1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ‘গ্লোবাল ফান্ড'

৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১

এইডস, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মার মত মহামারি দেখা দেয়ার মূল কারণ দারিদ্র ও সামাজিক দুরবস্থা৷ বিশ্বে প্রতিবছর দুই কোটি মানুষ মারা যায় এই সব রোগে৷

https://p.dw.com/p/10DtJ
এই শিশুদের এইডস থেকে দূরে রাখতে হবেছবি: UNI

অনেকেরই ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই৷ এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য একটা বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷

চিকিৎসা ক্ষেত্রে নানা সমস্যা দূর করার জন্য উদ্যোগের কোনো অভাব নেই৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল এইডস যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া দূরীকরণে ‘গ্লোবাল ফান্ড'৷ বিভিন্ন দেশের সরকার, সুধী সমাজ, রোগী ও চিকিৎসকদের মধ্যে একটা সমন্বয় গড়ে তোলাই হল এই ফান্ডের মূল লক্ষ্য৷ ১৪৯ টি দেশের ৬০০ কর্মসূচির জন্য এই ফান্ড ১৯,৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ধার্য করেছে৷ ৩০ লক্ষ মানুষ এইডস'এর ওষুধ পেয়েছেন, ৭৭ লক্ষ মানুষ পেয়েছেন যক্ষ্মার চিকিৎসা৷ এছাড়া ম্যালেরিয়া রোধে ১৬ কোটি মানুষকে দেয়া হয়েছে মশারি৷ তবে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে সুষ্ঠু এক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি এই ফান্ড৷ এই প্রসঙ্গে ইকুয়াডোরের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাভিড চিরিবোগা আগের সরকারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘সরকারকে এক্ষেত্রে সম্পৃক্ত করা হয়নি৷ বেসরকারি সংস্থাগুলির হাত শক্ত হয়েছে সত্যি, কিন্তু সবমিলিয়ে প্রচেষ্টা তেমন সফল হয়নি৷ বছর দশেক ফান্ডের সহায়তা পাওয়া সত্ত্বেও আগের সরকারের আমলে স্বাস্থ্যবিষয়ক কোনো সুষ্ঠু পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়নি৷ তাহলে বোঝা যায় কোথাও যেন গলদ রয়েছে৷''

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতীয় পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একত্রে বসার পরামর্শ দেন এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে সহযোগিতামূলক কাজ করার আহ্বান জানান৷

অ্যামেরিকার এইডস সাহায্য সংস্থা ‘পেপফার'এর সমন্বয়কারী এরিক গুসবি অবশ্য ইকুয়াডোরের মন্ত্রীর সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন৷ তাঁর মতে, কোন কোন বিশেষ রোগের দিকে মনোনিবেশ করা হলেও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সামগ্রিক একটা পরিকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে৷ এরিক গুসবি জানান, ‘‘আগের কর্মসূচি তো চলতেই থাকবে তার সঙ্গে আমরা মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেব৷ পরিবার পরিকল্পনা, টিকা, পরিষ্কার পানি ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ ব্যাধি বিষয়ক পরামর্শ কেন্দ্র খোলা হবে৷ ডায়বেটিসের মত ক্রনিক অসুখের পরীক্ষা নিরীক্ষা এইডসের জন্য নির্ধারিত গবেষণাগারে করার সুযোগ থাকবে৷ এইডস চিকিৎসা কেন্দ্রের ওষুধের দোকানগুলিতে অন্যান্য রোগের ওষুধও পাওয়া যাবে৷''

এরিক গুসবি আরো বলেন, এর ফলে অর্থের সাশ্রয় হবে এবং অন্যান্য অসুখ বিসুখও ভাল করা সম্ভব হবে, বাঁচানো যাবে অনেক জীবনও৷ ব্রাজিলের ‘গ্লোবাল হেল্থ সেন্টার'এর পরিচালক পাউলো বুস এই কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, তবে আমাদের প্রয়োজন সারা বিশ্বের জন্য সুষ্ঠু স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা, যা একটি সামাজিক প্রশ্নও৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘স্বাস্থ্য একটি সামাজিক বিষয়৷ তাই সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে একে সম্পৃক্ত করতে হবে৷ জাতিসংঘের সহস্রাব্দের লক্ষ্যে স্বাস্থ্যের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, কেননা স্বাস্থ্যের উন্নয়নের সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ও জড়িত যেমন, দারিদ্র, পরিবেশ জাতি ও লিঙ্গ বৈষম্য ইত্যাদি৷''

স্বাস্থ্য নিয়ে যে সব প্রশ্ন এখন উঠেছে, তা নতুন নয়৷ তবে পারস্পরিক আদান প্রদান ও সুষ্ঠু সমন্বয় ব্যবস্থার জন্য এই আলোচনাটা প্রয়োজন, বলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাব্লিউ এইচ ওর উপপরিচালক সুজানে ভেবার মোসডর্ফ৷ তিনি বলেন, ‘‘প্যারিস ঘোষণায় আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার বাস্তবায়নই এখন আমাদের লক্ষ্য৷ এইডস নিয়ে মাথা ঘামানো ও গ্লোবাল ফান্ড গড়ে তোলাটা খুবই জরুরি ছিল৷ তবে বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে একটা সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে আমাদের৷ তা না হলে আমরা এগিয়ে যেতে পারবনা৷ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আরো একবার আহ্বান যে, সবাইকে এক সাথে দাঁড়াতে হবে, বিভিন্ন দেশকে সাহায্য করতে হবে৷ কেননা জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক আকারে স্বাস্থ্যনীতি গড়ে তুলতে না পারলে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা দেয়া সম্ভব নয়''৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন