1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সারদা তদন্তে গতি

শীর্ষ বন্দোপাধ্যায়, কলকাতা২৩ এপ্রিল ২০১৪

ঠিক এক বছর আগে ফাঁস হওয়া সারদা আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত হঠাৎ নতুন গতি পেয়েছে ভারতে৷ স্বাভাবিকভাবেই ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে যা অস্বস্তিতে ফেলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে৷ এবার শুধু সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষা...

https://p.dw.com/p/1Bm9S
ছবি: DW/P. Mani Tewari

সারদা আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত শেষ পর্যন্ত ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-এর হাতেই তুলে দেওয়া হবে কিনা, সে সম্পর্কে কয়েক দিনের মধ্যেই রায় ঘোষণা করতে চলেছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট৷

এক বছর আগে বিপুল অঙ্কের এই আর্থিক কেলেঙ্কারি ধরা পড়ার পর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এক বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছিল৷ সেই স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম, সংক্ষেপে ‘সিট' সারদা তদন্তে খুব সামান্যই এগোতে পেরেছে৷ দিন কয়েক আগে সারদা কেলেঙ্কারির প্রথম বর্ষপূর্তিতে কলকাতার এক ইংরাজি দৈনিক তাদের প্রথম পাতার প্রধান শিরোনামে তাই বক্রোক্তি করেছে যে, ‘সিট' তাদের নাম-মাহাত্ম্য প্রমাণ করেছে৷ অর্থাৎ, কার্যত গোটা কেলেঙ্কারির ওপর বসে থেকেছে রাজ্য সরকারের বিশেষ তদন্তকারী দল৷ কোনো দিকেই বেশিদূর এগোতে পারেনি৷

যেমন, সাধারণ মানুষের থেকে আত্মসাৎ করা হাজার হাজার কোটি টাকা সারদা সংস্থার মালিক সুদীপ্ত সেন কোথায় পাচার করেছেন, তার হদিস গত একবছরেও পায়নি রাজ্য পুলিশ৷ গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে তাই সঙ্গত কারণেই জানতে চেয়েছিল আদালত যে, টাকার খোঁজ কেন পাওয়া গেল না! সেদিনও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে আরও কিছুদিন সময় চেয়ে আদালতকে আশ্বাস দেওয়া হয় যে তদন্ত প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, আর কিছুদিনের মধ্যেই চাজর্শিট তৈরি হয়ে যাবে৷ কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, আর সময় দেওয়া যাবে না৷ শুনানি সেদিনই শেষ হয় করতে হবে৷

এদিকে কয়েকদিন আগে ভারতের কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, সংক্ষেপে ইডি, জেলবন্দি সুদীপ্ত সেনের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী এবং প্রথম পক্ষের ছেলে ও ছেলের বউকে হঠাৎই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে৷ এঁরা সবাই এতদিন কলকাতায় থাকলেও রাজ্য সরকারের পুলিশ তাঁদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি৷ ইডি দাবি করেছে, ধৃত তিনজনকে, বিশেষ করে সুদীপ্তর বড় ছেলে ও ছেলের বউকে জেরা করে সারদার গোপন সম্পত্তি সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে৷

Master.
‘‘বিজেপি ক্ষমতায় এলে দুর্নীতি বা আর্থিক কেলেঙ্কারির দায়ে অভিষুক্ত একটি নেতাকেও ছাড়া হবে না!’’ছবি: Reuters

এর পরই ইডি সমন পাঠিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবারের লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে৷ অর্পিতা নিজে সারদা গোষ্ঠীর একটি টিভি চ্যানেলের প্রধান ছিলেন এবং প্রথম তিনিই সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে বেতন না দেওয়ার দায়ে অভিযোগ করেছিলেন৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই সুদীপ্ত সেনকে প্রথম গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ কিন্তু সারদার সঙ্গে অর্পিতার যোগাযোগও এবার খতিয়ে দেখছে ইডি৷ শোনা যাচ্ছে, এর পর রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায় এবং আরও কয়েকজন তৃণমূল নেতাকে সমন পাঠাতে পারে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট৷

এর পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছেন মদন মিত্র থেকে শুরু করে খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কারণ লোকসভা ভোটের সময় সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হঠাৎ তৎপর হয়ে ওঠার পিছনে বিদায়ী কেন্দ্রীয় সরকার তথা কংগ্রেসের চক্রান্ত দেখছে তৃণমূল৷ মমতা এক জনসভায় বলেছেন, সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে যদি তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের ডেকে পাঠায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, তা হলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম, তাঁর স্ত্রী এবং ছেলেকেও ডেকে পাঠাতে হবে৷ অন্যদিকে মদন মিত্র বলেছেন, রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেলে এবং মেয়ের কাছেও সারদার টাকা যেত বলে তাঁর কাছে খবর আছে৷ তারও তদন্ত করতে হবে৷ রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নরও এই কেলেঙ্কারির দায় এড়াতে পারেন না, বলেছেন মদন মিত্র৷

বস্তুত সুপ্রিম কোর্টও এই মামলায় কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি এবং রিজার্ভ ব্যাংকের ভূমিকার সমালোচনা করেছে৷ পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের নেতা তথা বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র মন্তব্য করেছেন, কান টানলে একদিন মাথাও আসবে, এটাই তাঁদের আশা! আর এদিকে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী বলছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে দুর্নীতি বা আর্থিক কেলেঙ্কারির দায়ে অভিষুক্ত একটি নেতাকেও ছাড়া হবে না! প্রত্যেকের বিচার হবে, সাজা হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য