সেল ফোন কি শিশুদের আচরণে প্রভাব ফেলছে!
৭ ডিসেম্বর ২০১০সেল ফোন বা মোবাইল ফোনের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে আগে থেকেই৷ তার উপর এবার বিজ্ঞানীরা দিলেন নতুন আরেকটি তথ্য৷
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া লস এঞ্জেলস'এর গবেষকরা গবেষণাটি করেছেন৷ মোবাইল ফোন ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব আসলেই আছে কিনা এই গবেষণা সেই বিষয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে৷ কিন্তু এই গবেষণা সরাসরি এটাও বলছেনা যে, সেল ফোন আচরণগত সমস্যার জন্য দায়ী৷ গবেষণাটিতে নেতৃত্ব দেন ড. লিকা খেইফেটস৷ তিনি নিজেই বলছেন, ‘‘এটা বোঝা খুব কঠিন যে, সেল ফোনের এতো কম এক্সপোজার কী করে প্রভাব ফেলতে পারে? ''
খেইফেটস এবং তাঁর গবেষণা দলটি সাত বছর বয়সি আঠাশ হাজার শিশু এবং তাদের মায়েদের সম্পর্কে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন৷ প্রায় তিন শতাংশ বাচ্চাদের মা বলেন, তাদের বাচ্চার আচরণ সন্দেহজনক ছিলো৷ বাচ্চাদের শতকরা তিনজনের মা বলেন. তাঁদের বাচ্চাদের মধ্যে বাবা-মা'র কথা শোনা বা আবেগের বিষয়গুলোতে অস্বাভাবিক আচরণ দেখা গিয়েছিলো৷
‘ডেমিয়োলজি অ্যান্ড কমিউনিটি হেলথ' পত্রিকায় গবেষকরা বলেছেন, যেসব বাচ্চাদের মায়েরা গর্ভাবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন এবং যেসব শিশুরা নিজেরাই এটি ব্যবহার করে তাদের শতকরা পঞ্চাশ জনেরই আচরণগত সমস্যা রয়েছে৷ গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, যেসব বাচ্চার মায়েরা সেল ফোন ব্যবহার করেছেন কিন্তু শিশুরা নিজেরা এখনও ফোন ব্যবহার করেনা তাদের শতকরা চল্লিশ জনের মধ্যে আচরণগত সমস্যা রয়েছে৷
বিশ্বব্যাপী প্রায় পাঁচ বিলিয়ন মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে৷ তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, অ্যামেরিকার ক্যানসার সোস্যাইটি এবং জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা সেল ফোন ব্যবহারে স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হতে পারে এমন কোনো প্রমাণ অবশ্য এখনও পায়নি৷
খেইফেটস অবশ্য আচরণ পরিবর্তনের সম্ভাব্য অন্যান্য কারণ খোঁজারও চেষ্টা করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ মায়েদের সামাজিক অবস্থান, সন্তান ছেলে না মেয়ে, মায়েদের আচরণগত সমস্যা ছিলো কিনা, মায়েদের বয়স, গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ এবং সন্তান মায়ের দুধ খেয়েছিলো কিনা গবেষণার সময় এইসব বিষয়ও আমরা বিবেচনায় রেখেছি৷''
তিনি বলেন, গবেষণার সময় একটা ভাবনা আমাদের মাথায় অবশ্য এসেছিলো যে, সেল ফোন ব্যবহারের কারণে যে এমনটি হচ্ছে, তা নয়৷ কিন্তু আমরা দেখেছি, মায়েদের অমনোযোগ বাচ্চাদের আচরণকে প্রভাবিত করেছে৷ যে বিষয়টি ছিলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক