1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্য

লাইসেন্স পেলেই ভেজাল ওষুধ উৎপাদন শুরু

২৮ মার্চ ২০১৭

বাংলাদেশে ভেজাল ওষুধ নির্ধারণ করার মতো জনবল ও কার্যকারিতা নেই৷ কোম্পানিগুলো মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন করে লাইসেন্স নেয়, পরে নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহার করে৷ জানান জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এসএম মোরশেদ৷

https://p.dw.com/p/2ZwId
এসএম মোরশেদ, জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান
এসএম মোরশেদ, জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ছবি: S M Morshed

ডয়চে ভেলে: আপনারা ভেজাল ওষুধ নিয়ে বহুদিন ধরে কাজ করছেন৷ বাংলাদেশে ভেজাল ওষুধের দৌরাত্ম্য এত বেশি কেন?

এসএম মোরশেদ: বাংলাদেশে ভেজাল ওষুধ নির্ধারণ করার মতো সরকারের পক্ষ থেকে যে জনবল রয়েছে, তা যথেষ্ট নয়৷ একেবারেই অপ্রতুল৷ সেজন্য ভেজাল প্রতিরোধে গত প্রায় আট বছর ধরে কাজ করছি আমরা৷ আমরা ভেজাল খাদ্যসামগ্রি ও ওষুধ তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সচেতন করার জন্য জেলায় জেলায় প্রচারণা চালাচ্ছি৷ এ সব প্রতিষ্ঠানের কাছে গিয়ে কথা বলছি৷ আসলে সব কিছুতেই তো ভেজাল৷ যে কোনো ওষুধ কোম্পানিতে গেলে দেখবেন যে, তারা যখন লাইসেন্সটা নেয়, তখন মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন করেই লাইসেন্সটা নেয়৷ কিন্তু লাইসেন্স পাওয়ার পর, তারা আর মানসম্মত ওষুধ তৈরির দিকে খেয়াল রাখে না৷ তখন নিম্নমানের কাঁচামাল দিয়ে ওষুধ উৎপাদন করে৷ ফলে এর ভুক্তভোগী হন সাধারণ মানুষ৷ অথচ সাধারণ জনগণ পয়সা দিয়েই এই ওষুধ কিনছেন৷ অথচ তাঁদের রোগ প্রতিরোধে তা কাজে আসছে না৷ তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন৷

ভেজাল ওষুধের কারণে শারীরিক অসুস্থতা বা মৃত্যুর ঘটনা কি ঘটে? এর কোনো পরিসংখ্যান আছে আপনাদের কাছে?

হ্যাঁ, আমাদের কাছে তথ্য আছে৷ সেসব তথ্য নিয়ে আন্দোলন করার কারণে প্রায় ৫২ টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকার নোটিস পাঠিয়েছে৷ ২০টি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন আছে৷

কোন লক্ষণগুলো দেখে বোঝা যায় যে ওষুধগুলো ভেজাল?

খোলা বাজারে বিশেষ করে চর্ম এবং যৌন রোগের ভেজাল ওষুধ বিক্রি হয়ে থাকে৷ এগুলো খেলে ক্যানসারের উপসর্গ দেখা দেয়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়৷ এ ধরনের নিম্নমানের ওষুধ খেয়ে মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে৷ কিন্তু এগুলো নিয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করে না৷ বাংলাদেশে চিকিৎসা নিয়ে ব্যবসার কারণে এ সব ভেজাল ওষুধ খেয়ে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷

Interview Morshed Final - MP3-Stereo

দেশে আগাছার মতো ক্লিনিক গজিয়ে উঠছে, সেখানে ভেজাল ওষুধের দৌরাত্ম্য কতটা?

সরকারি হাসপাতালগুলোতে কিছু ওষুধ দেয়া হয়৷ আর বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয় বেশি৷ ছোটখাটো বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে প্রায় ৯০ ভাগ ওষুধই ভেজাল৷

গ্রাম না শহর? কোথায় ভেজাল ওষুধ বেশি বিক্রি হয়?

ওষুধ যে ভেজাল হতে পারে – গ্রামের মানুষ তা চিন্তাও করতে পারেন না৷ তাঁদের কল্পনাতেও আসে না এটা৷ শহরের মানুষ এ বিষয়ে কিছুটা সচেতন৷ শহরে কিছুটা মনিটরিংও হয়৷ ওষুধ কোম্পানিগুলো গ্রামে-গঞ্জে এই ওষুধ ছড়িয়ে দেয় এবং চিকিৎসকদের উপঢৌকন দেয়, যাতে তাঁরা প্রেশকিপশনে এই ওষুধের নাম লেখেন৷ তাছাড়া গ্রামের অনভিজ্ঞ মানুষদের ওষুধের দোকানের কর্মচারীরা ওষুধ দিয়ে থাকে কোনো প্রেসক্রিপশন ছাড়াই৷ তারাই বলে দেয় কোন রোগের কী ওষুধ৷

ভেজাল ওষুধের কারণে গর্ভবতী নারীরা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন?

হ্যাঁ, তাঁরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন৷ কিন্তু হাসপাতালগুলো এগুলো চেপে রাখে, যাতে তা গণমাধ্যমে না আসে৷

এর প্রতিকার কী?

প্রতিকার পাওয়ার জন্য জনসচেতনতার বিকল্প নেই৷ তাই আমরা জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছি৷ আমরা বিভিন্ন সেমিনার করছি৷ যেসব কোম্পানি সরকারের ছত্রছায়ার আছে, তারা আমাদের পাত্তা দিতে চায় না৷ তারা পেশীশক্তি ব্যবহার করে আমাদের এই সচেতনতা বৃদ্ধি রোধ করার চেষ্টা করে৷ আসলে বাংলাদেশে যে আইন আছে, সেই আইনেরও প্রয়োগ নেই৷

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য