1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক টিভি-চ্যানেল ‘অ্যান্ডি’র আত্মপ্রকাশ

১৯ অক্টোবর ২০১০

সম্প্রতি কোলন শহরে অনুষ্ঠিত হল 'কোলন কনফারেন্স' নামে খ্যাত এক টিভি উৎসব৷ প্রতি দুবছর পর পর অনুষ্ঠিত এই উৎসবে প্রায় পাঁচ হাজারের মত মানুষ যোগ দেন৷ আয়োজন করা হয় নানা রকম ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও বক্তৃতার৷ দেয়া হয় পুরস্কার৷

https://p.dw.com/p/PhLT
ফাইল ফটোছবি: AP

এবারের টিভি উৎসবে আলোচনার মূল বিষয় ছিল সংস্কৃতি বিষয়ক একটি নতুন টিভি চ্যানেল ‘অ্যান্ডি'র উদ্বোধন নিয়ে৷

অ্যান্ডি এমন একটি টিভি-চ্যনেল, যার বিষয়বস্তু হবে শুধুই শিল্প ও সংস্কৃতি৷ অনেকটা সংবাদ চ্যানেল, রাজনীতি ও খেলাধুলা বিষয়ক চ্যানেল ইত্যাদির মত৷ ২০১১ সালের এপ্রিল মাস থেকে যাত্রা শুরু হওয়ার কথা অ্যান্ডির৷ এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে, এত টিভি চ্যানেলের ভিড়ে আরেকটি নতুন চ্যানেলের কী প্রয়োজন আছে? অ্যান্ডি চ্যানেলের সামগ্রিক পরিকল্পনা ও রূপায়নের সঙ্গে যুক্ত অভিজ্ঞ টিভি-ব্যক্তিত্ব পাট্রিক হ্যোর্ল বলেন, ‘‘শিল্প ও সংস্কৃতি নিয়ে জার্মান টিভিতে যত অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়, তেমনটি বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায় না৷ তবে সাধারণ টিভি চ্যানেলগুলির পক্ষে একটা অসুবিধা হল, তাদের অন্যান্য অনুষ্ঠানও প্রচার করতে হয়৷ তাই সংস্কৃতি বিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচারের জন্য নানা শ্রেণী ও পেশার মানুষের জন্য উপযোগী সময় বের করা তাদের পক্ষে সব সময় সম্ভব হয়না৷''

আর এই ঘাটতিটাই অ্যান্ডি পূরণ করতে চায়৷ দিনের ২৪ ঘন্টাই সংস্কৃতি বিষয়ক অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবে মানুষ৷ অপেরা, কনসার্ট, প্রামাণ্য চিত্র, নির্বাচিত ছায়াছবি, স্থাপত্য, বলা যায় সংস্কৃতি জগতের তাবৎ জিনিসই দেখতে পারবেন দর্শকরা৷ প্রচারিত হবে ইংরেজি ভাষায়৷ তবে কিছু ফি দিতে হবে এই চ্যানেল দেখতে হলে৷ পাট্রিক হ্যোর্ল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘নিখরচার টিভি-চ্যানেলগুলির মধ্যে দুই একটা প্রিয় চ্যানেল যে দর্শকদের নেই তা নয়৷ কিন্তু ধীরে ধীরে বিষয়ভিত্তিক অনুষ্ঠান দেখার আগ্রহ মানুষের আরো বাড়ছে৷ আর এই ক্ষেত্রেই এগিয়ে আসতে পারে অ্যান্ডি৷''

জার্মানিতে বিষয়ভিত্তিক টিভি-চ্যানেলের সংখ্যা নিতান্ত কম নয়৷ যেমন নাম করা যায়: ফোয়েনিক্স, থিয়েটার চ্যানেল, ইউরো স্পোর্টস, এন-টিভি ইত্যাদির৷ এই চ্যানেলগুলির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিজের জায়গাটা কতটুকু শক্ত পারবে সংস্কৃতিবিষয়ক নতুন টিভি চ্যানেল অ্যান্ডি, এই প্রশ্নটা উঠতে পারে এখানে৷ পাট্রিক হ্যোর্ল আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, ‘‘এটিই প্রথম টিভি-চ্যানেল, যেটি শুধু মাত্র শিল্প ও সাংস্কৃতিক বিষয়েই মনোনিবেশ করবে৷ অন্য কিছু দেখাবার জন্য রেটিং'এর কোনো চাপ থাকবেনা এটির৷ বিষয়ভিত্তিক টিভি-চ্যানেল অ্যান্ডি হল সেই সব মানুষের জন্য, যাদের শিল্প ও সংস্কৃতি সম্পর্কে গভীর আগ্রহ রয়েছে৷''

ধারণা করা হচ্ছে, প্রথম দিকে ২০ হাজারের মত দর্শক টানবে এই চ্যানেল৷ নিখরচার টিভি-চ্যানেলগুলির জন্য এই সংখ্যাটা একটা বিরাট বিপর্যয়ের মত৷ বিষয়ভিত্তিক চ্যানেলের জন্য কিন্তু তা এক বড় সাফল্য৷ যে সব বিষয় সম্পর্কে মানুষ শুধু নির্দিষ্ট কিছু অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই জানতে পারে, সে বিষয়গুলিকেও কাছে নিয়ে আসবে অ্যান্ডি৷ কেননা শিল্পকলা শুধু ওপরের তলার মানুষদের জন্যই নয়৷ বলেন পাট্রিক হ্যোর্ল৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমি মনে করি, এই ধরনের সংস্কৃতি বিষয়ক চ্যানেল কারো কারো অনুভূতিতে নাড়া দিতে পারে৷ কোনো জিনিস দেখে কারো হয়তো মনে হতে পারে, ‘আরে এটা তো আমি জানতাম না, দারুণ আকর্ষণীয় তো!' কিংবা কারো কথা শুনে মনে হতে পারে, ‘লোকটি বেশ পাগলাটে তো, এরকম কেউ আছে বলে তো আমার জানা ছিলনা৷ তবে সে যা বলছে, তা একেবারে বোকার মত নয়'৷''

এই চ্যানেলে দৈনন্দিন জীবন থেকেও বিষয় নেয়া হবে৷ তুলে ধরা হবে স্থাপত্য, আলোকচিত্র এবং ডিজাইনের মত বিষয়গুলিও৷ যেমন কোন আসবাবপত্র এখন আধুনিক আর কোনগুলিই বা সেকেলে, আলোচনা করা হবে এই ধরনের বিষয় নিয়েও৷ পাট্রিক হ্যোর্ল জানান, বিভিন্ন মিউজিয়াম ও সংস্কৃতি জগতের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতামূলক কাজ করতে আগ্রহী টিভি-চ্যানেল অ্যান্ডি৷ তাঁর মতে, শিল্প মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করতে পারে৷ সংস্কৃতি উপভোগ করতে হলে ধীশক্তিসম্পন্ন হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই৷ যে কেউ আহরণ করে নিতে পারেন শিল্পের সুধা৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক