1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লিবিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বিক্ষোভকারীদের দখলে

২১ ফেব্রুয়ারি ২০১১

লিবিয়ার নেতা কর্ণেল গদ্দাফি দেশে গৃহযুদ্ধ লেগে যাবার এবং রক্ত গঙ্গা বয়ে যাবার হুমকি দেবার পর, সরকার বিরোধীরা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো দখল করে নিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/10L83
বিক্ষোভ শুরু হয়েছে ছয়দিন আগেছবি: picture alliance/dpa

সর্বশেষ পরিস্থিতি:

ত্রিপোলির রাস্তায় রাস্তায় খণ্ড যুদ্ধ চলছে৷ থেকে থেকেই শোনা যাচ্ছে গুলিবর্ষণের শব্দ৷ মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, লিবিয়ায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এই পর্যন্ত সেখানে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৩৩ জন৷ ৪১ বছর ধরে লিবিয়া শাসন করে চলেছেন ৬৮ বছর বয়স্ক নেতা কর্ণেল মোয়াম্মের গদ্দাফি৷ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তাঁকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি৷

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে গদ্দাফির ভাষণ :

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভাষণে, গদ্দাফি বলেন, ‘‘আমরা হাতে অস্ত্র তুলে নেবো, শেষ বুলেট থাকা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবো৷ আমরা বৈরী সবকিছু ধ্বংস করে দেবো৷ সবার হাতে যদি অস্ত্র থাকে, তাহলে এটা একটা গৃহযুদ্ধ বৈকি৷ আমরা একজন আরেকজনকে খুন করবো৷ লিবিয়া মিশর নয়, টিউনিশিয়াও নয়৷’’ আর গদ্দাফির এই ভাষণ প্রচারিত হবার কয়েক ঘন্টা পরেই বিক্ষুব্ধ জনতা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো দখল করে নেয়৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আল-জামাহিরিয়া টু টেলিভিশন এবং আল-শাবাবিয়া রেডিওর সদর দপ্তর দখল করে নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা৷

Muammar el Gaddafi
গদ্দাফিছবি: dpa/picture-alliance

লিবিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীর হাতে শতাধিক বাংলাদেশি জিম্মি 

লিবিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ৩শ'র বেশি বিদেশিকে জিম্মি করেছে, জানা গেছে তার মধ্যে শতাধিক বাংলাদেশি রয়েছেন৷ লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর বেনগাজি থেকে প্রায় ৩৫০ কিলো মিটার পূর্বে দারনা সিটিতে কয়েকদিন ধরে এঁরা আটক রয়েছেন বলে জিম্মি থাকা এক বাংলাদেশি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান৷ জিম্মিদের ধারণা, নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতেই বিদেশিদের আটক করা হয়েছে৷

দারনা সিটিতে জিম্মিদের একজন মানিকগঞ্জ জেলার শফিউদ্দিন সোমবার দুপুরে টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘গত শুক্রবার বিকালে ৩০/৪০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি আমাদের ক্যাম্প অফিস থেকে জিম্মি করে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে একটি মসজিদে নিয়ে যায়৷ পরের দিন স্থান পরিবর্তন করে পাশের দু'টি কমিউনিটি সেন্টারে আমাদের আনা হয়েছে৷''

যাঁদের জিম্মি করা হয়েছে, তাঁরা দক্ষিণ কোরিয়ার একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন৷ জিম্মিদের মধ্যে বাংলাদেশি ছাড়াও কোরিয়া, নেপাল এবং শ্রীলংকার নাগরিক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শফিউদ্দিন৷

এ বিষয়ে ত্রিপোলির বাংলাদেশ মিশনে যোগাযোগ করা হলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানানো হয় যে, তারা ঘটনাটি রবিবার জেনেছেন৷ বিষয়টি সেদেশর পুলিশকে জানানো হলেও এলাকাটি সরকারবিরোধীদের ঘাঁটি হওয়ায়, পুলিশ এখনও সেখানে অভিযান চালাতে পারেনি৷

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘‘সম্ভবত লুটপাট করা জন্যই এটা করা হয়েছে৷ যারা জিম্মি করেছে, তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করছি৷ কিন্তু সেটা এখনো সম্ভব হয়ে উঠেনি৷ তবে বাংলাদেশি কোনো নাগরিক নিহত বা আহত হয়নি৷''

USA Demonstration Solidarität Libyen FLash-Galerie
সরকার বিরোধী বিক্ষোভছবি: AP

অস্ত্রাগার দখল:
এদিকে, ইসলামপন্থী বন্দুকধারীরা লিবিয়ার একটি সেনা অস্ত্রাগার এবং কাছাকাছি একটি বন্দর দখল করে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা৷ বন্দুকধারীরা কয়েকজন সৈন্য এবং বেসামরিক ব্যক্তিকে জিম্মি করেছে বলেও ঐ কর্মকর্তা জানান৷

ওদিকে, লিবিয়ার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সেখানে পরিচালিত একটি ফরাসি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে৷ একই সঙ্গে লিবিয়ায় অবস্থানরত ফরাসি নাগরিকদের দেশে ফিরে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ ফ্রান্সের ইউরোপীয় সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রি লঁরো ভকিয়ে সোমবার এই আহ্বান জানিয়েছেন৷ অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য এবং লিবিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক হবার কথা রয়েছে আজ৷

প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