1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যেখানে বেটোফেন কুকুর আর মাইকেলেঞ্জেলো ভাইরাস

১৮ আগস্ট ২০১০

লুডভিশ ফান বেটোফেন, কে না চেনে তাকে, অন্তত যারা সঙ্গীতানুরাগী৷ বেটোফেন কে ছিলেন – এই প্রশ্ন করে যদি উত্তর শুনতে হয়, এটি একটি কুকুরের নাম, তাহলে কেমন লাগবে?

https://p.dw.com/p/OqBd
বেটোফেন যদি জানতেন...ছবি: picture-alliance/ dpa / DW Montage

ভাল না লাগলেও এটা শুনতে হচ্ছে অ্যামেরিকার কলেজের পরীক্ষকদের, খাতা কাটতে গিয়ে৷ ২০১৪ সালে যে সব মার্কিন তরুণ স্নাতক ডিগ্রি পাবে, তাদের জ্ঞানের এই হাল৷

সুরস্রষ্টা বেটোফেনের যেখানে এই অবস্থা, সেখানে চিত্রশিল্পী মাইকেলেঞ্জেলোর কী দশা হতে পারে, তা অনুমান করা কঠিন কিছু নয়৷ ইতালির এই চিত্রকরের শিল্পকর্মের সঙ্গে পরিচিত না হলেও নামটি অন্তত চেনা চেনা ঠেকেছে অ্যামেরিকান তরুণদের কাছে৷ তাই অনেকে উত্তর দিয়েছে, ইহা একটি কম্পিউটার ভাইরাসের নাম৷ এই হল হালের মার্কিন শিক্ষার্থীদের দশা৷

উদ্বেগজনক এই চিত্রের দেখা মেলেছে সম্প্রতি – উইসকনসিনের বেলোইট কলেজের অধ্যাপক টম ম্যাকব্রাইড ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা রন নেইফ-এর তৈরি করা একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর৷ কলেজ পাড়ি দিয়ে যে সব তরুণরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকবে, তাদের সম্পর্কে একটি ধারণা দেওয়াই এই প্রতিবেদনের লক্ষ্য৷ আর তাঁরা যে কোনো সুখবর শোনাতে পারছেন না, তা এখন স্পষ্ট৷

Michelangelo Portraitbild
মাইকেলেঞ্জেলো কি না ভাইরাস!ছবি: AP

চেকোস্লোভাকিয়া ভেঙে দুটি দেশ হয়েছে সত্যি, তবে এক সময় যে একটি দেশই ছিল, তা অনেক মার্কিন তরুণেরই অজানা৷ আর ইরান-ইরাক যে কখনো যুদ্ধে জড়িয়েছিল, তা তাদের মাথায়ই নেই৷ তাদের চোখে জার্মানি সব সময় একটি দেশই ছিল৷ বর্তমান পোপের বাইরে তারা শুধু সাবেক পোপ দ্বিতীয় জন পলের কথাই জানে৷ বসনিয়া-হ্যারৎসোগোভিনার রাজধানী সারাইয়েভো তাদের কাছে একটি যুদ্ধক্ষেত্রের নাম৷ সেখানে যে একবার শীতকালীন অলিম্পিকের আসর বসেছিল, তা তাদের কাছে অজানা অধ্যায়৷ সলিডারিটি শব্দটি ব্যবহারের সময় কেন মাঝে মাঝে শুরুতে বড় হাতের ‘এস' বসে, তা নিয়ে বিভ্রান্ত এই তরুণরা৷ তাদের জানা নেই, সোভিয়েত ইউনিয়নসহ সাবেক কমিউনিস্ট দেশগুলোর সংযুক্ত ট্রেড ইউনিয়নের নাম ছিল ‘সলিডারিটি'৷ ও' হেনরির লেখার পর থেকে ‘বানানা রিপাবলিক' বলতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বোঝানো হয় সেই দেশটি, যেটি রাজনৈতিকভাবে অস্থির৷ কিন্তু এখন বানানা রিপাবলিক বলতে কেউ যদি বোঝে কলাপ্রধান দেশ, তাহলে কেমন লাগবে শুনতে?

এ তো গেল রাজনীতির কথা৷ খেলার কথায় যদি আসি, তাহলেও অবস্থাটা খুব বেশি বদলাচ্ছে না৷ জন ম্যাকেনরো কিংবদন্তি টেনিস তারকা হতে পারেন, কিন্তু হালের মার্কিন তরুণদের কাছে তাঁর পরিচিতি হলো, চমৎকার একজন টিভি তারকা৷ ব্যাপারটি আসলেই চমৎকার৷ নিজের দেশেই ম্যাকনরোর এই অবস্থা৷

বিনোদন জগতের দিকে যদি তাকাই, তাহলে দেখি মার্কিন তরুণরা এই জগতে টেনে এনেছে ডাচেস অফ ইয়র্ক ফার্গিকে৷ মার্কিন পপতারকা ফার্গি যে আলাদা কেউ, তা নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় তাদের নেই৷ তেমনি ‘ডার্টি হ্যারি'র চরিত্রে রূপায়ণ করে ক্লিন্ট ইস্টউড যে খ্যাতি কুড়িয়েছিন, তা হারিয়ে গেছে তাঁর চলচ্চিত্র নির্মাতা পরিচয়ের আড়ালে, অন্তত মার্কিন তরুণদের কাছে৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন