1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সু চির মুক্তি এবং মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ

২১ নভেম্বর ২০১০

দীর্ঘ গৃহবন্দি দশার পর মুক্তি পেলেন মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক অং সান সু চি৷ মুক্তি পাবার পরে সু চি বলেন, মিয়ানমারে একদিন গণতন্ত্র আসবেই৷ মুক্তি তো পেলেন সু চি, এবার কী তবে মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ বদলাবে?

https://p.dw.com/p/QEcR
মিয়ানমার, অং সান সু চি, Myanmar, Aung San Suu Kyi
অং সান সু চিছবি: AP

মুক্তি পাবার পরে সু চি মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের কথাও বলেছেন৷ বলেছেন আবারও আটক হবার ভয়ে ভীত নন তিনি৷ গৃহবন্দি থাকার সর্বশেষ মেয়াদ শেষ হবার পরে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা অবশেষে ১৩ নভেম্বর মুক্তি দিলেন নোবেল বিজয়ী অং সান সু চি-কে৷ তারপরেই প্রশ্ন উঠেছে মিয়ানমারের ওপরে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে এই মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি কতোটা কাজ করবে সেই ব্যাপারটি নিয়ে৷ মানুষের মনে আরো অনেক প্রশ্ন৷ কিন্তু সেইসব তো পরের কথা৷ এখন সবার আগ্রহ, সু চি কী ভাবছেন, কী করছেন, দেশের রাজনীতি নিয়ে কী তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ, এইসব ব্যাপারে৷

গত ২১ বছরের মধ্যে ১৫ বছরই আটক ছিলেন গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী সু চি৷ মুক্তি পাবার কয়েকদিন আগে থেকেই ছড়িয়ে পড়ে যে সু চি মুক্তি পেতে যাচ্ছেন৷ তাঁকে মুক্তি দেবার ঠিক আগের দিন জান্তা সরকারের লোকজনও নিজেদের নাম পরিচয় গোপন রেখে জানান যে সু চি মুক্তি পেতে পারেন পরের দিনই৷ সেই থেকেই সু চিকে যাঁরা ভালোবাসেন তাঁরা, তাঁর দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির সমর্থক, সর্বোপরি গণতন্ত্রমনা মানুষের ভিড় জমতে থাকে সু চির বাড়ির সামনে৷ সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজনকেও ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় সেখানে৷ সবার চিন্তা ছিল, সত্যিই শেষ হতে যাচ্ছে কি সু চির আটকাবস্থা?

শেষ পর্যন্ত আসে সেই মহেন্দ্রক্ষণটি৷ সু চির মুক্তিতে আনন্দে ফেটে পড়ে আপামর মানুষ৷

মিয়ানমার, অং সান সু চি, Myanmar, Aung San Suu Kyi
মুক্তির পর ভক্তদের মাঝে সু চিছবি: AP

বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই আপোষহীন, অসমসাহসী, গণতন্ত্রের মানসকন্যাকে মুক্ত বাতাসে স্বাগত জানিয়ে বার্তা পাঠান৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁর মুক্তিকে ‘দীর্ঘ প্রতিক্ষিত' বলে অভিহিত করেছেন৷ জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, সু চি এক ‘উদ্দীপনা'৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও তাঁর মুক্তিকে স্বাগত জানান৷

সু চি-কে মুক্তি দেওয়া হলো ঠিকই৷ কিন্তু তা করা হলো মিয়ানমারে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরে৷ কুড়ি বছরের মধ্যে দেশটিতে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠান হলো ৭ নভেম্বর৷ ঐ নির্বাচনে জয়লাভ করেছে সামরিক বাহিনী সমর্থিত রাজনৈতিক দলটি৷ সু চি মুক্তি পাবার পরপরই হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, লক্ষ্য অর্জনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে৷ এর পরে বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সু চি বলেন, মিয়ানমারের সমস্যা সমাধানে আলোচনার জন্যে তিনি প্রস্তুত৷ তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য আর সম্প্রীতি অর্জনের জন্যে সব দলের সঙ্গে কথা বলতেই তিনি প্রস্তুত রয়েছেন৷

মুক্তি পাবার একদিন পরেই তিনি বলেন, টেবিলে বসে মতপার্থক্য দূর করার সময় এসেছে৷ সু চি এক শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের ডাক দেন৷ তিনি বলেন,‘‘আমি স্বীকার করছি যে, কখনোই আমি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে নরম হয়ে সহযোগিতা করিনি৷ তবে যদি অহিংস বিপ্লব ঘটে তবে তা হবে এক দারুণ ব্যাপার৷ এবং সেই পথটি ধরেই চলা উচিৎ৷ কারণ একটি পরিবর্তন একটা ভীষণ রকমের পরিবর্তনের অর্থই বিপ্লব৷ সেটা সহিংস হোক বা অহিংসই হোক৷ তবে আমরা অহিংস শান্তিপূর্ণ বিপ্লবই প্রত্যাশা করি৷''

সু চি বলেন, ‘‘আমি মিয়ানমারের জনগণের কথা শুনতে চাই৷ অন্যান্য দেশি বা কী চাচ্ছে আমি তাও শুনতে চাই৷ তারা আমাদের জন্যে কী করতে পারবে তা জানাটাও জরুরি৷ কেননা তখনই আমরা বুঝতে পারবো তারা কী চাচ্ছে এবং বেশিরভাগ মানুষের কাছে তা গ্রহণযোগ্য কিনা৷'' সু চি বলেন,

‘‘তবে আমি জানি না ‘রেভ্যুলেশন' শব্দটির কী অর্থ মানুষ দাঁড় করায়৷ এবং কী অর্থে এই শব্দটি ব্যাবহার করা হয় তাও আমি জানি না৷ আমার কাছে ‘রেভ্যুলেশন' শব্দের অর্থ আমূল পরিবর্তন৷''

গণতন্ত্রপন্থী এই নেত্রী বলেন, নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে৷ ভোট চুরি এবং এই ধরণের অনেক অভিযোগ উঠেছে বলেই শুনেছি৷ তাঁকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হতে পারে কিনা এইধরণের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ভীত নই৷ সু চি বলেন,‘‘আমি আতঙ্কিত নই৷ আমি জানি তারা অতীতে যা করেছে সেই ধরণের এক সম্ভাবনা সব সমযেই রয়েছে৷ তা তারা আবারো করতে পারে৷ আমার কথা জিজ্ঞেস করলে বলবো, মুক্ত অবস্থায় যা যা করা সম্ভব, তার সবই আমি করবো৷ এবং আমাকে যদি আবারো গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে আটক অবস্থায় যা করা সম্ভব তার সবই আমি করবো৷''

প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য