1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যাদের বাঁচানো প্রয়োজন

মিশায়েল আল্টেনহেনে/এসি৫ মে ২০১৫

সংরক্ষিত অরণ্যে বেআইনি শিকার, জীবজন্তুর চোরাচালান: কম্বোডিয়ায় এই ক্যানসার রোধে কাজ করছেন এক দল মানুষ৷ গভীর জঙ্গলের মধ্যে তাদের ‘নম তামাও' উদ্ধার কেন্দ্র৷

https://p.dw.com/p/1FJfh
Feldhase Wildtier des Jahres 2015
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Stratenschulte

হানা দেওয়ার আগে শেষবার শলা-পরামর্শ চলছে৷ পুলিশ আর বন বিভাগের কর্মকর্তারা তল্লাশি চালাবেন কম্বোডিয়ার এক প্রত্যন্ত গ্রামে৷ এখানকার বাসিন্দারা বেআইনিভাবে শিকার করা বন্য জীবজন্তুর মাংস বিক্রি করে বলে খবর আছে৷

‘ওয়াইল্ডলাইফ ব়্যাপিড রেস্কিউ' নামের দলটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের কাজে দ্রুত প্রতিক্রিয়া বাহিনী৷ দলের ১২ জন সশস্ত্র সদস্যের কর্মক্ষেত্র গোটা কম্বোডিয়া, যেখানেই বেআইনিভাবে বন্যপ্রাণী পাচার কিংবা শিকার করা হচ্ছে, সেখানে৷

হানা দিয়ে প্রতিবারই কিছু না কিছু খুঁজে পাওয়া যায়৷ এবার যেমন ঝোপে-ঝাড়ে লুকিয়ে রাখা এই ‘কুল বক্স' ভর্তি জীবজন্তুর মাংস – কাছের জাতীয় উদ্যান, অর্থাৎ অভয়ারণ্যের নানা প্রাণী৷ কম্বোডিয়া-র বন বিভাগের ওয়াইল্ডলাইফ ব়্যাপিড রেস্কিউ টিমের সার রাও বলেন, ‘‘এটা একটা শজারু৷ এছাড়া আমরা ‘মাউস ডিয়ার', খরগোশ, অন্যান্য জীবজন্তুর মাংস বাজেয়াপ্ত করেছি৷ এই চোরাই শিকার বন্ধ করা বিশেষভাবে জরুরি৷ চারপাশের জঙ্গলে আর শিকার বলে প্রায় কিছু বাকি নেই৷ এমনকি সাধারণ, সুপরিচিত প্রাণীগুলিও উধাও হচ্ছে৷''

কম্বোডিয়ার জীববৈচিত্র্য বিশেষভাবে বিপন্ন হচ্ছে বিরল প্রাণীদের নিয়ে বেআইনি ব্যবসার ফলে – যার সবচেয়ে বড় গ্রাহক হল চীন৷ স্থানীয় মানুষদের দারিদ্র্যের সুবিধা নিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছে চোরাচালানকারীরা৷ কিন্তু তাদের উপরে যারা আছে, তাদের গায়ে হাত দেবার উপায় নেই পুলিশ আর বন বিভাগের কর্মচারীদের৷ সার রাও বলেন, ‘‘আমাদের টিম প্রধানত থাইল্যান্ড আর ভিয়েতনামের সীমান্ত অঞ্চলে কাজ করে – চীন অভিমুখে চোরাপথের রাস্তা হল এই সীমান্ত৷ কেউটে সাপ, কাছিম কিংবা ভল্লুক – সব কিছুই ওষুধ অথবা সুখাদ্য হিসেবে এই সীমান্ত দিয়ে পাচার করা হয়৷''

