1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাইতির শিশুদের মানসিক যন্ত্রণা দূর করতে সাহায্য করছে গল্প

৪ জুলাই ২০১০

হাইতির ভয়াবহ ভূমিকম্প তাদের মা বাবা কিংবা সকলকে কেড়ে নিয়েছে৷ সর্বস্ব খোয়ানো সেইসব শিশুদের মানসিক যন্ত্রণা দূর করতে সাহায্য করছে গল্প বলার আসর৷

https://p.dw.com/p/OAGV
সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে মাবাবা হারানো হাইতির শিশুরাছবি: AP

লি লি লি! আসরের নাম৷ কারণ, ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েরা তো ভালো করতে কথা বলতে শেখেনি৷ তাই তারা ইংরেজিতে ‘রিড রিড রিড' শব্দগুলো বলতে পারে না৷ ওদের জিভে শোনায় ‘লি লি লি'৷ গল্প শুনতে কে না ভালোবাসে? হাইতির ভূমিকম্পে সর্বস্ব হারানো শিশুরা, যাদের কারও মা কিংবা বাবা নেই, কারও বা দুজনের কেউই নেই, কারও হয়তো গোটা পরিবারটাই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, তাদের সামনে সবথেকে বড় সমস্যা হল মানসিক বিকলতার৷ সেই অনাথ শিশুদের মনে একটু আনন্দ আনতেই এই আসরের আয়োজন৷

মানসিক বিকলতা তো স্বাভাবিক৷ কারণ, ছোট্ট মাথায় তো ভালো করে ঢোকে না কেন তার চেনা প্রিয় মুখগুলোর দেখা মিলছে না? কেন এগিয়ে আসছে না ভালোবাসার হাতগুলো তাদের দিকে? কেন পাওয়া যাচ্ছে না চেনা শরীরের গন্ধ? মৃত্যু কাকে বলে তা কে ওদের বোঝাবে?

তাই এই হতভাগ্য শিশুদের জন্য রাজধানী পোর্ট অফ প্রিন্সে গল্প বলার আসরের আয়োজন করেছে একটি এনজিও৷ প্রকল্পের পরিচালিকা জার্মিনাল জোসেলিন সংবাদসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, গোড়ার দিকে মাত্র সাত আটজন শিশু এসেছিল এই আসরে গল্প শুনতে৷ তারপর থেকে ক্রমশই ওদের সংখ্যা বাড়ছে৷ এখন বেশ কয়েকটি সেন্টারে অনেক শিশুই রোজ গল্প শুনতে আসছে৷ অনেকে আবার আসছে আরও ছোট্ট ছোট্ট ভাই বা বোনের হাতটি ধরে৷ তাদের গল্প বলার জন্য স্থানীয় কিছু বেকার শিল্পীদের নিয়োগ করেছে এই সংস্থা৷ মাসে অন্তত আড়াইশো ডলার রোজগার করে তারাও আনন্দিত৷

আনন্দের সন্ধানটাই বড় জরুরি এই শিশুদের জন্য৷ যে বিধ্বংসী ভূমিকম্প কেড়ে নিয়েছে ত্রিশ হাজার মানুষের প্রাণ, তার ভয়ংকর দুঃস্বপ্নের স্মৃতি ওদের সারাজীবন তাড়া করে বেড়াবে৷ অভিমত, চিকিত্সকদের৷ এই চরম মানসিক বৈকল্য থেকে তাদের বের করে আনাটা তাই জরুরি৷ সেইসঙ্গে কিছুটা লেখাপড়াও হয়ে যাচ্ছে এই শিশুদের৷ হাইতিতে এমনিতেই লেখাপড়ার চল তেমন নেই৷ ভূমিকম্পে বহু স্কুল ভেঙে পড়ার পর নতুন পরিকাঠামো তৈরি করতেও অনেক সময় লাগছে৷

আসলে এই অনাথ শিশুদের মুখে সামান্য একটু হাসি ফুটিয়ে তোলাটাই এখন সবচেয়ে প্রয়োজনীয় কাজ৷ বলছেন জোসেলিন৷

আর কে না জানে, শিশুর মুখের হাসির মত এমন স্বর্গীয় দৃশ্য এই গ্রহে অন্য কোন কিছুই হতে পারে না!

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক