1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শ্রীলঙ্কায় যুদ্ধ তদন্তে প্রশ্নবিদ্ধ কমিশনের কাজ শুরু

১১ আগস্ট ২০১০

কাজ শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার গঠিত কমিশন৷ তবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের যে অভিযোগ উঠেছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে না৷ ফলে এই তদন্তের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন আইনপ্রণেতা এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো৷

https://p.dw.com/p/OiIQ
গত বছরই ২৬ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটে শ্রীলঙ্কায়ছবি: dpa

দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় গত বছরই অবসান ঘটে ২৬ বছরের গৃহযুদ্ধের৷ এই যুদ্ধের একপক্ষে ছিল সিংহলি নিয়ন্ত্রিত শ্রীলঙ্কা সরকার৷ অন্য পক্ষে ছিল সংখ্যালঘু তামিল জনগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন লিবারেশন টাইগারস অব তামিল ইলম, যা এলটিটিই নামেই পরিচিত৷ কখনো যুদ্ধ আর কখনো বা সন্ধি - এই নিয়েই চলছিল৷ তবে ২০০২ সালে যে সন্ধি হয়, তা ভেঙে যাওয়ার পরই সাঁড়াশি অভিযানে নামানো হয় সেনাবাহিনীকে৷ অনেক রক্তক্ষয়ের পর গত বছর এলটিটিই অধ্যুষিত উত্তরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ নেয় সরকার৷ নিহত হয় বিদ্রোহী নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরন৷

মানবাধিকার সংগঠনগুলো শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে, বিদ্রোহী দমন অভিযানে গণহারে মারা পড়ছে বেসামরিক তামিল৷ ঘটেছে যুদ্ধাপরাধও৷ তবে তাতে কান না দিয়েই অভিযান অব্যাহত রাখেন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ রাজাপাকসে৷ যুদ্ধাপরাধ তদন্তের দাবি আসতে থাকে জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশ থেকেও৷ এই সব চাপের মুখে আট সদস্যের কমিশন গঠন করে সরকার৷ যদিও কমিশনের কর্ম পরিধি বলে দেয়, যুদ্ধাপরাধ নয়, যুদ্ধের কারণ তদন্ত করবে তারা৷

আজ বুধবারই কমিশনের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হল৷ সাত দিনে বিভিন্ন জনের সাক্ষ্য নেবেন কমিশনের সদস্যরা৷ এর মধ্যে পাঁচ দিন কাজ করবেন রাজধানী কলম্বোয়, বাকি দুদিন তামিল অধ্যুষিত বাবুনিয়া জেলায়৷ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, ২০০২ সালে সন্ধি কেন ভেঙে গিয়ে কেন সংঘাত শুরু হলো, এর জন্য দায়ী কে - তার অনুসন্ধান চালাবে কমিশন৷ একইসঙ্গে ভবিষ্যতে সংঘাতের মতো পরিস্থিতি এড়াতে কী কী করতে হবে, কমিশনকে তার একটা সুপারিশও দিতে বলা হয়েছে৷ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে কমিশনকে সময় দেওয়া হয়েছে ছয় মাস৷

Der Tamilische Rebellenführer Velupillai Prabhakaran im Februar 2009
নিহত বিদ্রোহী নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরনছবি: AP

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউমেন রাইটস ওয়াচ মনে করছে, এই কমিশনের কাজ নিরপেক্ষ হবে না৷ তারা নিরপেক্ষ সংস্থা দিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে৷ সংগঠনের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গুলি বার্তা মাধ্যমকে বলেন, শ্রীলঙ্কা সরকারের দায়িত্বশীল আচরণের কোনো নজির দেখা যাচ্ছে না৷ কমিশন গঠন সরকারের এক ধরনের কৌশল বলে মনে করছেন তিনি৷ মিনাক্ষী বলছেন, সরকারের উদ্দেশ্য তদন্তের নামে সময়ক্ষেপন৷ যাতে ধীরে ধীরে বিষয়টি চাপা পড়ে যায়৷ এই কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না বলে মনে করছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও৷ মার্কিন কংগ্রেসের ৫৭ জন সদস্য তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন৷ শ্রীলঙ্কা সরকার যেন নিরপেক্ষ তদন্ত করে সে জন্য চাপ দিতে হিলারির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা৷ দাবি উঠেছিল, জাতিসংঘের মাধ্যমে তদন্তের৷ সংস্থার মহাসচিব বান কি মুন একটি প্রস্তাবও দিয়েছিলেন৷ তবে শ্রীলঙ্কা সরকার তাতে রাজি হয়নি৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