1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজপথে জনদুর্ভোগ চরমে

১৮ এপ্রিল ২০১৭

রবিবার থেকে ঢাকায় ‘সিটিং বাস সার্ভিস' বন্ধ৷ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআরটিএ৷ তবে এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমেনি৷ লাঞ্ছিত হয়েছেন সাংবাদিকরা৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ঘটনার কথা উঠে এসেছে৷

https://p.dw.com/p/2bOAa
Bangladesch Verkehrschaos in Dhaka
ছবি: DW/M. Mamun

সোমবারও ঢাকায় ‘সিটিং সার্ভিস' ও ‘গেটলক' বাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)৷ অভিযানের কারণে আগের দিনের মতোই সব বাস ‘লোকাল' হিসেবে চলেছে৷ তবে যাত্রীদের কাছ থেকে আগের মতোই আদায় করা হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া৷ অনেক বাসে ছিল না ভাড়ার তালিকা৷

অভিযানের কারণে সোমবার অনেক বাস রাস্তায় নামেনি৷ যাত্রীর তুলনায় বাসের সংখ্যা ছিল খুবই কম৷ তাই বিকেলে অফিস ছুটির পর চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা

ভাড়া নিয়ে বচসায় বিভিন্ন স্থানে যাত্রীরা লাঞ্ছিত হয়েছেন৷ সমকালের স্টাফ রিপোর্টার ইন্দ্রজিৎ সরকারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা৷ এছাড়া বাস শ্রমিকদের পিটুনিতে আহত হয়েছেন একাত্তর টিভির প্রযোজক ও সংবাদ উপস্থাপক আতিক রহমান৷

এ প্রসঙ্গে কল্লোল মুস্তাফা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘৮০ শতাংশ আসন পূর্ণ হলেই চলাচল করবে – এই শর্তেই তো লোকাল বাসের ভাড়া ঠিক করা হয়! আর লোকাল সার্ভিসের বিপরীত তো সিটিং সার্ভিস হতে পারে না৷ লোকাল বাসের বিপরীত হতে পারে ডাইরেক্ট বাস৷ লোকাল বা ডাইরেক্ট উভয়েই সিটিং বাস হবে৷ লোকাল বাস যাত্রাপথের মাঝে নির্ধারিত বিভিন্ন পয়েন্টে থেমে যাত্রী উঠানামা করাবে আর ডাইরেক্ট বাস মাঝপথে কোথাও না থেমে যাত্রী পরিবহন করবে৷ উভয় ক্ষেত্রেই যাত্রী কিলোমিটার হিসেবে নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ করবে৷ ডাইরেক্ট বাস মাঝপথ থেকে যাত্রী উঠাতে পারবে না৷ কিন্তু কোনো যাত্রী যদি মাঝপথে নেমে যেতে চায় তাহলে তাকে পুরো ভাড়া পরিশোধ করতে হবে, যেহেতু তার সিটটি খালি যাবে৷ এখন এই সোজা সাপ্টা নিয়মটা যদি সরকার বাস্তবায়ন করতে না পারে, যদি পরিবহন সেক্টর কতিপয় মাফিয়ার হাতে ছেড়ে দিয়ে রাখে, তাহলে যা হওয়ার কথা তা-ই হচ্ছে৷ সিটিং বাসের নামে যাত্রীর কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নেয়া হচ্ছে, কিন্তু মাঝ পথ থেকে থেমে সিটের অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া হচ্ছে এবং এক সিট বার বার বেচা হচ্ছে৷''

এই সমস্যার যে সমাধানগুলো তিনি উল্লেখ করেছেন তা হলো – ‘‘প্রতিটি রুটে গণপরিবহন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলে, নিয়মিত বিরতিতে ছাড়লে, রাষ্ট্রীয় তদারকি থাকলে – বাসগুলো ঠাসাঠাসি করে বাড়তি যাত্রী নিতেই পারতো না৷ সিটিং সার্ভিসের নামে বাড়তি ভাড়া নেয়া অবশ্যই বন্ধ করা দরকার৷ কিন্তু সেই সাথে এই মিনিমাম নিয়মটুকু নিশ্চিত না করে সিটিং সার্ভিসকে শুধু লোকাল সার্ভিস করলে কোনো লাভ হবে না, মানুষের ভোগান্তি বাড়বে বই কমবে না৷''

