রসরাজের ফটোশপে কাজ করার মতো দক্ষতা নেই | পাঠক ভাবনা | DW | 09.11.2016
  1. Inhalt
  2. Navigation
  3. Weitere Inhalte
  4. Metanavigation
  5. Suche
  6. Choose from 30 Languages

মতামত

রসরাজের ফটোশপে কাজ করার মতো দক্ষতা নেই

নাসিরনগরে রসরাজ দাস আপত্তিকর ফেসবুক পোস্ট দেওয়ার কারণে হিন্দুদের ওপর হামলা চলছে  এমন খবর নাকচ করেছে পুলিশ৷ তাদের কথায়, ফেসবুক পোস্টটি তার নিজের নয়৷ তারপরও ডয়চে ভেলের অনেক পাঠকবন্ধু এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন৷

সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকও পুলিশের সঙ্গে একমত৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ফোর-ফাইভ ক্লাস পাস ঐ যুবকের ফটোশপে কাজ করার মতো দক্ষতা নাই৷''

তবে এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বন্ধু আবদুল্লাহ আল-হাসান লিখেছেন, ‘‘ফটোশপ করার জন্য শিক্ষা লাগে না, নীলক্ষেতে যারা কম্পিউটারে ফটোশপের কাজ করে তারা কেউ ক্লাস থ্রি বা ফোর-এর বেশি পড়েনি৷ তার চেয়ে বড় কথা আইডি যার দায়-দায়িত্বও তার৷ যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম সে ফটোশপের কাজ সে পারে না৷ কিন্তু সে কি অন্য কোথা থেকে এডিট করা ছবি পোস্ট করতে পারে না?

নাসিরনগরে রসরাজ দাস সম্পর্কে প্রায় একই মত পোষণ করেন মোসাদ্দেক হোসেন, ‘‘বর্তমানে ফটো এডিট করতে স্কুলে যাওয়া লাগে না৷ যারা কোনোদিন স্কুলে যায়নি, তারা দু-একবার দেখলেই অ্যান্ড্রয়েড সেট দিয়ে একটি ছবির মাথার উপর আর একটি ছবি বসিয়ে দিতে পারে৷ আমাদের দেশের অনেক গুণীজন অ্যান্ড্রয়েড বা মোবাইল সেট সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ, তাই উনারা অতি গুণীজন হয়েও এরকম অনভিজ্ঞ মন্তব্য করেন৷''

অন্যদিকে ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ মতামত প্রকাশ করেছেন পাঠক মতিবাবু মলাকর এভাবে, ‘‘আমার ধর্ম কত মহান তা নির্ভর করবে অন্য ধর্মের মানুষের সাথে আমরা কেমন আচরণ করি তার উপর৷ ধর্ম নিয়ে উসকানি দেওয়া এবং নাসিরনগরে হিন্দুদের শত শত ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ প্রসঙ্গে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা এত বড় পরিসরে না ঘটলেও পারতো৷ প্রতিবাদের ভাষাটা সাম্প্রদায়িক ভাবে না হয়ে ব্যক্তি কেন্দ্রিক হলে সবচেয়ে ভালো হতো৷ যে হিন্দু লোকটি উসকানিমূলক ছবি ফেসবুকে দিয়েছিল সে তো আবশ্যই অপরাধী, এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করার কোনো কারণ নেই৷ সবাই অপরাধীকে কঠোর সাজা দিতে পারতো৷ এমন সাজা যা দেখে পরবর্তিতে কেউ এমন কাজ করতে সাহস পাবে না৷ কিন্তু কয়েকটা কুলাঙ্গারদের জন্য যেমন ইসলাম ধর্মের বদনাম হয় তেমনি কয়েকটা কুলাঙ্গারদের জন্য হিন্দু ধর্মের লোকরাও বিপদে পড়ে৷''

তবে একটি মুসলিম প্রধান দেশে এমন ঝুঁকিপূর্ণ একটি ছবি কেউ নিজের ফেসবুকে দিতে পারে তা দেখে খুবই অবাক হয়েছেন শেখ রিয়াদ মোহাম্মদ নূর৷

ওদিকে ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু আকাশ ইকবাল মনে করেন, বাংলাদেশে আইন থাকলেও তার সঠিক প্রয়োগ নেই৷ আর সে কথাটাই তিনি তুলে ধরেছেন তাঁর বক্তব্যে৷ লিখেছেন, ‘‘কী বলবো, বলার কিছু নেই, তারপরও না বলে থাকতে পারি না৷ রসরাজ একজন জেলে৷ মাঠে, পুকুরে, ডোবায় ও নদীতে মাছ ধরে৷ শিক্ষায় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত৷ তার মধ্যে সে সংখ্যালঘু সনাতন ধর্মের৷ ৮৮ ভাগ মুসলিম প্রধান দেশে তার কিংবা কোনো হিন্দু নাগরিকের সাহস নেই যে মুসলিমদের নিয়ে কুটুক্তি করবে৷ আইন নাকি সবার জন্য সমান...৷ আসলে যার টাকা আছে তার জন্য আইন৷ যখন রসরাজের বিষয়টা প্রমাণিত হয়নি, ততক্ষণ সারা দেশের সকল মুসলিম তার বিপক্ষে তার ফাঁসি চেয়ে আন্দোলন করেছে৷ রসরাজের পুরো গ্রামের ৩০০ ঘর বাড়ি, ১৫০ মানুষকে মারধর করে আহত ও ১৫টি ধর্ম মন্দির ভেঙে ফেলে৷ তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি মামলাও করেছে৷ শুনলাম কোনো উকিল দাড়ায়নি ওর পক্ষে৷ আবার শুনলাম প্রধান আইন সমিতি তার পক্ষ নিয়েছে৷ তবে এখন কেন নিচ্ছে? আগে কোথায় ছিল? এখন তো কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা তা দেশের মানুষের কাছে প্রমাণিত৷''

সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

 

নির্বাচিত প্রতিবেদন