সুবিধাভোগী

জঙ্গলের মধ্যে দু'হাজার চারশো হেক্টর এলাকা জুড়ে একটি রেস্কিউ স্টেশন তৈরি করা হয়েছে: বন্যপ্রাণীদের বেআইনি চোরাচালান থেকে যে সব জীবজন্তু উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের রাখা হয় এই কেন্দ্রে৷ ‘ওয়াইল্ডলাইফ অ্যালায়েন্স' বা ‘বন্যপ্রাণী জোটের' কর্মীরা এখানে প্রায় বারো'শ প্রাণীর দেখাশোনা করেন৷ বাজেয়াপ্ত করার পর জন্তুজানোয়ারদের এই উদ্ধার কেন্দ্রে পাঠানো হয়৷

এশিয়ায় এ রকম কেন্দ্র খুব বেশি নেই৷ প্রায় একশো ধরনের জীবজন্তু রাখা রয়েছে এই কেন্দ্রে৷ বন্যপ্রাণী ত্রাণ ও পরিচর্যা কর্মসূচির পরিচালক নিক মার্ক্স বললেন, ‘‘সেরাউ জীবটিকে নিয়ে সমস্যা হল, চীনে ওষুধ কিংবা খাদ্য হিসেবে এর অনেক দাম পাওয়া যায়৷ সেই কারণে যথেচ্ছ শিকার করা হয়, কাজেই তাদের সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে৷ সেরাউ এক ধরনের ছাগল, ওরা লবণ খেতে খুব ভালোবাসে, চেটে চেটে লবণ খায়৷ বন্যপ্রাণীর বেআইনি চোরাচালান যে কতটা বিপজ্জনক, এই সেরাউ-রা তার প্রমাণ৷ চোরাচালানের ফলে শুধু সেরাউ নয়, আরো অনেক পরিচিত প্রাণী বিলুপ্ত হতে চলেছে৷''

‘নম তামাও'

পঞ্চাশ জনের বেশি পরিচারক ও পশুচিকিৎসক ‘নম তামাও'-তে কাজ করেন৷ কেন্দ্রটির অর্থসংস্থান হয় সরকার ও অনুদান থেকে৷ লক্ষ্য হল, কালে এই জীবজন্তুদের আবার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া৷ নিক মার্ক্স গত ১৩ বছর ধরে এই কাজ করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রায়ই আমরা এমন সব জন্তুজানোয়ার পাই, যারা খুবই অসুস্থ কিংবা আহত – যেমন এই ছোট্ট জীবটি৷ ওর মাথায় একটা বীভৎস কামড়ের দাগ আছে আর ওর বাঁ চোখটা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে৷ এখন ভালো হয়ে উঠছে৷ এখানকার দারুণ পরিচর্যা আর চিকিৎসার ফলে সব আশঙ্কা সত্ত্বেও ও বেঁচে উঠেছে৷''

ছৌক হাতিটি যখন এখানে আসে, তখন তার বয়স ছিল মাত্র এক বছর৷ সামনের পায়ে চোরাই ফাঁসের তার কেটে বসে যাওয়ার ফলে পায়ের একাংশ বাদ দিতে হয়েছিল৷ আজ সে প্রতিদিন তার নকল পা বদলানোর সময় নিজেই পা তুলে দাঁড়িয়ে থাকে৷ তবে ছৌক-কে তার বাকি জীবন এই উদ্ধার কেন্দ্রেই কাটাতে হবে৷

নিক মার্ক্স কিন্তু তাঁর রোগী অথবা পোষ্যদের আবার মুক্ত প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দিতে চান৷ তাঁর সর্বাধুনিক প্রকল্প হল গ্রে গিবন নামের বানরদের নিয়ে – একটি বিশেষভাবে বিপন্ন প্রজাতি৷ ধীরে ধীরে এই গিবন-দের খোলা জঙ্গলে স্বাধীন জীবনের জন্য তৈরি করা হচ্ছে, যেহেতু মার্কস ও তাঁর সহযোগীরা কোনোদিনই আশা ছাড়েন না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান