1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চাইল জার্মানির ক্যাথলিক নেতৃত্ব

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০

প্রবল চাপের মুখে পড়ে অবশেষে ক্যাথলিক বিশপদের সংগঠনের প্রধান রোব্যার্ট সলিচ নীরবতা ভেঙে পাদ্রীদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইলেন৷

https://p.dw.com/p/M9RF
ক্যাথলিক বিশপদের সংগঠনের প্রধান রোব্যার্ট সলিচছবি: AP

জার্মানিতে ধর্মীয় নেতাদের সময়টা মোটেই ভাল যাচ্ছে না৷ একাধিক রোমান ক্যাথলিক প্রতিষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের উপর যৌন নিগ্রহের অসংখ্য ঘটনার কথা জানা যাচ্ছে৷ অন্যদিকে এবার জার্মানিতে প্রোটেস্টান্ট সম্প্রদায়ের শীর্ষ ব্যক্তি মদ খেয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন৷

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অন্তর্গত স্কুল-কলেজে অনেক শিশু-কিশোর শিক্ষা গ্রহণ করে৷ অনেক ক্ষেত্রে তারা ছাত্রাবাসে থেকে পাঠ্যক্রম শেষ করে৷ পরিবার থেকে দূরে থেকে অথবা অনাথ হিসেবে অভিভাবকের স্নেহ-ভালবাসা-শাসন এবং সুরক্ষার বলয় থেকে দূরে থাকতে হয় তাদের৷ ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা আবাসনে যাদের তত্ত্বাবধানে তাদের থাকতে হয়, সেই শিক্ষক, পুরোহিত বা পাদ্রীদের বিশাল এক দায়িত্ব থাকে৷ অথচ এই দায়িত্ব এড়িয়ে শুধু ক্ষমতা প্রয়োগ করে শিক্ষকরা যদি বছরের পর বছর ছাত্রছাত্রীদের উপর মানসিক, দৈহিক বা যৌন নিগ্রহ করে চলেন, সেক্ষেত্রে তার নিন্দার কোন ভাষা পাওয়া যায় না৷ তার উপর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও যদি পুরো ঘটনা গোপন রাখতে মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকে এবং ঘটনাগুলি জনসমক্ষে এসে পড়ার পরেও হয় নীরব থেকে অথবা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে দায়িত্ব এড়াবার চেষ্টা করে যায়, তখন ধর্মীয় নেতৃত্বের উপর আস্থার ভিত্তি টলে যায়৷

জার্মানিতে সম্প্রতি রোমান ক্যাথলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে একের পর এক কেলেঙ্কারির কথা জানাজানি হয়ে পড়ার পর ঘটনাপ্রবাহ ঠিক এভাবেই এগিয়ে গেছে৷ অবশেষে মঙ্গলবার জার্মানিতে রোমান ক্যাথলিক বিশপদের সংগঠনের প্রধান রোব্যার্ট সলিচ নীরবতা ভেঙে এই জঘন্য অপরাধ সম্পর্কে মন্তব্য করলেন৷ স্পষ্ট ভাষায় তিনি শিশু-কিশোরদের উপর যৌন নিগ্রহের নিন্দা করলেন এবং একে এক জঘন্য অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করলেন৷ পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের বক্তব্যের প্রতিফলন ঘটিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন৷

বলাই বাহুল্য, একদিকে যেমন মানুষ রোমান ক্যাথলিক ধর্মীয় কাঠামোর কাছ থেকে বহুকাল ধরে এই ক্ষমা চাওয়ার দিনটির জন্য অপেক্ষা করে ছিলেন, অন্যদিকে ধর্মীয় সংস্কারপন্থীরা এই বিবৃতিকে অত্যন্ত অপর্যাপ্ত ও দুর্বল হিসেবে বর্ণনা করেছেন৷ তারা ধর্মীয় নেতাদের কাছ থেকে আরও সাহসী পদক্ষেপের ডাক দিচ্ছেন, যাতে এমন ঘটনা ভবিষ্যতে আর সহজে ঘটতে না পারে৷

শুধু রোমান ক্যাথলিক নয়, সঙ্কটে পড়েছে জার্মানির প্রোটেস্টান্ট নেতৃত্বও৷ জার্মানির প্রোটেস্টান্ট সংগঠনের শীর্ষ নেত্রী মার্গট কেসমান হানোফার শহরে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন৷ ইস্টারের ঠিক আগে খ্রিস্টানরা যেখানে মদ বা মাংস ত্যাগ করে থাকেন, তখনই এমন এক ঘটনা আরও অস্বস্তিকর হয়ে পড়েছে৷ কেসমান অবশ্য অনুশোচনা দেখিয়ে নিজের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন৷ এই সব ঘটনার ফলে জার্মানিতে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মীয় কাঠামোর ভাবমূর্তি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক