডিজাইনার৷

বেকহ্যামরা যাকে বলে কিনা একটি ‘গ্ল্যামার কাপল’৷ তবুও তারা একটি ‘সাধারণ’ ফ্যামিলি৷ ভিক্টোরিয়া তিন ছেলে আর এক মেয়ের জন্ম দিয়েছেন, অথচ তাঁকে দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই৷ ব্রুকলিন, রোমিও, ক্রুজ আর হার্পার, চার সন্তানের নাম বেক-এর শরীরে উলকি করা আছে৷ পারিবারিক জীবন বলতে বাবার সাথে শপিং, মার সাথে ফ্যাশন শো-তে যাওয়া, নয়ত টেলিভিশনে বাস্কেটবল দেখা বা মেলায় যাওয়া – আর সর্বত্র পাপারাৎসিদের উৎপাত সহ্য করা৷

‘বেকস’এর পেটানো শরীরে ৩২টি উলকি আছে – তিনি নিজেই একটি টক শো’তে বলেছেন৷ তার মধ্যে তাঁর প্রিয় জার্সির নম্বরটিও পড়ে: সাত নম্বর৷ এই তো সেদিন এক টক শো থেকে জানা গেল যে, ভিক্টোরিয়া দৃশ্যত নিজেই জানেন না, বেকস-এর উলকিগুলো ঠিক কোথায়!

বেকহ্যামের ব্যক্তিগত সম্পত্তির মূল্য হলো ৩০ কোটি ইউরো, অর্থাৎ তিনি মেসি কিংবা রোনাল্ডোর চেয়ে ধনি৷ ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে ১১৫ বার মাঠে নেমে ১৭টি গোল করেছেন৷ তাঁর ফুটবল-পদযুগল বীমা করা আছে তিন কোটি দশ লক্ষ ইউরোতে৷ এক বিশ্বকাপ ছাড়া ফুটবলের বাকি সব খেতাব জিতেছেন৷

বেকস ১৮২ সেন্টিমিটার লম্বা আর ওজনে ৭৪ কিলো৷ পেপসি, জিলেট আর এইচঅ্যান্ডএম-এর মতো বড় বড় কোম্পানির বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে দেখা গেছে তাঁকে৷ ছবিতে তিনি আর্মানি-র হয়ে পোজ করছেন৷

ভিক্টোরিয়ার ট্রেডমার্ক হলো তাঁর গম্ভীর মুখ৷ ক্ষীণকটি, নিন্দুকেরা বলে একটু বেশি ক্ষীণ৷ ভিক্টোরিয়া বলেন তিনি রোগাশোগা, ছিমছাম বটে, কিন্তু সেটা বিভিন্ন ডায়েট ও খেলাধুলার কল্যাণে – তবে তিনি অ্যানোরেক্সিক নন৷ তাঁর রোগা থাকতেই ভালো লাগে – যেমন তিনি ২০ বছর আগে স্পাইস গার্লসের আমলে ছিলেন৷

ভিক্টোরিয়া ছিলেন ইতিহাসের সফলতম গার্ল গ্রুপ স্পাইস গার্লস-এর সদস্য, ১৯৯৬ সালে ‘ওয়ানাবি’ হিট গানটি দিয়ে যাদের জয়যাত্রা শুরু হয়৷ পাঁচ কোটি ত্রিশ লক্ষ রেকর্ড বিক্রি হয়েছিল এই স্পাইস গার্লসদের৷ ভিক্টোরিয়ার ডাকনাম ছিল পশ স্পাইস, মানে বড়লোক স্পাইস৷ ২০০১ সালে ব্যান্ড মুলতুবি রেখে স্পাইস গার্লরা চেষ্টা করেন একাই সফল হতে – কিন্তু বৃথা৷

২০০৪ সালেই ভিক্টোরিয়া একটি ব্রিটিশ লেবেলের হয়ে জামাকাপড় ডিজাইন করতে শুরু করেন৷ ২০০৬ সালে আসে তাঁর নিজের লেবেল ‘ডিভিবি স্টাইল’৷ ২০১৪ সালে তাঁকে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহিলা ব্যবসায়ীর খেতাবটি দেওয়া হয়৷

২০০৭ সালেই যা ঘটে, ভিক্টোরিয়ার যতো কাজই থাক না কেন৷ স্পাইস গার্লস বেশ কয়েক মাস ধরে বিশ্বে জুড়ে একটি কনসার্ট টুর করেন৷ ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিক্সের চূড়ান্ত অনুষ্ঠানেও গান গেয়েছেন তাঁরা৷

ডেভিড বেকহ্যাম আজও বিশ্বের সবচেয়ে মনপসন্দ পুরুষ মডেলদের পর্যায়ে পড়েন৷ চল্লিশেও তাঁর শরীর নিখুঁত, নিজের কোম্পানির সুগন্ধ প্রোমোট করার জন্য যা দেখাতে বেকস-এর স্বভাবতই কোনো আপত্তি নেই৷