আনাম খুরশিদ লিখেছেন, ‘‘কষ্ট হলেও এদের কাছে মাথা নোয়ানো যাবে না! ঢাকার গণ পরিবহনের ভাড়া এই সিটিং-ডাইরেক্ট সার্ভিসের নামে মানুষের নাগালের বাইরে নিয়ে গেছে এই লুটেরার দল৷''

জুবায়ের আহমেদ লিখেছেন, ‘‘পরিবহণ খাতের নৈরাজ্য সহ্য ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে৷ সরকারের উচিত শক্ত হাতে এর লাগাম টেনে ধরা৷ সিটিং সার্ভিস বন্ধ হওয়ার পরে লোকাল বাসে ভাড়া আরো বেশি নেয়া হচ্ছে৷ আর সেই বর্ধিত ভাড়ার চার্ট দেখতে চাওয়ায় মিরপুরগামী জাবালে নূর পরিবহণের কর্মচারিদের হামলার শিকার হয়েছেন একাত্তর টেলিভিশনের বার্তা প্রযোজক আতিক রহমান৷ এছাড়া নির্দিষ্ট গন্তব্যে না যাওয়ায় ভাড়া ফেরত চাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নিউভিশনের শ্রমিকরা দৈনিক সমকালের ইন্দ্রজিৎ সরকারকে মারধর করেছে৷ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই!!!

সাংবাদিক মাহবুব স্মারক লিখেছেন, ‘‘আমার ভাইয়ের গায়ে রক্ত কেন? কী দোষ ছিল তার? বাসে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছিল, ভাড়ার চার্ট দেখতে চেয়েছিল! তারপর কী হয়েছে সেটা দেখাই যাচ্ছে৷ প্রতিবাদ জানাই!''

হোসাইন সোহেল লিখেছেন, ‘‘এইসব হচ্ছেটা কী? জাবালে নূর সিটিং সার্ভিস বাসে ভাড়ার চার্ট দেখতে চাওয়ায় বাস স্টাফরা একাত্তরের প্রযোজক আতিক রহমানকে বেধড়ক মারধর করেছে৷ কীসের এত প্রভাব? কার এত প্রভাব?''

সাংবাদিক দীপন দেওয়ান সোমবার লিখেছেন, ‘‘আজ ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহন কম, তাই নগরীর রাস্তায় রাস্তায় ঈদের আনন্দ৷ আরে মশাই, সিটিং সার্ভিস বন্ধ করে লোকাল ভাড়ায় বাস চালানোর সিদ্ধান্ত দিলেন আপনারা৷ আবার, সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে রাস্তায় বাসও নামাচ্ছেন না৷ আপনারাই পোলার বাপ, আপনারাই মেয়ের বাপ৷ আর আমরা জনগণ ঢেউটিন৷ সরকারের উচিত, টার্মিনালগুলোতে গিয়ে বাস বন্ধ রাখার অপরাধে রুট পারমিট বাতিল করে দেয়া৷''

মাহমুদ হাসান ফেসবুকে ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘‘মমতাজের ‘তুই লোকাল বাস' গানটির ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে এবং পরিবহন সেক্টরের হর্তাকর্তাদের মনে দাগ কাটার কারণে তারা ঘোষণা দিলেন ঢাকায় আর কোনো সিটিং সার্ভিস বাস থাকবে না, যা থাকবে তার সব লোকাল বাস, ‘‘বন্ধু তুই লোকাল বাস , বন্ধু তুই লোকাল বাস ,আদর কইরা ঘরে তোলোস, ঘাড় ধইরা নামাস, বন্ধু তুই লোকাল বাস...৷''

সংকলন: অমৃতা পারভেজ

সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান