1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘লেমনএইড’

ইয়ানিন আলব্রেশ্ট/আরবি৫ জানুয়ারি ২০১৪

‘লেমনএইড’ অনেকেই চেনেন৷ কিন্তু স্বাস্থ্যকর এই পানীয় বিক্রির টাকা থেকে যে বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে সাহায্য করা হয়, সহায়তা করা হয় ক্ষুদ্র চাষিদের এ কথা ক’জন জানেন? প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় হামবুর্গের একটি বাড়ি থেকে!

https://p.dw.com/p/1AlQn
LemonAid
ছবি: LemonAid

‘ড্রিংকিং হেল্পস' বা ‘পান সাহায্য করে' এই কথাটি লেখা রয়েছে সবুজ রঙের একটি পুলওভারের ওপরে৷ ওটা পরে আছেন পাউল বেথকে৷ একটি বায়ো সফট ড্রিংকস-এর উৎপাদক তিনি৷ হামবুর্গের এই প্রতিষ্ঠানের ড্রিংকস কিনলে অন্যান্য মানুষকেও সাহায্য করা হয়৷ প্রতিটি বোতল বিক্রির টাকা থেকে পাঁচ সেন্ট যায় সামাজিক কোনো প্রকল্পে৷ ২০১৩ সালে প্রায় ১৬৫,০০০ ইউরো পাওয়া গেছে এভাবেই৷

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে ব্যবসা

৩২ বছর বয়সি পাউল বেথকে প্রায় পাঁচ বছর আগে দুই বন্ধুর সঙ্গে মিলে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন৷ আজ সারা জার্মানিতে তাঁদের সমাজকল্যাণমূলক ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে৷ বিক্রি হচ্ছে ফলের জুস থেকে তৈরি লিমোনেড ও নানা ধরনের আইস-টি৷ এমনকি অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ডেও তাঁদের ব্যবসা প্রসারিত হয়েছে৷

LemonAid
‘ড্রিংকিং হেল্পস' বা ‘পান সাহায্য করে’ছবি: DW/Janine Albrecht

‘‘আমাদের প্রকল্পের ব্যাপারে বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি আমরা৷ কিন্তু ব্রাজিলে আমরা তেমন সুবিধা করতে পারিনি৷ ক্ষুদ্রচাষিদের টেকসই ও ভবিষ্যতমুখী কৃষি খামার খুঁজে পাওয়া সহজ নয়৷ সেখানে কৃষিঅর্থনীতি পরিচালিত হচ্ছে বৃহৎ ভূস্বামীদের দ্বারা'', বলেন বেথকে৷

তাঁর কথায়, ভারতে অবস্থাটা ভিন্নরকম৷ সেখানে ক্ষুদ্র কৃষিজমির কাঠামোটা এখনও মজবুত৷ ‘‘আমাদের এমন সব চাষি খুঁজতে হয়েছে, যারা টেকসই ও ভবিষ্যতমুখী কাজ করছেন৷'' জানান বেথকে৷ সনাতনের চেয়ে জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ ব্যয় ও সময় সাপেক্ষ৷ সেজন্য অনেকেই এই পথে আসতে চান না৷

চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে

হামবুর্গ শহরে বায়ো লিমোনেডের চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ ইতোমধ্যে সুইডেন, হংকং, নিউ ইয়র্ক ও প্যারিস থেকেও মানুষের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে৷ বেথকে বলেন, ‘‘পানীয় হলো এক যোগাযোগের মাধ্যম৷ একটি বোতল টেবিলে রেখে পান করতে করতে গল্পগুজব করে মানুষ৷ ভাবনাগুলি তখন হালকা ডানায় ভর করে চলে৷''

বায়োলিমোর উদ্যোক্তা তিন তরুণ মনে করেন পানীয় জগতের অবস্থাটা রীতিমত শোচনীয়৷ ‘‘কোকাকোলা, ফান্টা ও অতিরিক্ত মিষ্টিযুক্ত আইস-টি ছাড়া আর কী বা পাওয়া যায়?'' বলেন পাউল বেথকে৷

LemonAid
হামবুর্গ শহরে বায়ো লিমোনেডের চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছেছবি: LemonAid

