1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘শর্তের জালে আটকা নায়েক রাজ্জাক

সমীর কুমার দে, ঢাকা২৩ জুন ২০১৫

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নায়েক আব্দুর রজ্জাককে গত এক সপ্তাহ আগে নাফ নদী থেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি৷ তাদের শর্তে কোনোভাবেই রাজি নয় বাংলাদেশ৷

https://p.dw.com/p/1FmEO
Proteste gegen Wahl in Bangladesh
ছবি: Reuters/Andrew Biraj

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন, বিজিবির নায়েক আব্দুর রাজ্জাককে ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে মিয়ানমার ‘অতিরিক্ত করছে'৷ তবে একটি পতাকা বৈঠক হলেই এ সমস্যা মিটে যাবে বলে তিনি আশাবাদী৷ বিজিবি সদস্য রাজ্জাককে ফিরিয়ে আনার অগ্রগতি জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘মিয়ানমার সাগরে উদ্ধার হওয়া নাগরিকদের সঙ্গে রাজ্জাকের বিষয়টি জুড়ে দিয়েছিল৷ আমরা বারবার বলেছি, শতভাগ যাচাই-বাছাই ছাড়া আনব না৷ আমাদের নাগরিক যারা, তাদের অবশ্যই আনব৷ এখন রাজ্জাক সাহেবের সঙ্গে এই বিষয়টি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ আমরা মনে করি – তারা অতিরিক্ত করছেন, অতিরিক্ত চাইছে৷ সেটাও আমরা তাদেরকে খুব ভদ্র ভাষায় জানিয়ে দিয়েছি৷''

বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ মঙ্গলবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সোমবার রাতে আমি মিয়ানমার দূতাবাসের ডিফেন্স অ্যাটাশে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মাহবুবের সঙ্গে কথা বলেছি৷ তিনি আমাকে জানিয়েছেন, তিনি মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নায়েক রাজ্জাককে ফিরিয়ে আনার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাকে জানানো হয়েছে, খুব শিগগিরই নায়েক রাজ্জাককে সম্মানের সঙ্গে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ বাংলাদেশের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হবে৷ এবং সেটা কোন শর্তের বিনিময়ে নয়৷'' দেরি হচ্ছে কেন – এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৩ সালেও ওরা আমাদের দেশের ৪ জনকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল৷ সেবারও আলোচনা করে তাদের ফিরিয়ে আনতে ১৬ দিন সময় লেগেছিল৷ এবারও হবে৷

এদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম মঙ্গলবার তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্টাটাস দিয়েছেন৷ নায়েক রাজ্জাককে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ওই স্টাটার্সে তিনি লিখেছেন, ‘‘খুব শিগগিরই তাকে ফিরিয়ে আনা হবে৷ দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে ভিয়েনা কনভেনশন রয়েছে৷ যা সকল দেশের মানা উচিত৷ না মানলে সেগুলো স্মরণ করিয়ে দেবার ব্যবস্থাও আছে৷ আমরা আমাদের নাগরিক কর্মকর্তা ও বাহিনী সদস্যদের মর্যাদার বিষয়ে সচেতন৷ এই ধরনের বিষয়গুলো নিরসনে প্রয়োজন হয় ধৈর্যের, কৌশলের এবং সঠিক সিদ্ধান্তের৷ আমি জানি একজন নাগরিক এগুলো বুঝতে নাও চাইতে পারেন৷ তাদের উদ্দেশ্যে বলবো, ভরসা রাখুন৷''

প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গাদের নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই গত ১৭ জুন কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে নাফ নদীতে গোলাগুলির পর বিজিবির নায়েক রাজ্জাককে ধরে নিয়ে যায় বিজিপি৷ তখন বিপ্লব নামে একজন বিজিবি সদস্য গুলিবিদ্ধও হন৷ এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বিজিবি সদস্যকে দ্রুত ফেরত দিতে বলে৷ এরপর বিজিবির পক্ষ থেকে কয়েক দফা পতাকা বৈঠকের উদ্যোগের কথা বলা হলেও মিয়ানমারের বিজিপি রাজি হয়নি৷ উলটে বিজিপির ফেসবুক পেজে নায়েক রাজ্জাকের দুটো ছবি প্রকাশ করা হয়, যাতে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাতকড়া হাতে দেখা যায়৷ এ অবস্থায় রাজ্জাকের স্ত্রী আসমা বেগম গত রবিবার সকালে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন৷ বিষয়টি সংবাদের শিরোনাম হলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে মিয়ানমারের সমালোচনা করেন অনেকে৷ জাতীয় সংসদেও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন একজন এমপি৷

বিজিবির টেকনাফ ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ টেলিফোনে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সপ্তাহখানেক আগেও আমরা যাচাই করে ১৮৭ জনকে দেশে ফিরিয়ে এনেছি৷ তার মধ্যেও দুই জন রোহিঙ্গা চলে এসেছে৷ এখন আবার আরো ৫৫৫ জন রোহিঙ্গাকে নিতে বলছে- রাজ্জাককে ফিরে পাওয়ার জন্য৷ আমরা বলেছি, বাংলাদেশি যতজন থাকবে সবাইকে ফিরিয়ে নেবো৷ কিন্তু রোহিঙ্গা নেব না৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘মিয়ানমার বিজিপি আমাদের সঙ্গে ঠিকমতো যোগাযোগ রাখছে না৷ আমরা বারবার যোগাযোগ করলেও তারা জবাব দেয় না৷ ফলে বিষয়টি ঝুলে যাচ্ছে৷ আর রাজ্জাককে ফিরে পেতে দেরি হচ্ছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য