1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রুমাল যখন রোগ ধরার ল্যাব

মার্টিন রিবে/এসবি২৭ জুন ২০১৬

রোগব্যাধি মানেই ডাক্তারের কাছে দৌড়ানো এবং সংক্রমণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ল্যাবে পরীক্ষা করানো৷ কিন্তু চটজলদি নিশ্চিত হতে পারলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব৷ জার্মান বিজ্ঞানীরা এক সহজ উপায়ে সেই সমস্যার সমাধান করতে চলেছেন৷

https://p.dw.com/p/1JE6u
Taschentuchlabor Fraunhofer IBMT EINSCHRÄNKUNG
ছবি: supiran.de

কারও শরীরে মাল্টিরেজিস্টেন্ট জীবাণুর সংক্রমণ হয়েছে কিনা, ল্যাবে পরীক্ষা করলেই সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়৷ অথবা সালমোনেলা, হুপিং কাশি, কলেরার মতো রোগ৷ তবে পরীক্ষার ফল পেতে কয়েক দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে৷ অর্থাৎ এই সময়কালে অসুস্থ রোগীর চিকিৎসা স্থগিত থাকে৷

সেই পরিস্থিতি বদলাতে চলেছে৷ ফ্রাউনহোফার ইনস্টটিটিউটের বিজ্ঞানীরা এমন এক দ্রুত পরীক্ষার পদ্ধতি সৃষ্টি করার কাজ করছেন, যার সাহায্যে কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিপজ্জনক প্যাথোজেন শনাক্ত করা সম্ভব৷ প্রোফেসর ফ্রাংক বিয়ার বলেন, ‘‘রুমালের মধ্যে এই ল্যাবের পেছনে প্রৃকৃতিকে নকল করার একটা তাগিদ কাজ করেছে৷ শরীরে কোনো শত্রু প্রবেশ করলে অ্যান্টিবডি তৈরি করে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার যে ব্যবস্থা রয়েছে, আমরা সেটাই নকল করতে চেয়েছিলাম৷''

এর জন্য বিজ্ঞানীরা প্রথমে রোগের প্যাথোজেনের সারফেস খতিয়ে দেখেন৷ কারণ প্রত্যেক প্যাথোজেনের নির্দিষ্ট এক সারফেস রয়েছে, অনেকটা আঙুলের ছাপের মতো৷ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডির মাধ্যমে জীবাণু শনাক্ত করা সম্ভব৷ ফ্রাউনহোফার ইনস্টিটিউটের প্রোফেসর ফ্রাংক বিয়ার বলেন, ‘‘এখানে আমরা একটি ভাইরাসের সঙ্গে এক বাইন্ডিং মলিকিউলের সংযোগ দেখতে পাচ্ছি৷ এই বাইন্ডিং মলিকিউল আমরা নকল করতে চাই৷ এর জন্য আমাদের সংযোগের সুনির্দিষ্ট মাপের প্রয়োজন, যাতে তালাচাবির মতো নিখুঁতভাবে খাপ খেয়ে যায়৷''

গবেষকরা তাই বাইন্ডিং মলিকিউল খুঁজছেন, অথবা নিজেরাই তৈরি করছেন৷ প্যাথোজেনের সারফেস খতিয়ে দেখে তাঁরা সংযোগের সঠিক স্থানটি খোঁজেন৷ বাইন্ডিং মলিকিউল যথেষ্ট শক্তিশালী কি না এবং প্যাথোজেনের জন্য বায়ো-সেন্সর হিসেবে উপযুক্ত কিনা, পরের পরীক্ষাগুলিতে তা বোঝা যায়৷ সঠিক পার্টনার পেতে ল্যাবে হাজার-হাজার মলিকিউল-প্যাথোজেন কম্বিনেশন পরীক্ষা করতে হয়৷ বায়ো-সেন্সর ও প্যাথোজেনের মধ্যে সংযোগ রংয়ের মাধ্যমে বোঝা যায়৷ প্যাথোজেন-এর অস্তিত্বের প্রমাণ হলে তা দৃশ্যমান হয়ে ওঠে৷

এই সব বায়ো-সেন্সর অণুগুলিকে এবার রুমালের তন্তুর উপর বসাতে হবে৷ সেটা করতে অণুগুলিকে অতি ক্ষুদ্র বিন্দুর মধ্যে পুরে ফেলতে হয় এবং সূক্ষ্ম টিউবের মাধ্যমে সেকেন্ডে ৫০০ বিন্দু তন্তুর উপর ছড়িয়ে দিতে হয়৷ ব্যস, রুমালের মধ্যে ল্যাব প্রস্তুত৷

বাস্তবে রুমাল কীভাবে রোগ শনাক্ত করতে পারে, মলিকিউলার বায়োলজিস্টরা তা দেখিয়ে দিতে পারেন৷ পরীক্ষার খাতিরে প্যাথোজেনের এক মিশ্রণ টেবিলের উপর লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ রুমাল দিয়ে সেই জায়গাটি মুছে দিলে রং বদলে যায়৷ অর্থাৎ প্যাথোজেনের অস্তিত্ব স্পষ্ট হয়ে যায়৷ প্রোফেসর বিয়ার বলেন, ‘‘এই প্রক্রিয়ার সুবিধা হলো, কোনো যন্ত্রপাতি ছাড়াই দ্রুত কাজে লাগানো যায়৷ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ল্যাব-কর্মী – এমনকি ল্যাব-এরও প্রয়োজন নেই৷ ঠিক কী ধরনের সংক্রমণ ঘটেছে, প্রায়ই দ্রুত সেটা জানার প্রয়োজন পড়ে৷ যেমন হাসপাতালে হাইজিন ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে, অথবা ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক-এর প্রেসক্রিপশন দেবার সময়৷ তখন দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার প্রয়োজন পড়ে৷''

আমাদের শরীরের মধ্যে যেমনটা ঘটে, এ ক্ষেত্রেও ঠিক সেভাবেই প্রমাণ পাওয়া যায়৷ টেবিলের উপর যে প্যাথোজেন রুমাল দিয়ে মোছা হলো, তা বায়ো-সেন্সরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সেখানে লেগে থাকে৷ তার ফলে যে ‘ক্যাসকেড রিয়্যাকশন' হয়, তার ফলে রুমালের রং নীল হয়ে যায়৷ প্রোফেসর ফ্রাংক বিয়ার বলেন, ‘‘অন্য অনেক ধরনের প্রমাণও দ্রুত পাওয়া যেতে পারে৷ যেমন মাদক দ্রব্য শনাক্ত করা অথবা খাদ্যের ক্ষেত্রে হাইজিনের মান নিশ্চিত করা ইত্যাদি৷ পরিষ্কার করার প্রয়োজন পড়লে সত্যি পরিষ্কার হয়েছে কিনা, তা জানতে হয়৷ কোনো সারফেসের উপর রুমাল চালিয়ে তখন দেখা যাবে পরিষ্কার হয়েছে কিনা৷''

এমন রুমাল-ল্যাব সবার নাগালে আসতে অবশ্যই বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে৷ তবে কাগজ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলি এখন থেকেই এমন ডায়াগোনিস্টিক পেপার তৈরির ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখাচ্ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য