1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান মেয়েটি বাড়ি ফিরতে চায়

২৪ জুলাই ২০১৭

লিন্ডা নামের যে স্কুলের মেয়েটি জার্মানি থেকে পালিয়ে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর সঙ্গে যোগ দিয়েছিল, সে তার প্রথম সাক্ষাৎকারে বলেছে, সে শুধু বাড়ি ফিরতে চায়৷

https://p.dw.com/p/2h2xn
ছবি: Youtube

লিন্ডার বয়স আজ ১৬৷ এক বছর আগে সে ড্রেসডেনের কাছে একটি শহরে তার বাড়ি থেকে পালিয়ে ইরাকে যায় ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যোগ দিতে৷ রবিবারে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে লিন্ডা তার ঐ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অনুশোচনা প্রকাশ করেছে৷

লিন্ডাকে আপাতত বাগদাদের কাছে একটি সামরিক হাসপাতালে রাখা হয়েছে কেননা সে জনতার রোষের শিকার হতে পারে, এমন আশঙ্কা ছিল৷ জার্মানির স্যুডডয়চে সাইটুং পত্রিকা ও এনডিআর এবং ডাব্লিউডিআর টেলিভিশন সংস্থার হয়ে একজন ইরাকি রিপোর্টার লিন্ডার সঙ্গে কথা বলেন৷

Civilians struggle to survive after Mosul has been freed

‘‘আমি শুধু এখান থেকে চলে যেতে চাই'', লিন্ডা ডাব্লিউ. তার সাক্ষাৎকারে বলেছে: ‘‘আমি যুদ্ধ থেকে চলে যেতে চাই, এত সব অস্ত্রশস্ত্র থেকে, এই আওয়াজ থেকে৷''

লিন্ডা রিপোর্টারদের বলে যে, তুরস্ক ও সিরিয়া হয়ে ইরাক পৌঁছতে তার এক মাস সময় লেগেছিল৷ সে গিয়েছিল একজন আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করতে৷ সে মোসুলে যেতে চায়নি, কিন্তু তাকে জোর করে সেখানে পাঠানো হয় ও এর কিছু পরেই তার স্বামী যুদ্ধে প্রাণ হারায়৷

লিন্ডা বলে, সে টাইগ্রিস নদীর কাছে একটি ভূগর্ভস্থ ভাঁড়ারে লুকিয়ে ছিল, যেখানে ইরাকি সৈন্যরা তাকে খুঁজে পায় ও সংখ্যালঘু ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের সদস্য বলে ধরে নেয় – কেননা আইএস সদস্যরা প্রায়ই ইয়াজিদি মহিলাদের যৌন ক্রীতদাস হিসেবে ব্যবহার করত৷ তাকে ইয়াজিদি হিসেবে গণ্য করায় লিন্ডা দৃশ্যত রুষ্ট হয়ে বলে, ‘‘আমি জার্মান৷''

সহযোগিতা করতে রাজি

সাক্ষাৎকারের সময় অবধি লিন্ডাকে জেরা করা হয়নি, তবে সে ইরাকি রিপোর্টারটিকে বলে যে, সে তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত৷ একজন ইরাকি বিচারক প্রথমে লিন্ডার ডাক্তারি চিকিৎসার নির্দেশ দেন৷

লিন্ডা জানায় যে, সে ভালোই আছে, যদিও তার বাঁ উরুতে গোলার টুকরো লেগে একটি ক্ষত আছে ও ডান হাঁটুতে একটা চোট আছে৷ ‘‘একটা হেলিকপ্টার আক্রমণ থেকে ওটা হয়'', বলে লিন্ডা রিপোর্টারকে জানায়৷

সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারটি একজন সৈনিক, জনৈক মার্কিন প্যারামেডিক ও তদন্তকারী কৌঁসুলির উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়৷ দৃশ্যত লিন্ডাকে প্রথমে একটি সাধারণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেন যে, তারা লিন্ডার নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে পারবেন না, কেননা আইএস-এর শিকার হয়েছে, এমন অনেকের ঐ হাসপাতালেই চিকিৎসা চলেছে৷

আরেক জার্মান ‘আইএস পত্নী' ফতিমাকেও আহত অবস্থায়  ঐ হাসপাতালে রাখা হয়েছে৷ ফতিমা ১৫ বছর বয়সে চেচনিয়া থেকে অস্ট্রিয়ায় পালায় ও মোগামেদ নামের এক জার্মান নাগরিককে বিবাহ করে৷ পরে উভয়ে তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে আইএস-এ যোগদান করে ও মোসুল যাত্রা করে৷ ফতিমা ইরাকি রিপোর্টারটিকে বলে যে, তার স্বামী বেশ কয়েক মাস আগেই নিহত হয়েছে ও মিত্রজোটের একটি বিমান আক্রমণের পর তার সন্তানদেরও কোনো খোঁজখবর নেই৷

লিন্ডার ভবিষ্যৎ

লিন্ডার বোন মিরিয়াম রিপোর্টারদের বলেছেন, লিন্ডা যে বেঁচে আছে, তাতেই তিনি সুখি৷ শনিবার জার্মান সরকারি কৌঁসুলি লোরেনৎস হাজে নিশ্চিত করেন যে, লিন্ডাকে ইরাকে খুঁজে পাওয়া গেছে ও বাগদাদের জার্মান কনস্যুলেটের তরফ থেকে তাকে সাহায্য করে হচ্ছে৷

লোরেনৎস বলেন, লিন্ডার ইরাকে বিচার হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে, যেক্ষেত্রে তাকে সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে৷ অথবা বিদেশি হিসেবে লিন্ডাকে ইরাক থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে৷

অ্যালিস্টেয়ার ওয়াল্শ/এসি