1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্টুটগার্ট ইউনিভার্সিটি

২৫ মে ২০১০

বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে ১০টি ফ্যাকাল্টি বা অনুষদ এবং প্রতিটি অনুষদের অধীনে আছে ১০ থেকে ২০টি বিভাগ৷ ২০০৪ সালে স্টুটগার্ট বিশ্ববিদ্যালয় পালন করেছে ১৭৫ তম বার্ষিকী৷

https://p.dw.com/p/NW89
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসঘরছবি: AP

জার্মানির বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গ রাজ্যের রাজধানী স্টুটগার্ট৷ ১৮৬২ সালে স্টুটগার্টের চারটি উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান মিলে সিদ্ধান্ত নেয়, যে তারা যৌথভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলবে৷ স্থাপত্য, প্রকৌশলী, ইঞ্জিন নির্মাণ এবং রাসায়নিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় স্টুটগার্ট টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়৷

১৮৮২ সালে নতুন আরেকটি বিষয় যোগ করা হয় – তা হল ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং৷ ১৯১০ সালে তার সাথে জুড়ে দেয়া হয় এ্যারোনটিক্স এ্যান্ড ভেহিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং৷

১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়. ১৯৪৫ সালে শুরু হয় পুনর্নির্মাণ কাজ৷ ১৯৪৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন করে খোলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়টি৷ ১৯৬৭ সালের জুলাই মাসে টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির নাম পাল্টে নতুন নাম দেয়া হয় স্টুটগার্ট ইউনিভার্সিটি ৷

স্টুটগার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে বাংলাদেশের ছাত্র মহম্মদ তানভীর রহমান৷ জার্মানিতে পড়তে আসার আগে কীভাবে তিনি নিজেকে প্রস্তুত করছিলেন ? তিনি বললেন, ‘‘ প্রথমে আমার যে সব পছন্দের বিষয়গুলো ছিল, সেগুলো আমি ইন্টারনেটেরে খুঁজতে থাকি৷ বিশেষ করে জার্মানির কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়গুলো পড়ানো হচ্ছে তার একটা তালিকা তৈরি করি৷ এক্ষেত্রে ডিএএডি -র যে ওয়েবসাইট রয়েছে সেটা আমাকে খুব সাহায্য করেছিল৷ সে অনুযায়ী আমি কোর্সগুলো সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য, ঠিকানা ইন্টারনেট থেকে বের করি৷ এরপর আমি তাদের বরাবর আবেদন করি৷''

Universität Stuttgart Bibliothek
বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারছবি: AP

বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে ১০টি ফ্যাকাল্টি বা অনুষদ এবং প্রতিটি অনুষদের অধীনে আছে ১০ থেকে ২০টি বিভাগ৷ ২০০৪ সালে স্টুটগার্ট বিশ্ববিদ্যালয় পালন করেছে ১৭৫ তম বার্ষিকী৷

কী কী বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ স্টুটগার্ট ইউনিভার্সিটি দিচ্ছে ? স্থাপত্য এবং নগর উন্নয়ন ও পরিকল্পনা অনুষদের মধ্যে পড়ছে স্থাপত্যের ইতিহাস, প্রয়োজনীয়তা এবং পরিকল্পনা, স্থাপত্যের মৌলিক বিষয়, নির্মাণ শিল্প, ডিজাইন ইত্যাদি বিষয়গুলো৷

সব মিলে প্রায় ৬০ টি বিভিন্ন বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন করা যায়৷ বেশ কিছু বিষয়ে মাস্টার্সও করা সম্ভব৷ তবে পি এইচ ডি করতে হলে সংশ্লিষ্ট বিষয় এবং বিভাগের প্রধানের সাথে যোগাযোগ করতে হবে৷

বাংলাদেশে আর জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মধ্যে পার্থক্য বেশ স্পষ্টভাবেই ধরা পড়েছে তানভীরের চোখে৷ তানভীর জানালেন, ‘‘ প্রথমতঃ বলতে হয় এখানকার কোর্সগুলো তত্ত্ব ও তার প্রায়োগিক দিকগুলো - দুটোই খুব সুষমভাবে উপস্থাপন করা হয়৷ এখানে তত্ত্বর ওপর যতটা গুরুত্ব দেয়া হয়, ঠিত ততটুকুই গুরুত্ব দেয়া হয় তার প্রয়োগের ওপর৷ আরেকটি বিষয় হল এখানকার পরীক্ষা মূল্যায়ন পদ্ধতি৷ এখানে পরীক্ষায় ভাল ফল পেতে হলে, তত্ত্বটাকে খুব ভাল করে আয়ত্ব করতে হয়, বুঝতে হয়৷ শুধুমাত্র মুখস্থ করলেই এখানে চলে না৷ ''

এবার জানবেন স্টুটগার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কী কী কাগজপত্র প্রয়োজনীয়৷ বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের সব সময়ই বলা হয় সেমেস্টার শুরু হওয়ার অন্ততপক্ষে তিন মাস আগে আবেদন পত্র জমা দেয়ার জন্য৷ প্রতিবারের মত এবারও জানাচ্ছি, জার্মান ভাষাটি অবশ্যই জানা অত্যন্ত জরুরী. জার্মান ভাষার পরীক্ষা ডি এস এইচ অবশ্যই পাশ করতে হবে৷ এই পরীক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য গ্যোটে ইন্সটিটিউট অথবা ভারতে মাক্স মুলার ভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে৷

তবে সবসময়ই কি জার্মান ভাষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে ? তানভীরের ভিন্ন মত৷ তার মতে, ‘‘আমার কোর্স সম্পূর্ণ ইংরেজী ভাষায় পরিচালনা করা হয়৷ তারপরও আমি বলবো, জার্মান ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷''

এছাড়া অন্যান্য যে সব কাগজপত্রের প্রয়োজন, তা হল সব সার্টিফিকেটের ফটোকপি এবং তা অবশ্যই ইংরেজীতে৷ সাথে আবেদন পত্রটি পূরণ করে পাঠাতে হবে৷ আবেদনপত্রটি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা সম্ভব৷

মহম্মদ তানভীর বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করছে না৷ সে নিজ খরচে এসেছে৷ স্টুটগার্টে কাজ করছে৷ কোন সমস্যা হচ্ছে না৷ তানভীর জানাল, ‘‘আমি নিজ খরচে পড়াশোনা করছি৷ এখানে আমার নিজের খরচ আমি নিজেই চালাচ্ছি৷ দেশ থেকে প্রথম কিছুদিনের জন্য বেশ কিছু পরিমাণ টাকা নিয়ে আসতে হয়েছিল৷ কিন্তু তারপর আমি এখানে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ‘স্টুডেন্ট এ্যাসিসটেন্ট' হিসেবে কাজ করছি৷ এই কাজের মধ্যে দিয়েই আমার খরচ উঠে আসছে৷ এবং যে কোন ধরণের কাজ করার জন্য জার্মান ভাষার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি৷ ''

বছরে দু'বার আবেদনপত্র জমা নেয় স্টুটগার্ট বিশ্ববিদ্যালয়৷ আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৫ই জানুয়ারি এবং ১৫ই জুলাই৷ সব কাগজপত্র দেখার পর প্রার্থীকে যোগ্য মনে হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রার্থীকে অনুমোদনপত্র পাঠাবে৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন