শোকে কাতর লাহোর, চলছে চিরুণী অভিযান
২৯ মে ২০১০মোটর সাইকেল তো সর্বত্র চলে কিন্তু লাহোরের রাস্তায় মোটর সাইকেল চলে মনে হয় সবচেয়ে বেশী৷ গতকাল সাধারণ মানুষের চলাচলের এই বাহনও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল জুমার নামাজের পর দুই মসজিদে আত্মঘাতী হামলা এবং অন্তত আশি জনের মৃত্যুর পর৷
বেশ কয়েকদিন পাকিস্তানের ভারত লাগোয়া নগরী লাহোর শান্ত ছিল৷ কিন্তু গতকাল শুক্রবারের ঘটনার পর অত্যবশ্যকীয় ভাবেই মনে করিয়ে দিচ্ছে, সেখানে জঙ্গি তৎপরতা বন্ধ হয়নি৷
হামলা হয়েছে আহমদীয়া সম্প্রদায়ের দুটি মসজিদে৷ দুটি হামলায় অংশগ্রহণকারী হামলাকারী ছিল কমপক্ষে পাঁচজন৷ নামাজ শেষের কিছু সময় পরেই বন্দুকধারীরা প্রথমে গ্রেনেড হামলা চালায়৷ পরে তারা মসজিদে ঢুকে পড়ে৷ টেলিভিশন চিত্রে দেখা যায়, এক হামলাকারী অবস্থান নিয়েছেন মসজিদের সুউচ্চ মিনারের উপর৷ তার হাতে থাকা আধুনিক অস্ত্র গর্জে উঠছে সাধারণ মানুষ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উপর৷ নির্বিচারে চালানো এই হামলায় গারহি শাহু এলাকার একটি মসজিদে হামলায় মারা গেছে সবচেয়ে বেশি৷ জোড়া হামলায় মারা যায় মোট আশি জন৷ আহত শতাধিক৷
আহমদীয় সম্প্রদায়ের নেতা মুজিবুর রহমান এই ঘটনায় বিমর্ষ৷ জানালেন, ‘তৎকালিন প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক স্বাক্ষরিত আহমদীয় সম্প্রদায়কে নিষিদ্ধ করার আইনটিকেই মূলত জঙ্গিদের তাদের উপর হামলার মত ঘটনাগুলো ঘটাতে উৎসাহিত করছে৷'
কিন্তু কারা এই হামলা চালালো এই প্রশ্নই এখন সবচেয়ে আগে চলে এসেছে৷ জীবিত দুই কিশোর হামলাকারীকে আটক করেছে পুলিশ৷ অন্যদুই হামলাকারী নিজেদের উড়িয়ে দিয়েছে শরীরে জড়ানো বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে৷ ধরা পড়া কিশোরদ্বয় পাকিস্তান আফগানিস্তান সীমন্ত লাগোয়া এক উপজাতীয় অঞ্চলের বাসিন্দা৷ আর সেই অঞ্চলকেই বলা হয় আল কায়েদা এবং তালেবান গোষ্ঠীর স্বর্গরাজ্য৷ তাই নিরাপত্তা বিশারদদের ধারণা, এই হামলার পেছনে রয়েছে এই দুই জঙ্গিগোষ্ঠী৷
হামলার এই ঘটনার পর লাহোরে শুরু হয়েছে চিরুনী তল্লাশি৷ ধারণা করা হচ্ছে, আরও হামলাকারী এবং তাদের মদদদাতারা এখনো শহর বা তার আশেপাশের এলাকাতেই রয়েছেন৷ ঘটনার নিন্দা জানিযেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম