1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লিসবনে অভিনব টাউনহাউস

কিয়র্স্টিন শুমান/এসি৩০ ডিসেম্বর ২০১৫

পর্তুগালের রাজধানী লিসবন এক ঐতিহাসিক শহর৷ তার ঠিক মাঝখানে কংক্রিট আর কাচের একটা পাঁচতলা বাড়ি তৈরি করার কথা ভাবতে পারেন? পর্তুগিজ স্থপতি জোসে মাটেউশ শুধু তা ভাবেননি, করেও দেখিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/1HV9e
Euromaxx Ambiente Lissabon
ছবি: DW

লিসবনের আকর্ষণ ‘টাউনহাউস’

পর্তুগালের রাজধানী লিসবনকে চেনা যায় তার ঐতিহাসিক বাড়িঘর দেখে৷ তার মধ্যে অনেক বাড়ি একশো বছরের বেশি পুরনো৷ তার মাঝখানে হঠাৎ একটি অতি আধুনিক বাড়ি! বাড়ির সামনেটা আবার চুনাপাথর দিয়ে মোড়া, ঠিক যেন কোনো পুরনো প্রাসাদের মতো৷ পর্তুগিজ স্থপতি জোসে মাটেউশ বাড়িটির নকশা করেন৷

২০১৩ সাল থেকে তিনি ও তাঁর পরিবার এই বাড়িতে বাস করছেন৷ পুরো বাড়িটায় থাকার জায়গা সাড়ে চার হাজার বর্গফুটের চেয়ে বেশি – তবে পাঁচটি তলা মিলিয়ে৷ একটা ছোট করিডোর থেকে সরাসরি বসবার ঘরে ঢোকা যায়৷ জোসে বলেন, ‘‘বাড়িটা তৈরি হয়েছে আমি, আমার স্ত্রী আর আমাদের তিন ছেলেমেয়ের জন্য৷ আমরা খুব খোলামেলাভাবে থাকি৷ আমাদের অনেক বন্ধুবান্ধব আছে, কাজেই নানা পার্টি দেওয়া হয়, মানুষজন আসে-যায়৷''

কংক্রিট থেকে ‘উষ্ণ অনুভূতি'

সেজন্য এমন আসবাবপত্র রাখা হয়েছে, যা প্রয়োজন পড়লেই অন্যভাবে সাজিয়ে নেওয়া যায় – জানালেন বাড়ির মালিক৷ দেয়াল চুনকাম করা কিংবা ওয়ালপেপার লাগানো নয়৷ ঘরের ছাদ, দেয়াল, মেঝে, সবই একপোজ্ড কংক্রিটের তৈরি৷ স্থপতি জোসে মাটেউশ জানালেন, ‘‘খোলা কংক্রিট নানা ধরনের ছবি, আসবাবপত্র, কুশন ইত্যাদি দিয়ে ঢাকা যায়, যাতে অতটা ন্যাড়া দেখতে না লাগে, বরং একটা উষ্ণ অনুভূতি হয়৷''

কংক্রিট রং করতে হয় না, তাই পয়সা বাঁচে – জানালেন জোসে৷ বেসমেন্টে কিচেন আর ডাইনিং রুম৷ কিচেনটা ডিজাইন করেছেন মিসেস মাটেউশ৷ জোসে জানালেন, ‘‘পার্টিতে অনেক লোকজন এলে কিচেনটা প্রায়ই বড় ছোট লাগে৷ সেই কারণে আমাদের এই খোলা এরিয়ার আইডিয়াটা মাথায় আসে, যেখান থেকে বাগানেও যাওয়া-আসা করা যাবে৷''

বাগানটা মাত্র সাড়ে সাতশ’ বর্গফুট, অর্থাৎ বেশ ছোট৷ তবুও, এ যেন শহরের ঠিক মাঝখানে একটা মরুদ্যান৷ জোসে বললেন, ‘‘এখান থেকে আজও পুরনো দেয়ালগুলো দেখা যায় আর বোঝা যায়, আগে কীভাবে বাড়ি তৈরি করা হতো৷ আমি যেখানে দাঁড়িয়ে, তার নীচেটা দেখুন৷ আগে যে ভাঙা বাড়িটা এই জায়গায় ছিল, তার পাথর দিয়ে এই মেঝেটা গড়া হয়েছে৷''

সিঁড়িভাঙা অঙ্ক

আগে এখানে একটা ফ্ল্যাটবাড়ি ছিল৷ বেশ ভেঙেচুরে যাওয়া বাড়ি৷ জোসে বাড়িটা আবিষ্কার করেন ২০১০ সালে৷ বাড়িটাকে পুরোপুরি ভেঙে তিনি এখানে তাঁর ‘টাউনহাউস' তৈরি করেন৷ নতুন বাড়ির পাঁচটা তলা মিলিয়ে মোট সাতটা ঘর৷ জোসের টাউনহাউস আর পাঁচটা শহুরে বাড়ির মতো নয়, কেননা তার ঘরগুলো একটার উপর আরেকটা৷ জোসের মন্তব্য, ‘‘অনেকে ভাবেন যে এ বাড়িতে থাকা কষ্টকর, সারাক্ষণ সিঁড়ি ভাঙতে হয়৷ কী করা যাবে, এ বাড়ির অনেকগুলো তলা, তাই সিঁড়ি লাগে৷ এখানে এক তলা থেকে আরেক তলা যেতে চারবার সিঁড়ি ভাঙতে হয়৷ কিন্তু আমরা দেখেছি যে, রোজকার জীবনে ঐ একটা বা দু'টো তলাতেই থাকা হয়৷ এছাড়া সিঁড়ি ভাঙা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো, বলে আমাদের ধারণা৷''

দোতলায় জোসের ছেলেদের ঘর৷ এখানকার মজা হলো, বিছানার পিছনে দেয়ালটাই হলো জামাকাপড় রাখার আলমারি৷ সবার ওপরের তলায় আছে একটা ‘পাটিও' বা খোলা জায়গা৷ আর তার ঠিক উলটোদিকে একটি লাইব্রেরি৷ জোসে মাটেউশ এখানে অনেক সময় কাটান৷ ওয়েদার যেমনই হোক না কেন, এখান থেকে লিসবন আর তেজো নদীর যে অপরূপ দৃশ্য দেখা যায়, সেই দৃশ্যের লোভেই তো জোসে এই পাঁচতলা বাড়িটা বানিয়েছেন৷ জোসে বলেন, ‘‘আমার এই দৃশ্যটা দারুণ লাগে, কেননা এখানে থেকে প্রতিবারই নতুন কোনো খুঁটিনাটি চোখে পড়ে, নতুন নতুন রং, যেমন ভোরবেলা, বা সন্ধ্যা হলে৷ দৃশ্যটা কোনো সময়েই এক নয়৷''

সেই দৃশ্যের টানেই জোসে মাটেউশ তাঁর টাউনহাউসের চার-চারটি ফ্লাইট সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান