1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রিসাইক্লিং – আপসাইক্লিং

গ্যোনা কেটেলস/এসবি২৩ আগস্ট ২০১৩

বার্লিনের এক ডিজাইনার ফেলে দেওয়া সাইকেলের টিউব থেকে তৈরি করেন হাতের ব্যাগ, চশমা রাখার বাক্স, আইপ্যাড-এর খাপ সহ নানা রকমের জিনিস-পত্র৷ দোকানে ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে তিনি এই সব পণ্য বিক্রি করেন৷

https://p.dw.com/p/19VDP
ছবি: Richard Fuchs

কাটিয়া ভ্যার্নার আবর্জনার স্তূপ ঘাঁটেন৷ ফেলে দেওয়া সাইকেলের টিউব পেলেই তিনি খুব খুশি হন৷ তাঁর সব কাজ তো রবারের পাইপ দিয়েই৷ তিনি বলেন, ‘‘দারুণ উপকরণ এটা৷ পানি ঢুকতে পারে না, বাতাস ঢুকতে পারে না৷ টেকসইও বটে৷ কত কাজেই না লাগে! এমন জিনিস পুড়িয়ে দিলে কেমন লাগে!'

আবর্জনার স্তূপে পড়ে থাকলে এসব বাতিল জিনিস-পত্র সত্যি পুড়িয়ে ফেলা হতো৷ কাটিয়ার হাতে এসে এ সবের যেন পুনর্জন্ম হয়৷ কোনো টুকরো হয়ে ওঠে হাতের ব্যাগ, কোনোটা আবার আইপ্যাড-এর খাপ৷ বার্লিনে তাঁর নিজের দোকান৷ সেখানে সব কিছু হাতে তৈরি৷

কাটিয়া টায়ার ও সাইকেলের দোকানে গিয়ে সাইকেল, মোটরসাইকেল বা ট্রাকের টিউব সংগ্রহ করেন৷ তা দিয়ে কী তৈরি করা যায়, তা পাইপের আকারের উপর নির্ভর করে৷ তিনি বলেন, ‘‘আসলে ক্রিয়েটিভ বা সৃজনশীল প্রক্রিয়া কেমন হবে, তা সবসময় আগে থেকে বলা যায় না৷ যেমন আমার হাতে রবারের পাইপ রয়েছে৷ আমি ছুঁয়ে দেখে সেটি অনুভব করছি৷ ভাবছি, কীভাবে কাজে লাগানো যায়৷ মাঝে মাঝে আগেই ঝাপসা একটা ধারণা মনে আসে৷ আবার এমনও হয়, কাজের সময় সেই আইডিয়া একেবারে বিসর্জন দিয়ে একেবারে নতুন কিছু করছি৷''

Ambiente 2012
বাতিল টায়ারের টিউব হয়ে উঠতে পারে অনেক কিছুছবি: Richard Fuchs

৪৫ বছর বয়স্ক এই ডিজাইনার ২০০৭ সাল থেকে রবারের পাইপ নিয়ে কাজ করছেন৷ প্রশিক্ষণ ছিল গ্রাফিক ডিজাইনিং-এ৷ তাই হাতেনাতে নতুন কাজ শিখতে হয়েছে৷ রবারের পাইপ হাতের কাছেই ছিল৷ কাটিয়া বলেন, ‘‘আমি সাইকেল ও মোটর সাইকেল চালাই৷ তাই টিউব বা পাইপের অভাব নেই৷ প্রথমে পরীক্ষা করে দেখতাম পাইপ দিয়ে কী করা যায়৷ হঠাৎ মনে হলো, পাইপ থেকে শুধু কিছু কেটে নিয়ে তারপর তা দিয়ে কিছু তৈরি করাই যথেষ্ট নয়৷ গোটা একটা জিনিসও তৈরি করা যেতে পারে৷ যেমন একেবারে প্রথম দিকে আমি একটা চাবির রিং তৈরি করেছিলাম৷ তার মধ্যে বাতাস ভরা থাকায় পানিতে পড়ে গেলেও তা ভাসতে পারতো৷''

এখন বড় আকারে অনেক পণ্যের উৎপাদন শুরু হয়ে গেছে৷ যেমন মোটর সাইকেলের টিউব থেকে চশমার খাপ৷ কাটিয়া ভ্যার্নার-এর ব্র্যান্ডের নাম কেডাব্লিউডি৷ সাধারণ মানিব্যাগ থেকে শুরু করে বড় হাতের ব্যাগ তৈরি করেন তিনি৷

সাইকেলের নানা চিহ্নের কারণে এগুলি অনবদ্য হয়ে ওঠে৷ আবর্জনা অথবা ফ্লি মার্কেট থেকে জোগাড় করা জিনিসপত্র৷ কাটিয়া বললেন, ‘‘মাঝে মাঝে আমাকে বেশ কথা শুনতে হয়৷ আবর্জনা থেকে আবার রোজগার! আবার অনেকে উৎসাহ নিয়ে হলেন, বাঃ – দারুণ তো! প্রায়ই ভাবি, বয়স্ক মানুষও কত উৎসাহ পেতে পারে৷ তারা বলেন, কেউ তো ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে ভালো কিছু করছে! তখন আমার বেশ ভালো লাগে৷''

বার্লিনে নিজের দোকানে ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাটিয়া তাঁর পণ্য বিক্রি করেন৷ ছোট ব্যাগের দাম ২০ থেকে ৩৫ ইউরো৷ ‘পাইপ-বেল্ট' এখন সেল-এ বিক্রি হচ্ছে – সঙ্গে মানানসই বেল্ট৷ বাতিল জিনিস-পত্র ভালোভাবে কাজে লাগাতে আজকাল ‘আপসাইক্লিং'-এর যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, কাটিয়ার ব্যাগগুলি তারই উদাহরণ৷ কাটিয়া বললেন, ‘‘ডিজাইনার হিসেবে অবশ্যই আমি একটা দায়িত্ব অনুভব করি৷ পরিবেশের বিষয়েও আমি সচেতন৷ কিন্তু সেটাই সবকিছু নয়৷ কিন্তু আসল তাগিদ আসে, যখন আমি এই উপকরণ হাতে পেয়ে তা দিয়ে কাজ শুরু করি৷''

নতুন আইডিয়ারও অভাব নেই৷ যেমন আসবাবপত্র অথবা ফল রাখার পাত্রের মতো সংসারের জিনিস-পত্র৷ এই প্রথম তিনি বার্লিনে এক শিল্প প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন৷ সেখানে তিনি আবর্জনা থেকে তৈরি একেবারে নতুন জিনিস-পত্র দেখাবেন৷

বলা বাহুল্য, সাইকেল চালাতে চালাতেই তাঁর মাথায় অনেক আইডিয়া আসে৷ কাটিয়া বললেন, ‘‘পথেই অনেক আইডিয়া আসে৷ শুধু চারিদিকে ভালোভাবে তাকালেই হলো৷ সেখান থেকে আমি অনেক অনুপ্রেরণা পাই৷ নতুন নতুন কাজের অনেক পথ তখন খুলে যায়৷''

কাটিয়া ভ্যার্নারকে নতুন করে চাকা আবিষ্কার করতে হয় না৷ তবে চাকা খুলে আলাদা করলে অনেক কিছু সৃষ্টি হয়৷