1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিয়াওবো’র কারাদন্ড বহাল করলো চীন

১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০

চীনের নেতৃস্থানীয় নাগরিক অধিকার আন্দোলনকারী প্রফেসর লেও শিয়াওবো’র এগারো বছরের কারাদন্ড বহাল রেখেছে বেইজিং-এর একটি আদালত৷ বৃহস্পতিবার দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে এ তথ্য৷

https://p.dw.com/p/Lyu9
প্রফেসর লেও শিয়াওবোছবি: AP

শিয়াওবো'র এই কারাদন্ডের খবর সত্য বলে জানিয়েছেন লেও'র আইনজীবী শাং বোজুন৷ তিনি বলেন, ‘‘রায় ঘোষণা করতে সময় লেগেছে ১০ মিনিটের মতো৷ বিচারপতি রায় পড়েছেন৷ সবাই শুনেছে৷ অথচ, আদালতকক্ষে কারোরই কিছু বলার অধিকার ছিলনা৷ লেও শিয়াওবো শুধু বলেন: ‘‘আমি নির্দোষ''৷ এরপর তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়৷ তাঁর আগের শাস্তিদন্ডই বহাল রাখল আদালত৷ এটা দুঃখজনক যে, আমার মক্কেলের সঙ্গে আমাকে কথা বলতেও দেয়া হয়নি৷ তাই আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কোন সুযোগ আর নেই৷ এই রায় এখন আইনসিদ্ধ৷''

Liu Xiaobo / Anhänger / Hongkong / China
শিয়াওবো'র মুক্তির জন্য একটি আবেদন পত্রে সই করেছে চীনের প্রায় দশ হাজার মানবাধিকার কর্মীছবি: AP

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে গণ প্রজাতন্ত্রী চীনে রাজনৈতিক সংস্কার ও অবাধ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে ‘‘চার্টার ৮'' নামের একটি কড়া ইশতেহার লেখার কারণে, আটক হন লেও শিয়াওবো৷ এরপর গত ২৫শে ডিসেম্বর, অর্থাৎ বড়দিনে লেও'কে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদন্ড দেওয়া হয়৷ যার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মহল৷ তবে এটাই লেও'র জীবনে প্রথম কারাবাস নয়৷ ১৯৮৯ সালে বিখ্যাত ‘তিয়েনানমেন স্কয়ার'-এর সামনে গণতন্ত্রকামীদের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার জন্যও হাজতবাস করতে হয় লেও'কে৷ সে ঘটনারও নিন্দা জানায় পশ্চিমা বিশ্ব৷ নিন্দার ঝড় ওঠে দেশের মধ্যে থেকেও৷

Liu Xia / Frau von Liu Xiaobo / China
শিয়াওবো পত্নী লেও শিয়াছবি: AP

বৃহস্পতিবার, বেইজিং হাইকোর্টে উপস্থিত শিয়াওবো পত্নী লেও শিয়া জানান যে, আদালতের এ সিদ্ধান্তে তিনি বিস্মিত নন৷ তাঁর কথায়, ‘‘এগারো বছর দীর্ঘ সময় - সবার জন্যই দীর্ঘ৷ লেও শিয়াওবো'কে ছাড়া আমার জীবন হয়ে উঠবে আরও দুর্বিষহ, হবে আরও বেশি নৃশংস আচরণের শিকার৷ এই ঘটনা চট করে শেষ হবার নয়৷ আমি চরম হতাশাবাদী৷ সমাজের কাছ থেকে কখনও কিছু আশা করিনি৷ কারণ, আমি সব সময়ই সবচেয়ে খারাপ কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকি৷ আমার স্বামী অবশ্য ঠিক আমার উল্টো৷ সবসময়ই ও অ্যাকটিভিস্ট৷ সর্বদাই সক্রিয়৷ তাই আমরা খুব ভালভাবেই পরস্পরের পরিপূরক হয়ে উঠেছি৷''

এদিকে, ৫৪ বছর বয়স্ক লেও শিয়াওবো'কে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য চীন সরকারের কাছে আবোদন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন হান্টসম্যান নাগরিক অধিকার খর্ব করার জন্য চীনের এহেন পদক্ষেপে দুঃখ প্রকাশ করেছেন৷ অন্যদিকে, বেইজিং আদালতের রায়ের সমালোচনা করে ব্রাসেলস-এর দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, সিদ্ধান্তটি ব্যক্তি বিশেষের মতামত প্রকাশের অধিকারের পরিপন্থী৷

BdT Prozessauftakt gegen Liu Xiaobo in China
বেইজিং-এর ঐ আদালতের সামনে ছিল পুলিশ প্রহরাছবি: AP

শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, লেও শিয়াওবো'র মুক্তির জন্য একটি আবেদন পত্রে সই করেছে চীনের প্রায় দশ হাজার মানবাধিকার কর্মী৷ তবে আন্তর্জাতিক সমাজকে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলানোর আহ্বান জানিয়েছেন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মা ঝাওশু৷ প্রসঙ্গত, মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ', ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স' বহুবার সম্মানিত করে লেও'কে৷ এছাড়া, ‘দ্য নোবেল প্যারাডাইস অফ পাওয়ার, দ্য হেল ফর দ্য মীক' নামের নিবন্ধটির জন্য ২০০৪ সালের ‘হংকং হিউম্যান রাইট্স নিউস' পুরস্কার পান লেও শিয়াওবো৷

প্রতিবেদক : দেবারতি গুহ

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক