1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রিও ডি জেনিরোর বস্তিতে মাদক চক্রের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান

২৬ নভেম্বর ২০১০

ব্রাজিলের পুলিশ কর্তৃপক্ষ রিও ডি জেনিরোর ভিলা ক্রুজেইরোতে মাদক সন্ত্রাস দমনের অভিযান সফল হয়েছে৷ তবে ড্রাগ চক্রের সদস্যদের সঙ্গে চলেছে তুমুল গোলাগুলি৷ নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৩৫৷

https://p.dw.com/p/QIv4
ব্রাজিলের পুলিশের অভিযানছবি: AP

গতকাল সন্ধ্যায় রিও ডি জেনেরোর একটি বস্তিতে পুলিশ মাদক পাচারকারী এবং সন্ত্রাসীদের আটক করতে অতর্কিতে হামলা চালায়৷ সাঁজোয়া গাড়ির বহর নিয়ে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই অভিযান চালানো হয়৷

হামলা শুরুর পরপরই পুরো এলাকা গোলাগুলির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে৷ নিরাপদ আশ্রয়ে পালাতে শুরু করে ভিলা ক্রুজেইরোর মানুষরা৷ ছয়জন এমওয়ানওয়ান থ্রি অফিসার পয়েন্ট ফিফটি ক্যালিবারের মেশিনগান নিয়ে এগিয়ে যান৷ রাতে পুলিশের মুখপাত্র রদ্রিগো অলিভেইরা ঘোষণা দেন,‘ভিলা ক্রুজেইরো এখন আমাদের দখলে৷' তবে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্কাবস্থায় রয়েছে৷

Brasilien / Rio / Drogen
সামরিক যান নিয়ে অভিযান চালায় পুলিশছবি: AP

এই অভিযানের জবাব দিতে মাদক সন্ত্রাসীরাও পাল্টা আক্রমণ চালায়৷ তারা বেশ কয়েকটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়, পুলিশচৌকিগুলোর ওপর গুলি চালায় তারা৷ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় রিও ডি জেনিরোর আকাশ৷

বেশ কিছু টেলিভিশনের হেলিকপ্টার খবর সংগ্রহ করতে আকাশে উড়তে থাকে৷ তারা গোলাগুলির বেশ কিছু দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করে৷ দেখানো হয়, বস্তির পেছনের পাহাড় থেকে অটোমেটিক রাইফেলের গুলি ছোঁড়া হচ্ছে আর এর হাত থেকে বাঁচতে অসংখ্য মানুষ গাড়ি বা মোটরসাইকেলে পালিয়ে যাচ্ছে৷

নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান হোসে বেল্টরাম জানান, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করেছি কিন্তু সবকিছু এখনো শেষ হয়নি৷ আমরা জিতেছি তা জোর দিয়ে এখনো বলা যাচ্ছে না৷ তিনি আরো জানান, বেশ কিছু লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, মাদক এবং অস্ত্র আটক করা হয়েছে তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হল আটককৃতদের এই এলাকা থেকে নিরাপদে বের করে নিয়ে যাওয়া৷ বলা প্রয়োজন, ভিলা ক্রুজেইরো হচ্ছে রিও ডি জেনিরোর সবচেয়ে বড় বস্তি৷

Brasilianische Polizei stürmt Armenviertel in Rio
গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরাছবি: AP

ব্রাজিলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরো আটশো জন পুলিশ এবং নিরাপত্তা কর্মী সহ দশটি অস্ত্রে সজ্জিত বহর নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন৷ এর সঙ্গে দেওয়া হয়েছে এয়ার ফোর্সের দুটি হেলিকপ্টার৷

এলাকার সাধারণ মানুষ পুরো ঘটনায় একেবারে হতবাক হয়ে যায়৷ ৪৪ বছর বয়স্ক একজন স্কুল প্রধান জানান, আমার জীবনে এ ধরণের ঘটনা আমি দেখিনি৷ তবে এর প্রয়োজন ছিল৷ অন্য কোন ভাবে মাদক পাচারকারীদের প্রতিরোধ করা সম্ভব হত না৷ ২৭ বছর বয়েসি একজন বার টেন্ডার জানান, আরো অনেকে মারা যাবে, কিন্তু তারপরেও আমি বলবো এখানে এতদিন ধরে যা চলছে তা পরিবর্তনের প্রয়োজন৷

গোটা এলাকা মাদক পাচারকারী এবং সন্ত্রাসীদের দখলে চলে যাওয়ার এই পরিস্থিতির জন্য কর্তৃপক্ষকেই অনেকে দায়ী করছে৷ তারা আশংকা প্রকাশ করে জানান, ব্রাজিলে চার বছরেরও কম সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্বকাল ফুটবল আর এর দু'বছর পর অলিম্পিক৷ আর এসময়ে এধরণের ঘটনা ঘটল৷

রিও ডি জেনিরোর জনপ্রিয় ফুটবল তারকা রোনাল্ডো তার টুইটার ব্লগে লিখেছেন, যে সব পরিবার তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছে, তাদের প্রতি রইল আমার গভীর সমবেদনা৷

পুলিশের এই অভিযানে প্রায় ১৮০ জনকে আটক করা হয়েছে৷ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রায় ৬০ টি গাড়ি এবং বাস৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক