1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজনীতির ঈদ, নির্বাচনের ঈদ

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৪ জুন ২০১৭

২০১৯ সালের প্রথম দিকেই বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ নির্বাচন কমিশন এরইমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে৷ প্রস্তুতি আছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই৷ এবার বিএনপি নির্বাচনে যাবে বলেই আভাস পাওয়া যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/2fJx9
Bangladesh Fähre mit Passagieren
ছবি: Reuters/M. P Hossain

ঈদের পর জুলাই থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন৷ আর এই সংলাপ চলবে টানা নভেম্বর পর্যন্ত৷ গত ২৪ মে নির্বাচন কমিশন রোডম্যাপ ঘোষণা করে সংলাপের৷ আর তাতে তারা সাতটি বিষয়েকে সংলাপে অন্তর্ভূক্ত করেছে৷ সীমানা পুনঃনির্ধারণ, আইন সংস্কার, ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নতুন নিবন্ধন, ভোটকেন্দ্র, ইসির সক্ষমতা বাড়ানো ও সবার জন্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি - এগুলো হলো সংলাপের বিষয়৷ এবারের নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহার করা হবেনা৷ তাই রোডম্যাপে ইভিএম রাখা হয়নি৷ 

Badsa.mp3 - MP3-Stereo

নির্বাচন কমিশনের এই সংলাপে রাজনৈতিক দল ছাড়াও সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, পর্যবেক্ষকরাও অংশ নেবেন৷ শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখন নির্বাচনের হাওয়া৷ দেড় বছর সময় থাকলেও সব বড় দলই এখন থেকেই নির্বাচনের আগাম কাজ শুরু করে দিয়েছে৷ তাই এবারের ঈদ তাদের কাছে গণসংযোগ শুরুর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ৷

এদিকে, এবার পুরো রমজান মাসকে বিএনপি কাজে লাগিয়েছে৷ বিএনপি দলীয় সূত্র জানায় ইফতার পার্টিতে সমমনা দলগুলোকে দাওয়াত দেয়া, কূটনীতিকদের দাওয়াত দেয়া এরই অংশ৷ তারা এলাকায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে একই ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণসংযোগ করেছে৷ ঈদেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে৷ বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের নেতা-কর্মীদের বড় একটি অংশ এরইমধ্যে যার যার এলাকায় চলে গেছেন৷ শুধু নির্বাচনই টার্গেট নয়, আমাদের অনেক নেতা-কর্মী মামলা হামলার শিকার হয়েছেন তাদের পাশে দাড়ানোও আমাদের দায়িত্ব৷''

বিএনপি পুরো রমজান মাসজুড়েই সারাদেশে নানা প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছে৷ সাধারণ মানুষকে সহায়তা করা৷ ইফতার করানো এসব কাজ করেছে৷ এর বাইরে ঈদকে সামনে রেখে বড় ধরনের টার্গেটে নিয়েছে৷ তাই যারা সামনের নির্বাচনে মনোনয়ন চান বা আগে এমপি ছিলেন তারা এবার যার যার নির্বাচনী এলাকায়ই ঈদ করবেন৷ শামা ওবায়েদ বলেন, ‘‘ঈদে অনেক বেশি মানুষের সঙ্গে দেখা হয়৷ কথা বলার সুযোগ হয়৷ নেতা-কর্মীরা এই সুযোগকে কাজে লাগাবেন৷ আর এটাতো সব রাজনৈতিক দলই করে৷''

Wazed.mp3 - MP3-Stereo

তিনি বলেন, ‘‘আমার নির্বাচনি আসন ফরিদপুর-২৷ আমি রোজার মাসে বেশ কয়েকবার এলাকায় গিয়েছি৷ আর ঈদে এলাকায়ই থাকব৷''

আওয়ামী লীগ এরইমধ্যে প্রার্থী বাছাই শুরু করে দিয়েছে৷ কেন্দ্র থেকে প্রতি আসনে অন্ততঃ তিনজন করে সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাই করছেন তারা৷ গত নির্বাচনে যারা এমপি হয়েছেন তাদের একটি অংশ এখন দলীয় নজরদারিতে আছেন৷ তারা ইমেজের উন্নতি ঘটাতে না পারলে সামনের নির্বাচনে মনোনয়ন নাও পেতে পারেন৷ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক ওবায়দুল কাদের এরইমধ্যে বলেছেন বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্টে যাদের অবস্থা নেতিবাচক হবে তাদের মনোনয়ন দেয়া হবেনা৷ আর এরইমধ্যে এটা জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, এবার তরুণ নেতৃত্বের একটা বড় সুযোগ থাকবে৷ এসব কারণে এবার ঈদে আওয়ামী লীগের তৎপরতা অনেক বেশি থাকবে বলে মনে হচ্ছে৷

আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের দল থেকেই কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা আছে যে ঈদের সময় এমপি, মন্ত্রী এবং নেতাকর্মীরা যেন যার যার এলাকায় থাকেন৷ এরইমধ্যে অনেকেই এলাকায় চলে গেছেন৷ যারা এখনো যাননি তারও যাবেন৷''

তিনি বলেন, ‘‘এর পরের ঈদ হবে নির্বাচনের ঠিক আগে৷ তাই এবারের ঈদটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ৷ যারা নির্বাচিত হয়েছেন এবং মনোনয়ন ধরে রাখতে চান, যারা নতুন করে মনোনয়ন চান তারা সবাই এবার ঈদে নিজ নিজ এলাকাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন৷''

Hossain.mp3 - MP3-Stereo

তিনি আরো বলেন, ‘‘সামনের নির্বাচনে তরুণ নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেয়া হবে৷ তাই মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক শতাধিক নেতা যার যার এলাকায় রমজানে কাজ করেছেন৷ ঈদেও তারা জনসংযোগ করবেন৷''

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশা এরকমই একজন তরুণ নেতা৷ তার নির্বাচনী এলাকা পিরোজপুর-১৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি নিয়মিত এলাকায় যাই৷ এখনো এলাকায় আছি৷ ঈদও আমার এলাকায় করবো৷ আমি আমার দলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গেই ঈদ করব৷ আমি তাদের পাশেই থাকতে চাই৷''

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এই আসন থেকে আগামী নির্বাচনে আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী৷ আশা করি মনোনয়ন পাব৷''

Mazumdar.mp3 - MP3-Stereo

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জাতীয় পার্টিও তাদের নেতাদের এলাকায়ই ঈদ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে৷ এছাড়া জামায়াতসহ আরো অনেক রাজনৈতিক দল এবারের ঈদে আগামী নির্বাচনের জনসংযোগের সুযোগকে হাতছাড়া করবেনা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷

এদিকে, দক্ষিণের জেলা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সাংবাদিক দেবদাস মজুমদার ডয়চে ভেলেতে জানান, ‘‘এবার রোজার শুরু থেকেই বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা সক্রিয় ছিলেন৷ তারা ইফতার মাহফিল ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেন৷ এখন চলছে ঈদ সামগ্রী বিতরণ৷ তাদের টার্গেট সামনের নির্বাচন৷ আওয়ামী লীগ বা বিএনপি ছাড়াও ছোট ছোট রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও এখন এলাকায়৷ যারা এখনো আসেননি তারা ঈদের আগে চলে আসবেন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য