1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দলগুলির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৪ এপ্রিল ২০১৪

দুর্নীতি ইস্যুতে ভারতের রাজনৈতিক দলগুলির কথায় ও কাজে যে বিস্তর ফারাক, সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নেই তা স্পষ্ট৷ এ পর্যন্ত প্রকাশিত প্রার্থী তালিকায় বিজেপির ৩০ এবং কংগ্রেসের ২৮ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে আছে অভিযোগ৷

https://p.dw.com/p/1BbSM
Indien Zusammenstöße zwischen AAP- und BJP-Anhängern
ছবি: Reuters/UNI

দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলি সোচ্চার হলেও ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী তালিকার দিকে তাকালেই রাজনৈতিক দলগুলির বিশ্বাসযোগ্যতাকে দাঁড় করাবে প্রশ্নচিহ্ণের মুখে৷ এ পর্যন্ত প্রকাশিত প্রার্থী তালিকার মধ্যে বিজেপি-র ৩০ শতাংশ এবং কংগ্রেসের ২৮ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে গুরুতর ফৌজদারি মামলা ঝুলছে৷ যেমন, খুন, খুনের চেষ্টা, ডাকাতি, অপহরণ, নারী নিগ্রহ এবং আর্থিক অপরাধ৷ নির্বাচন কমিশনের কাছে দাখিল করা হলফনামা পরীক্ষা করে এ কথা জানিয়েছে জাতীয় ইলেকশন ওয়াচডগ এবং ডেমোক্র্যাটিক রিফর্ম অ্যাসোসিয়েশন নামের দুটি বেসরকারি সংস্থা৷

দাগি প্রার্থী হিসেবে প্রথমেই যাঁর নাম উঠে আসে তিনি আর কেউ নন, দক্ষিণী রাজ্য তামিলনাড়ুর ডিএমকে দলের প্রার্থী কংগ্রেস-জোট সরকারের প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ. রাজা৷ যিনি ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার টু-জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত – এমনটাই অভিযোগ৷ দিল্লির তিহাড় জেলে কয়েক মাস আটক থাকার পর জামিনে ছাড়া পান৷ ডিএমকে দলের আরেক প্রার্থী সাবেক টেলিকম মন্ত্রী দয়ানিধি মারান৷ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বেআইনিভাবে তাঁর এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের টিভি চ্যানেলকে হাইস্পিড টেলিফোন কানেকশন পাইয়ে দিয়েছিলেন৷ এইসব মামলা এখনো আদালতের বিচারাধীন৷ ডিএমকে দলের সর্বাধিনায়ক করুণানিধিকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর জবাব ‘‘এদের বিরুদ্ধে কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই৷ আদালতে এরা প্রমাণ করতে পারবেন এরা নির্দোষ৷''

একই উত্তর কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর৷ মুম্বই আদর্শ আবাসন কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত বলে মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অশোক চৌহানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও কংগ্রেস কেন তাঁকে প্রার্থী করলো, জিজ্ঞাসা করা হলে সোনিয়া গান্ধী বলেন, আইনে এমন কোনো সংস্থান নেই, যে তাঁকে প্রার্থী করা যাবেনা৷ দাগি প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস পড়েছে গভীর বিতর্কের মুখে৷ ঝাড়খণ্ড রাজ্যে তৃণমূল এমন চারজনকে মনোনয়ন দিয়েছে, যাঁরা এককালে মাওবাদীদের জোনাল কমান্ডার ছিলেন৷ এদের মধ্যে পালামৌ সংসদীয় আসনের তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে ঝুলছে ৫৩টি ফৌজদারি মামলা৷ এর মধ্যে কয়েকটি মারাত্মক৷ যেমন, বিস্ফোরণে নিরাপত্তা বাহিনীর ১৭ জনকে হত্যার অভিযোগ৷ ২০০৯ সালে জেলবন্দি থাকাকালীন ভোটে দাঁড়িয়ে তিনি অবশ্য জিতেছিলেন৷ ২০১১ সালে তাঁকে মুক্তি দেয়া হয়৷ ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবার তাঁকে টিকিট না দেয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস তাঁর ‘রবিনহুড' ইমেজ এবং জেতার সম্ভাবনা আঁচ করে দলে টেনে নেয়৷ ধানবাদ অঞ্চলের কয়লা মাফিয়া বলে যাঁর বদনাম আছে, এমন একজনকে ধানবাদ আসনে প্রার্থী করেছে তৃণমূল৷ বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, প্রচুর টাকার বিনিময়েই নাকি তাঁকে মনোনয়ন দেয়া হয়৷ মাওবাদীদের সঙ্গে তৃণমূলের গোপন যোগসূত্র রয়েছে, মাওবাদী নেতাকে মনোনয়ন দিয়ে সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিরোধীদের আরো অভিযোগ, মমতা পশ্চিম মেদিনীপুরের লালগড়ে গিয়ে গোপন বৈঠক করতেন মাওবাদীদের সঙ্গে৷ মমতার পাল্টা দাবি, এদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হয়নি৷ তা সত্ত্বেও মমতার সততায় এই অভিযোগ কালি ছেটাবে সন্দেহ নেই৷

উল্লেখ্য, আইনজীবী ও সমাজকর্মী লিলি টমাসের এক জনস্বার্থ মামলায় শীর্ষ আদালত ২০১৩ সালের জুলাই মাসে জন প্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৪) ধারা খারিজ করে রায় দেন যে, আইনসভার অভিযুক্ত সদস্যরা ছয় বছর ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না, উচ্চতর আদালতে আপীল করা সত্ত্বেও৷ এর ফলে গবাদি পশুর খাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত বিহারের সাংসদ লালু যাদবের সাংসদপদ বাতিল হয়ে যায়৷ সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, আর্থ-সামাজিক বৈষম্য এবং ক্ষমতার অসম সমীকরণ সমাজের গভীরে প্রোথিত আছে বলেই রাজনীতি দুর্বৃত্তায়ন এত ব্যাপক৷ দ্বিতীয়ত, বিশ্লেষকদের মতে, দাগি প্রার্থীদের ভোটে জেতার সম্ভাবনা দাগি নয় এমন প্রার্থীদের চেয়ে বেশি থাকে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য