রান্নাঘর থেকে গবেষণাগার

তাই পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়৷ হামবুর্গের এক বাড়ির রান্নাঘরকে গবেষণাগার বানানো হয়৷ পার্টিতে বন্ধু-বান্ধবকে চেখে দেখতে দেন এই তিন তরুণ৷ কোকাকোলার মতো গোপন কোনো রেসিপি নিয়ে কাজ করেন না তাঁরা৷ তাজা ফলের রসের সাথে মেশানো হয় ‘কেন শুগার'৷ কিংবা আসল চায়ের সঙ্গে ফলের রস মিশিয়ে আইস-টি তৈরি করা হয়৷ এই পানীয় এখন সব ধরনের খাদ্যদ্রব্যের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে৷

লেমোনএইড-এর কেন্দ্রীয় দপ্তরে এলেও বোঝা যাবে সমাজ কল্যাণমূলক কাজে অর্থ ব্যয় করে প্রতিষ্ঠানটি৷ অফিসঘরটি অতি সাদামাটা৷ ব্যবসার কাজে বাইরে যেতে হলে নিজের খরচেই যান পাউল বেথকে ও তাঁর সহকর্মীরা৷ জৈবপানীয়ের ব্যবসায় আসার আগে কিছুদিনের জন্য জার্মান উন্নয়ন সাহায্য সংস্থা জিআইজেড-এ কাজ করেছেন৷ সেটা ছিল ২০০৫ সাল৷ এশিয়ায় সুনামি দুর্যোগের পর৷ বেথকের মতে এই ধরনের সংস্থায় ভুক্তভোগীদের আসল চাহিদার দিকে লক্ষ্য না রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, অর্থ ব্যয় করা হয়৷

ছাত্র বিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে অভিজ্ঞতা

১৫ বছর বয়সে ছাত্র বিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলেন তিনি৷ সেখানে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন মানুষের কী প্রয়োজন৷ তার এত ভালো লেগেছিল যে ‘আবিট্যুর' বা ১২ ক্লাস পর্যন্ত থেকে যান সেখানে৷ ‘‘আর তখন থেকে আমার ইচ্ছা ছিল দেশটির জন্য কিছু করার৷'' বলেন পাউল৷ শ্রীলঙ্কায় বসবাসের সেই বছরগুলি থেকেই দেশটিতে লেমোনএইড- প্রকল্পের জন্য সহযোগী পাওয়া সহজ হয়েছে৷

LemonAid
ডে-কেয়ার সেন্টারে সব বাচ্চা খাবার পায়ছবি: LemonAid

সমাজকল্যাণমূলক কাজ

লেমোনএইড শুধু কৃষকদেরই তাদের উৎপাদনের ন্যায্য দাম পেতে সাহায্য করে না৷ অন্যান্য স্থানীয় প্রকল্পেও সহায়তা করে৷ যেমন সাহায্য করা হয় প্যারাগুয়ের ডে-কেয়ার সেন্টারকে৷ যেখানে আগে শাক-সবজি রাখার জায়গা ছিল৷ যে সব চাষি সবজির বাজারে তাদের উৎপাদন বিক্রি করতে আসেন, তাদের বাচ্চারা সেখানে ঘোরাঘুরি করে সময় কাটিয়ে দিত৷ অনেক বাচ্চাকে কাজ করতে হতো৷ কেউ কেউ আবার আবর্জনা থেকে খাবার কুড়ানোর চেষ্টা করতো৷ ডে-কেয়ার সেন্টারে এই সব বাচ্চা খাবার পায়৷ তাদের হোমটাস্কে সাহায্য করা হয়৷ তবে এখানে ভর্তি হওয়ার শর্ত হলো এই বাচ্চাদের স্কুলে যেতে হবে৷ লেমোনএইড এই ছেলে-মেয়েদের জন্য দৈনিক নাস্তা ও স্বাস্থ্যকর হালকা খাবারের খরচ বহন করে৷ সপ্তাহে একদিন রান্নার কোর্সের আয়োজন করা হয়৷ ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সি ছেলে-মেয়েরা এই কোর্সে শেখে, কীভাবে স্থানীয় খাদ্যদ্রব্য দিয়ে স্বাস্থ্যকর রান্না করা যায়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য