1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন

সমীর কুমার দে, ঢাকা২১ আগস্ট ২০১৩

সীমান্ত চুক্তি অনুমোদনে সংবিধান সংশোধন বিল রাজ্যসভায় পেশ করার তৃতীয় চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে ভারতে৷ তৃণমূল কংগ্রেসের তুমুল বিরোধিতার কারণে বিলটি রাজ্যসভায় উপস্থাপনই করা যায়নি৷ বিষয়টি ভালো চোখে দেখছেন না বাংলাদেশি বিশ্লেষকরা৷

https://p.dw.com/p/19Tgq
TO GO WITH Bangladesh-India-border-history-enclaves,FEATURE by Shafiq AlamIn this photograph taken on December 10, 2010, an Indian security official opens the gate of Indian ruled Rangpur some 350 kms north from Dhaka. Little bits of India are in Bangladesh, and little bits of Bangladesh are in India. The existence of 'enclaves' on either side of the border is a bizarre anomaly that might finally be solved by a swap. The islands of land result from ownership arrangements made centuries ago between local princes, surviving partition of the sub-continent in 1947 after British rule, and Bangladesh's 1971 war of independence with Pakistan. AFP PHOTO (Photo credit should read STRDEL/AFP/Getty Images)
ছবি: AFP/Getty Images

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহিদুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, এবার বিলটি রাজ্যসভায় তোলার চেষ্টা করে যে কংগ্রেস ব্যর্থ হয়েছে তাতে কংগ্রেস সরকারের আন্তরিকতাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে৷ যারা বিরোধীতা করবে তাদের সঙ্গে আগে থেকে আলোচনা করলেই তো হতো৷ আসলে প্রতিবেশীদের দেখাতেই কোনো আলোচনা ছাড়া বিলটি তোলার চেষ্টা করা হয়েছে৷ তাই বিলটি তারা কখনই পেশ করতে পারবে না বলে মনে করেন তিনি৷

ড. শাহিদুজ্জামান বলেন, এর আগেও আসামের বিরোধী দলের গণ পরিষদের দু-এক জন সদস্য বিরোধীতা করার কারণে বিলটি তোলা যায়নি৷ তখন স্পিকার চাইলে ঐ সদস্যদের বহিষ্কার করতে পারতেন৷ কিন্তু তা করা হয়নি৷ আসামের গণ পরিষদের দু-এক জন সদস্য কিভাবে এত শক্তিশালী হলো? আর এখন তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধীতায় যোগ দিয়েছে৷ ফলে আর সম্ভব হবে না৷ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কংগ্রেস সরকার আসলে এটি চাপা দিতে চাচ্ছে৷ তারা আন্তরিক হলে অনেক আগেই বিলটি রাজ্যসভায় তোলা সম্ভব হতো৷

Indian Border Security Force soldiers patrol in the early morning fog along barbwire fence along the India Bangladesh border in Jaipur village near Agartala, capital of India?s northeastern state Tripura, Monday, Dec. 4, 2006. Security along the border has been intensified following Political instability and continuing violence in Bangladesh. India shares over 4,000 kilometers (2500 miles) border with Bangladesh. (AP Photo/Ramakanta Dey)
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তছবি: AP

বাংলাদেশে সীমান্ত নিয়ে গবেষণা করা এই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক বলেন, ভারতের সঙ্গে ভূমি নিয়ে চুক্তি করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ৷ ছোট ছোট গ্রুপের বাধার কারণে তারা একটি বিল সংসদে তুলতে পারে না, এটা বিশ্বাস করা কঠিন৷ আন্তরিকতা থাকলে সবার সঙ্গে আগে থেকেই আলোচনা করে একটা সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করতেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ৷ কিন্তু তিনি সে চেষ্টাই করেননি৷ তাঁর মতে, কংগ্রেস আসলে এসব করে সময় নষ্ট করছে৷ আর প্রতিবেশীদের দেখাচ্ছে যে, দেখো, আমরা কত আন্তরিক৷ কিন্তু তীব্র বিরোধিতার কারণে বিলটি তুলতে পারছি না৷ তিনি মনে করেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বিরোধী দলীয় নেতা অরুন জেটলির সঙ্গে কথা বললেন তখন তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসের বিষয়টিও বলা হলে তিনি আগেই সবার সঙ্গে কথা বলে ঠিক করে রাখতেন৷ কিন্তু কংগ্রেস বিষয়গুলো গোপন কর চলেছে যাতে বিলটি না তোলা যায়৷

ড. শাহিদুজ্জামান মনে করেন, কংগ্রেস সরকার আপাতত আর এই বিলটি রাজ্যসভায় তুলতে পারবে না৷ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, উচ্চ পর্যায়ে এমনিতেই কঠিন মনস্তাত্বিক লড়াই চলছে৷ পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের নতুন করে সংঘাত শুরু হয়েছে৷ ফলে এই বিষয়ে খুব একটা মনোযোগ দেয়ার সুযোগ নেই মনমোহন সিং-এর সরকারের৷ তিনি বলেন, আসলে পানি, ভূমি কোনো কিছুই সঠিকভাবে ভারতের কাছ থেকে বুঝে পাওয়া সত্যিই কঠিন৷

Name of the photographer/Creditline: © Shaikh Azizur Rahman. Picture taken in: February 2012. Location: Kolkata Description of the picture: Cows being taken to an Indian cattle market, close to Bangladesh border zugeliefert von asia.english/Sarah Berning
সীমান্তের নিত্যদিনের ছবি এটি!ছবি: Shaikh Azizur Rahman.

বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে তিস্তার পানি চুক্তি ও সীমান্ত চুক্তি খুবই প্রয়োজন ছিল৷ কিন্তু ভারতের মতো মিত্রের কাছ থেকে নির্বাচনের আগে এই ধরনের সহযোগিতা না পেয়ে শেখ হাসিনার সরকার খুবই হতাশ৷ নির্বাচনে এর প্রভাবও পড়তে পারে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি তাঁর দিল্লি সফরে স্বীকার করেছিলেন৷ আর এ কারণেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়মিত ভারতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে এমনকি বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রক্ষা করে আসছিলেন৷

প্রসঙ্গত, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ বাধার মুখে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনী বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন করতে আবারও ব্যর্থ হয়েছেন৷ গত সোমবার বিলটি উত্থাপন করতে চাইলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস ও আসাম গণপরিষদের (এজিপি) সংসদ সদস্যরা বাধা সৃষ্টি করেন৷ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার কর্মসূচিতে সংবিধান সংশোধনী বিলটি রাখা ছিল৷ রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কু্যরিয়েন বিলটি উত্থাপন করার বিষয় ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আসাম গণপরিষদ ও তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসনের সামনে গিয়ে তাকে ঘিরে ধরেন৷ বারবার বলতে থাকেন, বিলটি তারা উত্থাপন করতে দেবেন না৷ পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠায় অধিবেশন ১০ মিনিটের জন্য মুলতবি করতে বাধ্য হন ডেপুটি চেয়ারম্যান৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য